শেখ হাসিনার তৃতীয় আসন খোঁজা হচ্ছে
১৯৯১ সাল থেকে প্রতিটি সংসদ নির্বাচনেই একাধিক আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আসছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি দুইটি আসন থেকে লড়লেও আইন অনুযায়ী তিনটি আসনে লড়ার সুযোগ আছে। এ ক্ষেত্রে দুইটি আসন গোপালগঞ্জ-৩ ও রংপুর-৬ আসনে শেখ হাসিনা লড়ছেন-এটা নিশ্চিত প্রায়। তবে তৃতীয় আসন এখনও চূড়ান্ত হয়নি। ১৯৯১ সাল থেকে প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে জন্মভূমি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় শেখ হাসিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আসছেন। আর ২০০১ সাল থেকে শ্বশুরবাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জে তিনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এ ছাড়া প্রতিটি নির্বাচনেই তিনি নতুন নতুন আসনে দাঁড়িয়ে থাকেন।
স্বাধীনতার পরে নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে কোন বাধ্যবাধকতা ছিল না। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনের আগে এরশাদ সরকার নির্বাচনী আইন সংশোধন করে একজন ব্যক্তির সর্বোচ্চ পাঁচটি আসনে অংশ নিতে পারবে বলে আইন পাস করে। এরপর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে একজন প্রার্থীর সর্বোচ্চ তিনটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ রাখা হয়।
নবম সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনা যে তিনটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, সেগুলো হল- গোপালগঞ্জ-৩, রংপুর-৬ এবং বাগেরহাট-১। তার আগে ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনা লড়েন চারটি আসনে। এগুলো হলো গোপালগঞ্জ-৩, বাগেরহাট-১, নড়াইল-২ এবং রংপুর-৬। এর মধ্যে প্রথম তিনটিতে জয়লাভ করেন। ১৯৯৬ এবং ১৯৯১ সালেও একাধিক আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। এর মধ্যে যে আসনগুলোতে তিনি জিতেছেন, তার মধ্যে গোপালগঞ্জ-৩ আসন ছেড়ে বাকিগুলো ছেড়ে দেন তিনি।
আওয়ামী লীগের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নির্বাচনের এখনও এক বছরেও বেশি সময় বাকি রয়েছে। তাই এখনই নিশ্চিতভাবে করা যাচ্ছে না প্রধানমন্ত্রী দুটি না তিনটিতে নির্বাচন করবেন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরেই বুঝা যাবে তিনি কোন কোন আসনে নির্বাচন করবেন। তবে গোপালগঞ্জ-৩ ও রংপুর-৬ আসনে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করবেন সেটার ধারণা করা যায়। আর তৃতীয় কোনো আসনে লড়লে সেটা পরিস্থিতি দেখেই সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে একাধিক সম্ভাব্য আসন শনাক্ত করে দলীয় সভাপতির কাছে প্রস্তাব দেয়া হবে বলে জানান ওই নেতা। আরেকজন নেতা বলেন, শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি। দলের প্রয়োজনে অনুযায়ী তিনি আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেন। প্রয়োজন হলে তিনটি সংসদীয় আসনেও তিনি অংশ নিতে পারেন।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ আহমেদ হোসেন মির্জা বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের টুঙ্গিপাড়ার সংসদ আছেন। আগামীতেও থাকবেন। তিনি যতদিন বাঁচবেন আমাদের এ আসন থেকে নির্বাচন করবেন। আমরা তাকে ছাড়া অন্য কাউকে কল্পনাও করতে পারি না। রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজু বলেন, পীরগঞ্জ প্রধানমন্ত্রীর শ্বশুরবাড়ি হওয়ায় বিগত দুটি নির্বাচনে তিনি এ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। পরে দুইবারই তিনি এ আসনটি ছেড়ে দিয়েছিলেন। পীরগঞ্জের মানুষের চাওয়া ছিলো প্রধানমন্ত্রী যেন এ আসনটি ধরে রাখেন। আর তিনি যদি নিয়ম অনুযায়ী এ আসনটি ছেড়ে দেন তাহলে সজীব ওয়াজেদ জয় এ আসন থেকে নির্বাচনে আসুক।