সন্তানকে বাঁচাতে প্রাণ দিলেন মা
নিজের প্রাণ বাঁচাতে না পারলেও ৩ বছরের শিশু সন্তানকে ঠিকই বাঁচালেন এক মমতাময়ী মা। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাহুবল উপজেলার লস্করপুর নামক স্থােেন দুর্ঘটনায় কবলিত যাত্রীবাহী বাসে। পুলিশ ওই হতভাগা মায়ের মরদেহ এবং শিশুকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করেছে। ওই দুর্ঘটনায় অন্তত ৩০ যাত্রী আহত হয়েছেন। আহতদের হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসাধীন আরো ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। প্রত্যদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরে সিলেট থেকে ছেড়ে কুমিল্লাগামী একটি যাত্রীবাহীবাস (ঢাকা মেট্রো ব ১১-০৮৬৮) ঢাকা-সিলেট মহসড়কের উপজেলার লস্করপুর নামক স্থানে পৌঁছলে চাকা পাংচার হয়ে উল্টে গিয়ে খাদে পড়ে যায়। এতে ৩০ জন যাত্রী আহত হন। খবর পেয়ে বাহুবল থানা পুলিশ ও শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস’লে এসে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। এরই মধ্যে স’ানীয় লোকজন ৩০ জনকে বাসের ভিতর থেকে আহত অবস’ায় উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠান। পরে শায়েস্তাগঞ্জ ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল উদ্ধারকর্মী ঘটনাস্থলে এসে ড্রিল মেশিন দিয়ে বাসের বডি কেটে একজন মহিলার মরদেহ উদ্ধার করে। নিহিত গৃহবধু সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর ইউপির ঝড়ঝড়িয়া গ্রামের কুঠির শিল্পী আব্দুর রহিম স্ত্রী সেলিনা বেগম বলে জানাগেছে। একই সময় আরো এক অজ্ঞাত পরিচয় (৪৫) মহিলাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। প্রত্যদর্শী স্থানীয় কাইতপাড়া গ্রামের আব্দুস শহীদ বলেন, দুর্ঘটনার পরপর আমরা ঘটনাস্থলে এগিয়ে আসি। তখন বাসটি অনেক যাত্রী আটকা পড়ে আছেন। তারা চিৎকার করে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছিলেন। হঠাৎ চোখে পড়লো ত্রিশোর্ধ্ব এক নারী ভিতর থেকে তার ৩ বছরের শিশু সন্তানকে উপরে তোলে তাকে উদ্ধারে সাহায্য চাচ্ছেন। তখনও ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারীরা পৌঁছেননি। এ সময় স্থানীয় লোকজন উদ্ধার কাজ শুরু করলেও ওই মা ও শিশুর কাছে পৌঁছা যাচ্ছি না। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে আটকা পড়া মহিলা বহু কষ্টে দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ির গ্লাস ভেঙে ৩ বছরের শিশুটিকে বাইরে বের করে দেন। এ সময় শিশুটি বাহিরে এসেই তার পিতাকে খোঁজতে শুররু করে। এ ঘটনার কয়েক মিনিটের মধ্যে আটকা পড়া আহত ওই মহিলার দেহ নিথর হয়ে পড়ে। জেলা পুলিশের সিনিয়র এএসপি রাসেলুর রহমান (বাহুবল-নবীগঞ্জ সার্কেল) জানান, ব”ষ্টি চলাকালীন সময়ে গাড়ীর গতিবেগ বেশি থাকায় চাকা পামচার হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি উল্টে যায়।