শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে আত্মহত্যার শামিল
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকার পরও বেগম জিয়াকে গ্রেপ্তার না করে, সড়ক পথে কক্সবাজার যেতে দেওয়া এবং সর্বশেষ ১২ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করতে দেওয়া-এসবই শুভ লক্ষণ বলছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করছে সরকার। কিন্তু বিএনপি এটাকে ‘টোপ’ হিসেবে মনে করছে। বিএনপির একজন নেতা স্পষ্ট করেই বলছেন, ‘শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে নেওয়ার জন্যই বিএনপিকে টোপ দেওয়া হচ্ছে।’ ওই নেতার মতে, ‘২০১৩ সালেও ৫টি সিটি নির্বাচনে বিএনপিকে জিতিয়ে টোপ দেওয়া হয়েছিল, সর্বদলীয় সরকারেও লোভ দেখানো হয়েছিল।’ তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠ ওই নেতা মনে করেন, ‘শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে আত্মহত্যার শামিল।’
বিএনপি ১২ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চেয়েছিল। একই দিনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যুবলীগও একই স্থানে সমাবেশের জন্য লিখিত চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে যুবলীগ আজ শুক্রবার তাদের চিঠি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, ‘গণতান্ত্রিক শিষ্টাচার এবং রাজনীতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই আমরা আমাদের সমাবেশ কর্মসূচি স্থগিত করেছি।’ তিনি বলেন, ‘আশা করি এ থেকে বিএনপি শিখবে এবং জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের ধারা থেকে সুস্থ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার চর্চা শুরু করবে।’ সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনের এক বছর আগে থেকেই সরকার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পটভূমি তৈরির কাজ শুরু করেছে। আগামী নির্বাচন যেন অংশগ্রহণমূলক হয় সেজন্য আন্তর্জাতিক চাপ আছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ‘বিএনপির যেকোনো গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালনে সরকার সহযোগিতা করবে। কিন্তু রাজনীতির সঙ্গে গাড়ি পোড়ানো, সন্ত্রাস হলে সরকার জনগণের মালামাল রক্ষার স্বার্থে তা প্রতিহত করবে।’ তিনি বলেছেন, ‘আমি আশা করি গতবারের ভুল বিএনপি এবার করবে না। বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নিবে।’ কিন্তু এখনো বিএনপির মূল অংশ শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন প্রশ্নে নেতিবাচক অবস্থানে আছে। ১২ নভেম্বরের জনসভায় বেগম জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি পুনর্ব্যক্ত করবেন বলে বিএনপির নেতারা ইঙ্গিত করেছেন। নির্বাচন নয় বরং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি এবং বেগম জিয়া ও তারেক জিয়ার মামলার বিরুদ্ধে বিএনপিকে সংগঠিত করতেই বিএনপি এই সমাবেশ করবে বলে জানা গেছে। তাই রাজনীতিতে সহিষ্ণুতার যে বাতাস বইছে তাতে যেকোনো সময়ে ঝড়ের আশঙ্কা এখনো আগের মতোই রয়ে গেছে।