রাজধানীর কাওরানবাজারে দুই বাসের চাপায় প্রথমে হাত পরে প্রাণ হারানো কলেজছাত্র রাজীব হাসানের দুই ভাইকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা বিআরটিসি এবং বেসরকারি স্বজন পরিবহনের বাস মালিকদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত এক আবেদনের শুনানি শেষে গতকাল বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ ঘটনায় ক্ষতিপূরণের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন এ আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল। আবেদনের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। বিআরটিসির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. মুনিরুজ্জামান। গতকাল আদালতের আদেশের সময় রাজীবের কিশোর দুই ভাই আবদুল্লাহ হৃদয় ও মেহেদী হাসান বাপ্পী, খালা জাহানারা পারভীন, মামা জাহিদ হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদেশের পর রুহুল কুদ্দুস কাজল জানান, ক্ষতিপূরণের এক কোটি টাকার মধ্যে ৫০ লাখ টাকা এক মাসের মধ্যে পরিশোধের জন্য দুই পরিবহনের মালিককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রাজীবের খালা জাহানার পারভীন এবং রাজীবের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফলের দাসপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদের ছেলের কাস্টমস কর্মকর্তা ওমর ফারুকের নামে সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় একটি যৌথ অ্যাকাউন্ট খোলা হবে। ওই অ্যাকাউন্টে বিআরটিসি এবং স্বজন পরিবহনের মালিককে এক মাসের মধ্যে ২৫ লাখ টাকা করে মোট ৫০ লাখ টাকা জমা দিতে হবে। আর টাকা জমা দেয়ার বিষয়ে আগামী ২৫শে জুনের মধ্যে আদালতকে লিখিতভাবে জানাতে হবে। রুহুল কুদ্দুস কাজল আরো জানান, ক্ষতিপূরণের এই টাকা রাজীবের দুই ভাইয়ের পড়া ও অন্যান্য খরচের জন্য ব্যয় হবে। আর ২৫শে জুন বিষয়টি আবারো আদালতে এলে তখন বাকি ৫০ লাখ টাকার বিষয়ে নির্দেশনা দিতে পারেন আদালত।

গত ৩রা এপ্রিল কাওরান বাজারে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের দুই বাসের রেষারেষিতে বিআরটিসির বাসের যাত্রী তিতুমীর কলেজের রাজীবের ডান হাত কনুইয়ের ওপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এছাড়া মাথায়ও আঘাত পান তিনি। গুরুতর আহত অবস্থায় রাজীবকে পান্থপথের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানকার চিকিৎসকরা অনেক চেষ্টা করেও তার বিচ্ছিন্ন হাত জোড়া লাগাতে পারেননি। পরে রাজীবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ১৪ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ১৭ই এপ্রিল রাতে মৃত্যুবরণ করেন রাজীব।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn