যুক্তরাজ্যে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট।। মহিলাদের জয়জয়কার
লেবার পার্টির জেরেমি করবিন ও কনজারভেটিভ পার্টির থেরেসা মে
যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে কোনো একক দল সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায়নি। নির্বাচনের ফলাফলে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। যুক্তরাজ্যে ঝুলন্ত সংসদ (হাং পার্লামেন্ট) নিশ্চিত হলো। ৬৩৪টি আসনের ফলাফলে জানা গেছে। কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে ৩১৯ আসন। লেবার পার্টি পেয়েছে ২৬১ আসন। এসএনপি ৩৪ আসন। লিব ডেম পেয়েছে ১২ আসন। অন্যান্য দল পেয়েছে ২১ আসন। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ৩২৬টি আসন। তবে উত্তর আয়ারল্যান্ড ভিত্তিক ডিইউপি – যারা ১০টি আসন পেয়েছে – বলেছে, তারা থেরেসা মেকে সরকার গঠন করতে সমর্থন জানাবে। তবে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও কনজারভেটিভরাই সংসদে বৃহত্তম দল হবে। বিদায়ী সংসদে কনজারভেটিভ দলের ছিল ৩৩০টি আসন, তারা হারিয়েছে ১২টি । লেবার পার্টির ২২৯টি , তারা এবার পেয়েছে ৩২টি অতিরিক্ত। স্কটিশ ন্যাশনালিস্টদের ৫৪টি আর লিবেরাল ডেমোক্র্যাটদের ৯টি। সে সংসদে কনজারভেটিভদের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল। এবারের সংসদে মহিলা এমপিরা সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করেছেন। সর্বমোট পাশ করেছেন ২০৬ জন। আগের সংসদে তাদের আসন ছিল ২৯০টি।
হাং পার্লামেন্ট হলে কী হবে?
বিবিসি লিখেছে, এধরনের পরিস্থিতি হলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকবেন এবং ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটেই বসবাস করবেন যতক্ষণ না পর্যন্ত কারা নতুন সরকার গঠন করবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এক্ষেত্রে দলের নেতাদের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক চলবে। তারা চেষ্টা করবে জোট গঠন করে একটা সরকার গঠন করতে অথবা কনজারভেটিভ দলের নেতা থেরেসা মে অথবা লেবার নেতা জেরেমি করবিনকে প্রধানমন্ত্রী করে হয়ত কোনো একটা সমাঝোতার ভিত্তিতে সরকার গঠন করতে। অথবা দুই দলের মধ্যে কোনো একটি দলের নেতা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন যে তারা সংখ্যালঘু সরকার গঠন করবেন এই ভিত্তিতে যে যখন সংসদে আইন পাশ করতে হবে, তখন ছোট দলগুলোর সমর্থন তারা নিশ্চিতভাবে পাবেন।
একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও সংসদের বৃহত্তম দলের নেতা হিসেবে থেরেসা মে প্রথম সরকার গঠনের সুযোগ পাবেন। প্রধানমন্ত্রীর পদে থেকেই তিনি জোট করার জন্য অন্য দলগুলোর সাথে আলাচনা করবেন। তবে এ চেষ্টায় ব্যার্থ হলে তাকে পদত্যাগ করতে হবে। তবে থেরেসা মে’র পাশাপাশি একই সময়ে জেরেমি করবিনও অন্যান্য দলের সাথে আলোচনা অব্যাহত রাখতে পারবেন। তবে অালোচনা ও দরকষাকষির জন্য তারা অনির্দিষ্টকাল সময় পাবেন না। প্রথম দফায় থেরেসা মে ১৩ জুন পর্যন্ত সময় পাবেন। এ সময়ের মধ্যেই তাকে নিশ্চিত করতে হবে যেকোনো আইন পাশ করার জন্য তার হাতে পর্যাপ্ত সংখ্যাক (৩২৬) আসন আছে। ১৯শে জুন রানি তাঁর ভাষণের মাধ্যমে সংসদের অধিবেশন শুরু করবেন।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ডেভিড ক্যামেরন একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করেন। ২০১৬ সালের জুনে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) থাকা না থাকার প্রশ্নে গণভোট(ব্রেক্সিট) দেন তিনি। তিনি ইইউতে থাকার পক্ষে অবস্থান নিলেও গণভোটে অপ্রত্যাশিত ফলাফল আসায় প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন ও রাজনীতি থেকে অবসরে যান। এরপর প্রধানমন্ত্রী হন থেরেসা মে। ব্রিটেনে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন ২০২০ সালে হওয়ার কথা থাকলেও ব্রেক্সিটের দর কষাকষিতে নিজের অবস্থান সুসংহত করার জন্য তিনি অাচমকাই ৮ জুন আগাম নির্বাচন আহবান করেন।