সংস্কার হলো নাওটানা ফসলরক্ষা বাঁধ, বাঁচল ৮৮ গ্রামের ফসল
তাহিরপুরে মাছ ধরতে টাঙ্গুয়ার হাওরের কেটে দেওয়া নাওটানা ফসলরক্ষা বাঁধ সংস্কার করেছে প্রশাসন ও এলাকাবাসী। এতে রক্ষা পেয়েছে তাহিরপুর ও ধর্মপাশা উপজেলার চারটি ইউনিয়নের অন্তত ৮৮ টি গ্রামের কৃষকদের বোরো জমি। শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) বিকেল থেকে শত শত কৃষক, শ্রমিক ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাঁধটির সংস্কারের জন্য কাজ করেন। শনিবার সকাল ৯টার দিকে তারা বাঁধে বাঁশ, বস্তা, চাটাই ও মাটি দিয়ে পানি প্রবেশের পথটি বন্ধ করেন। তাহিরপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বাঁধ কাটার ফলে অন্তত ৮৮টি গ্রামের কৃষকদের বোরো ফসল হুমকির মুখে পড়েছিল। বাঁধটি মেরামতের ফলে এক হাজার হেক্টর জমির ফসল এখন নিরাপদ। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল জানান, “এলাকাবাসী ও প্রশাসনের সহযোগিতায় শুক্রবার থেকে রাতদিন কাজ করে শনিবার সকালে হাওরের পানি প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছে।”
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্ণেন্দু দেব বলেন, “বাঁধ ভাঙার ফলে যে পানি হাওরে ঢুকেছে তা টাঙ্গুয়ার হাওরের বিলগুলোতে আটকা গেছে। এতে ফসলি জমির কোনও ক্ষতি হবে না। এখনও হাওরের ফসল নিরাপদ রয়েছে। পানি আটকে দেওয়ার ফলে অন্যান্য হাওরের ফসলও নিরাপদ। তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব বাঁধে নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে।” তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নন্দন কান্তি ধর বলেন, “পুলিশ সুপার মো.বরকতুল্লাহ খানের নির্দেশে পুলিশ প্রশাসন তাহিরপুরের সব ফসল রক্ষা বাঁধের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। আর কেউ যেন বাঁধ কেটে দিতে না পারে, সেজন্য পুলিশ প্রশাসন তৎপর রয়েছে।”
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার ভোর রাতে মাছ শিকারীরা টাঙ্গুয়ার হাওরের বোরো ফসলরক্ষা নাওটানা বাঁধটি কেটে দেয়। ফলে সীমান্তের টেকেরঘাট থেকে নেমে আসা পাটলাই নদীপাড়ের গোলাভারি গ্রামের কাছ দিয়ে প্রবল বেগে পানি ঢুকছে টাঙ্গুয়ার হাওরে। পানিতে প্লাবিত হচ্ছে ধর্মপাশা উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ বংশিকুন্ডা এবং তাহিরপুর উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের ৮৮ গ্রামের কৃষকের জমি। টাঙ্গুয়ার হাওরের এরালিয়াকোনা, গনিয়াকুরি, লামারগুল, টানেরগুল, নান্দিয়া, মাজেরগুল, টুঙ্গামারা, সুনাডুবি, গলগলিয়া, শামসাগর, রাঙামাটিয়াসহ ছয় কুড়ি বিলের পাড়ে এবং কান্দায় রয়েছে এসব জমি। এভাবে পানি ঢুকা অব্যাহত থাকলে হাওরের সকল জমিই ডুবে যাবার আশংকা করেছিলেন কৃষকরা। এদিকে এ ঘটনায় ৮ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে বপলে জানান তাহিরপুর থানার ওসি নন্দন কান্তি ধর।