শান্তিগঞ্জ উপজেলায় আমন জমি চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন কৃষকেরা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধানের চারা উত্তোলন করা ও ধান রোপনকে কেন্দ্র করে হাওরে সময় কাটছে তাদের। ধান রোপন করতে জমি প্রস্তুত করে রেখেছেন অনেক কৃষক। শ্রমিকের অভাবে কোনো কোনো কৃষক ধান রোপন করতে পারছেন না। অন্যদিকে, অধিকাংশ কৃষক জমি রোপন করে শেষ করেছেন গত সপ্তাহেই। রোপন করা ধান কিছুটা কালো হওয়ার সাথে সাথে সার প্রয়োগ করতে হয়। কৃষকরা বলছেন, তারা চাহিদা অনুযায়ী সার পাচ্ছেন না।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, শান্তিগঞ্জ উপজেলায় এ বছর ২ হাজার ১শ ৩০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হবে। যা বোরো ধানের তুলনায় কয়েক হাজারগুণ কম। গত বছর শান্তিগঞ্জে ২২ হাজার ৬শ ৯ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছিলো। উপজেলার শিমুলবাক, পাথারিয়া ও পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নে কিছু জমিতে আমনের চাষ হয়। এ ছাড়া অন্যান্য ইউনিয়নের আংশিক জমিতে আমনের চাষ হয়। কৃষকদের পর্যাপ্ত পরিমানের সার, বীজ ইত্যাদি দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে সূত্রটি। সূত্র জানায়, মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষি অফিসের সকল কর্মকর্তাগণ সব সময় কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যখন যা প্রয়োজন তা তারা সময় মতো দিচ্ছেন।
শুক্রবার সরেজমিনে পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের কান্দিগাঁও গ্রামের পশ্চিমে দত্তবন্দে গিয়ে দেখা যায়, একদল কৃষক খুব মনোযোগ দিয়ে জমিতে ধান রোপন করছেন। সাত জনের দলের কেউই মাথা তুলছেন না। খানিকটা দূরে আরো দু’চার দল কৃষক ধানের চারা তুলছেন আর মাটি সড়াচ্ছেন। কেউ কেউ উপরে ফেলা ধানের চারার আটি বাঁধছেন। হালচাষ করে তৈরি করা জমিতে নিয়ে এ চারা রোপন করবেন। দত্তবন্দের অধিকাংশ জমি রোপন করা হয়ে গেছে। কৃষকরা এখন শেষ পর্যায়ের রোপনের কাজ করছেন। এ হাওরে জমি চাষ করেন শত্রুমর্দন গ্রামের অখিল পাল নামের এক আমন কৃষক। তিনি বলেন, আমরা প্রতি বছর এ বন্দে জমি চাষ করি। যে পরিমান সার আমাদের লাগে সে পরিমান সার আমরা পাই না। এমন অনেকেই আছেন যারা তুলনামূলক জমি চাষ করেন তারা বেশি সার পান।
দৈনিক বেতনে নিয়মিত কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন মঈনুল ইসলাম। তিনি বলেন, শ্রাবণ মাসে উঁচু জমিতে ধানের বীজ ছিটিয়েছিলাম। সেই চারা তুলে অন্য জমিতে রোপন করছি। এখন শ্রমিক কম। তবুও শ্রমের কোনো দাম বাড়ে না। শান্তিগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সোহায়েল আহমদ বলেন, অকৃষক লোকরা সার-বীজ পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যারা জমি চাষ করে সে অনুযায়ী আমরা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের মাধ্যমে সার বিতরণ করি। এখানে কৃষক ব্যতীত অন্য কেউ সার অথবা বীজ পাওয়ার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, এ বছর ৪৫০জন কৃষককে আমন দিয়েছি। আমাদের এখানে অন্যান্য উপজেলার তুলনায় আমন চাষী কম। অনেক কৃষক আছেন, যারা না জেনেই অভিযোগ করেন। এসব অভীযোগ মিথ্যা। কারো কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে আমার সাথে কথা বলুক। আমি বিষয়টি দেখবো।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১৩০ বার