সিলেটে ৪ হিজড়াসহ এইডস রোগী ৮৩৪ জন
সিলেট বিভাগের চার জেলায় এইচআইভি ভাইরাস ও এইডস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৮৩৪ জন। এর মধ্যে গত এক বছরে মারা গেছেন ৩১ জন। বেসরকারি সংস্থা আশার আলো সোসাইটি এ তথ্য জানায়। একটি জরিপের আশার আলো সোসাইটির জানায়, ২০০৩ সালে সিলেটে এইচআইভি ভাইরাস ও এইডস রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৮ জন। আর চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৩৪ জনে। এর মধ্যে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৩৩৭ জন, যার মধ্যে পুরুষ ২৬৪ জন, মহিলা ৫৭ জন, শিশু ১৫ জন, হিজড়া ১ জন। আশার আলোর সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, গত ১৪ বছরে সিলেট জেলায় ৫৪৬ জন, মৌলভীবাজারে ১৫০ জন, সুনামগঞ্জে ১০৫ জন, হবিগঞ্জে ৩৩ জন এইচআইভি ভাইরাস ও এইডস রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সিলেটের ৫৪৬ জনের মধ্যে পুরুষ ৫১৫ জন, মহিলা ২৫৭ জন, শিশু ২৯ জন, হিজড়া ৪ জন।
২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে এ বছরের নভেম্বর পর্যন্ত সিলেটে নতুন এইডস জীবাণু ধরা পড়ে ৪৬ জনের শরীরে। এর মধ্যে পুরুষ ২৬, মহিলা ১৯ জন, হিজড়া ১ জন। গত এক বছরে এ অঞ্চলে এইচআইভি ভাইরাস ও এইডস রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩১ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে পুরুষ ২৫ জন, মহিলা ৫ জন, শিশু একজন।আশার আলো সোসাইটির সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘যেসব শ্রমিক বিদেশে কাজ করতে যান, তাদের এইচআইভি ভাইরাস ও এইডস সম্পর্কে কোনও ধারণা থাকে না। যে কারণে তারা বিদেশে গিয়ে অবাধে মেলামেশা করেন এবং এ রোগে আক্রান্ত হন। এক পর্যায়ে এই শ্রমিকরা দেশে আসেন, কিন্তু এইচআইভি ভাইরাস ও এইডসে আক্রান্ত হওয়ার কথা চেপে যান। যার জন্য ওই শ্রমিকদের স্ত্রীরাও এ রোগে আক্রান্ত হন। পরবর্তী সময়ে তাদের সন্তানরাও আক্রান্ত হয়। প্রতি বছর এ বিভাগে গড়ে ৫০ জন মানুষের দেহে এইচআইভি-এর জীবাণু ধরা পড়ছে, এটি খুব উদ্বেগজনক।’
সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একে মাহবুবুল হক জানান, সিলেটে এইডস রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৪শ’ জন এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিহ্নিত করা যায়নি এমন আরও তিন শতাধিক ব্যক্তিও রয়েছেন।সিলেটের সিভিল সার্জন হিমাংশু লাল দে জানান, এইচআইভি ভাইরাস ও এইডস নির্মূল করতে শুধু সচেতনতা নয়, আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থাকা জরুরি। আক্রান্ত ব্যক্তিদের অপবাদ ও সামাজিক বৈষম্য থেকে দূরে রাখতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।