সিলেটের হাসিনা রহমান জাতিসংঘ সম্মাননায় ভূষিত
সিলেট :: সিলেটের হাসিনা রহমানকে রোটারি ইন্টারন্যাশনাল জাতিসংঘ দিবসের ‘পিপল অব একশন- কানেক্টরস বিয়ন্ড দ্য বর্ডার’ সম্মাননায় ভূষিত করেছে। আগামী ৯ নভেম্বর নিউইয়র্কের জাতিসংঘ সদর দফতরে এই সম্মাননা দেয়া হবে। ঐ দিন জাতিসংঘের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ, রোটারি ইন্টারন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট মার্ক ড্যানিয়েল ম্যালনি, বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি ও রোটারি ও যুব নেতৃবৃন্দ সহ অন্তত সাড়ে ৭শ প্রতিনিধির উপস্থিতিতে এই সম্মাননা প্রদান করা হবে। সম্মাননা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সম্মাননা গ্রহনকারী হাসিনা রহমানের সাথে ডিস্ট্রিক্ট ৩২৮১ এর গভর্ণর এম খায়রুল আলমকেও আনুষ্ঠানিক ভাবে আমন্ত্রন জানানো হয়েছে। রোটারি ইন্টারন্যাশনাল গত ৪ অক্টোবর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই ঘোষনা দেয়।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘ সনদ প্রস্তাবনায় সাংগঠনিক ভাবে রোটারি ইন্টারন্যাশনাল ঐতিহাসিক ভুমিকা রাখায় এই সংগঠন জাতিসংঘের অন্যতম সহযোগী সংগঠন হিসেবে শান্তির লক্ষ্যে কাজ করে আসছে। জাতিসংঘের ৭৫ বছর পূর্তিতে এই দুই সংগঠনের ঐতিহাসিক মেলবন্ধনকে উদযাপন করতে আগামী ৯ নভেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে ‘রোটারি-জাতিসংঘ দিবস’ পালন করা হবে। ‘রোটারি-জাতিসংঘ দিবস’ উপলক্ষে বিশ্বের ৬ জন মানবতাসেবীকে এ বছর ‘পিপল অব একশন- কানেক্টরস বিয়ন্ড দ্য বর্ডার’ সম্মাননায় ভূষিত করা হবে। বিশ্বব্যাপী রোটারি কার্যক্রম চালানো ২০০ টি দেশ থেকে প্রাপ্ত মনোনয়নের মধ্যে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি ৪ মাস ব্যাপী বাছাই প্রক্রিয়া শেষে রোটারি ইন্টারন্যাশনাল হাসিনা রহমান সহ ৬ জনের নাম ঘোষনা করেছে। সম্মাননা প্রাপ্ত অন্যরা হচ্ছেন, জার্মানির ড. বার্ণড ফিশার, ব্রাজিলের ভ্যান্দেরলাই লিমা সান্তানা, ইন্দোনেশিয়ার এইস রবিন, তুরস্ক বংশোদ্ভুত মার্কিন নাগরিক ইলগে কারানকাক , এবং লেবাননের লুসিয়েনে হ্যাওয়ার্থ। হাসিনা রহমানকে সম্মাননা প্রদানের ঘোষনায় রোটারি ইন্টারন্যাশনাল উল্লেখ করেছে যে ‘বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শিবিরে মাতৃকল্যান ও শিশু স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় হাসিনা রহমানকে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।’ রোটারি ইন্টারন্যাশনাল উল্লেখ করে যে, ‘হাসিনা রহমান আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা কনসার্ণ ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর এবং রোটারি ক্লাব অব ঢাকা ম্যাভেরিক্সের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে তাঁর পেশাগত ও স্বেচ্ছাসেবী উদ্যোগের বিরল সম্মেলন ঘটিয়ে রোহিঙ্গা শিবিরে ৮টি শিশু ও মাতৃকল্যান সেন্টার পরিচালনা করেছেন। হাসিনার এই উদ্যোগের মাধ্যমে সেন্টারগুলোতে প্রায় সাড়ে ৪লক্ষ মা ও শিশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হয়। প্রায় ৯ হাজার অতি অপুষ্ঠিহীন শিশুকের বিশেষ সেবা প্রদানের মাধ্যমে সুস্থ করে তোলা হয়। এছাড়াও হাসিনার উদ্যোগে রোহিঙ্গা শিবিরে রোহিঙ্গা মা’দেরকে অল্প জায়গায় শাকসব্জি চাষের প্রশিক্ষন ও সাহায্য প্রদান করে রোহিঙ্গা পরিবারগুলোর পুষ্টিহীনতা রোধে সহজ সমাধান চালু করাকে রোটারি ইন্টারন্যাশনাল গুরুত্বপূর্ণ অবদান হিসেবে উল্লেখ করে। হাসিনা রহমান এই কাজে প্রাতিষ্ঠানিক নেটওয়ার্কের বাইরেও তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগে রোটারি সহ বেশ কিছু দাতা সংস্থাকে সম্পৃক্ত করায় রোটারি ইন্টারন্যাশনাল থেকে হাসিনার প্রশংসা করা হয়।
উল্লেখ্য, হাসিনা রহমান বর্তমানে স্থায়ীভাবে ঢাকায় অবস্থান করলেও এক সময় তিনি সিলেটে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে ব্যাপকভাবে সক্রিয় ছিলেন। কর্মজীবনে তিনি ঢাকাস্থ বৃটিশ হাই কমিশনের কনস্যুলার সার্ভিস শাখার প্রধান হিসেবে কাজ করেন। তার স্বামী খ্যাতিমান লেখক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আরিফ জেবতিক।