বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মানবিক গুণাবলি না থাকায় রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি নিখোঁজ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। শনিবার সকালে রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ড. এস এম জাহাঙ্গীর আলমের চারটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তোফায়েল আহমেদ বলেন,’আজকে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের নির্যাতন করে গৃহহারা করা হয়েছে। নাফ নদী পার হতে হতে মায়ের কোলে এক মাসের বাচ্চা মারা গেছে। এমন শত শত ঘটনা ঘটে যাচ্ছে।’রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, আজকে লন্ডনের একটি টেলিভিশনে আমাদের  নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মাদার অফ হিউম্যানিটি’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। কিন্তু খারাপ লাগে বাংলাদেশে আরেকটি রাজনৈতিক দল আছে। তার নাম বিএনপি। তার এক নেতা কালকে অং সান সুচির সঙ্গে আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে এক কাতারে দাঁড় করিয়েছেন। চিন্তা করেন এরা কত নোংরা; এদের চিন্তা চেতনা কত নীচু।
বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, বিলম্ব হলেও প্রধানমন্ত্রীর বোধোদয় হয়েছে। অর্থাৎ তিনি যে কক্সবাজারে গেলেন। এই যে বিজিবি মিয়ানমার থেকে গৃহহারা মানুষকে বাংলাদেশে আসতে দিয়েছে সেই নির্দেশ তো প্রধানমন্ত্রীর। তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এসেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসেছেন, ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসেছেন, জাতিসংঘে আলোচনা হবে। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বিএনপি প্রধানের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা বলেন,কিন্তু কোথায় খালেদা জিয়া? এত বড় ঘটনা, আপনারা বলছেন প্রধানমন্ত্রীর বোধোদয় হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে পেয়ে ওখানকার মানুষ আবেগে আপ্লুত হয়েছে। আর খালেদা জিয়া নিখোঁজ। তিনি হারিয়ে গেছেন।তিনি লন্ডনে বসে টুইটারে বার্তা দিয়েছেন। তার এমন কি রোগ যে তিনি বাংলাদেশে আসতে পারছেন না। মানবিক গুণাবলি থাকলে তিনি সবকিছু ত্যাগ করে সেই গৃহহারা, সর্বহারা মানুষের পাশে মানবিক কারণে দাঁড়াতেন। যেই দলের নেত্রীর খোঁজ নেই, সেই দলের নেতাদের বড় গলায় কথা বলা সাজে না।
তোফায়েল আহমেদ আরও বলেন,’আমাদের দেশে কিছু লোক আছে যাদের দল নেই, দলহীন। সুযোগ পেলেই মিডিয়ার সামনে দাঁড়ায় এবং দাঁড়িয়ে বলে আমাদের ক‚টনৈতিক তৎপরতা তেমন না। আরে কূটনৈতিক তৎপরতা যদি তেমন না হয়, তাহলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আজকে নিন্দা জ্ঞাপন করল কীভাবে।  তারা (ইউরোপীয় ইউনিয়ন) বলেছে, মিয়ানমার একদিকে বাণিজ্যিক সুবিধা নেবে অন্যদিকে গণহত্যা করবে- তা হতে পারে না। মিয়ানমারের এই ঘটনা এখন আন্তর্জাতিক বিশ্বে গণহত্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের স্মৃতির পাতায় ফুটে ওঠে একাত্তরের ঘটনা। আমাদের অভিনেতা আছে বলেই মানবিক দিক বিবেচনা করে রোহিঙ্গাদের আমরা আজকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছি এবং আমরা মনে করি, অনতিবিলম্বে এই গণহত্যা বন্ধ করা উচিত এবং পৃথিবীর মানুষ ধিক্কার দিচ্ছে। এটা হতে পারে না।  গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, বৃদ্ধ, যুবকদের হত্যা করা হয়েছে। এর পরিণতি কখনো ভালো হতে পারে না।’বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। সোনার বাংলা শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই গড়ে উঠবে’, যোগ করেন তিনি।সংস্কৃতি সচিব ইব্রাহিম হোসেন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর প্রমুখ।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn