স্বাধীনতা না থাকলে কথা বলছেন কীভাবে, ফখরুলকে নাসিম
কথা বলার স্বাধীনতা না থাকলে এত কথা বলছেন কীভাবে’ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। বলেছেন, ‘দেশে এখন কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতা আছে, কথা বলার স্বাধীনতা না থাকলে আপনারা প্রতিক্ষণে এত কথা বলতে পারতেন না।’ বুধবার রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০১৭ উদযাপনে পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সম্প্রতি বিএনপির মহাসচিব রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র নেই, নেই কথা বলার স্বাধীনতা। আর প্রতিনিয়ত মানুষের অধিকার লুণ্ঠিত হচ্ছে।’ মির্জা ফখরুলের সেই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মোহাম্মদ নাসিম এই কথা বলেন। নাসিম বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব বললেন যে, তাদের কথা বলার স্বাধীনতা নাকি নেই। প্রতিক্ষণে তারা কথা বলছে, কোথায় কথা বলার স্বাধীনতা থাকলো না বলেন, আপনারাই বলেন। কেন এই কথাগুলো তারা বলে। মানুষের স্বাধীনতা আছে কথা বলার।’ মন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতা আছে, কথা বলারও স্বাধীনতা আছে। তবে অধিকার ভোগ করতে হলে দায়িত্ববোধও থাকতে হয়। সব রাষ্ট্রেই এটা আছে।’ বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহনের আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ‘বিএনপির বন্ধুদের আমি অনুরোধ করবো, নির্বাচনে আসুন। যথাসময়ে নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনে সবার অধিকার সমান থাকবে। আমি যদি নির্বাচন করি, আমার যেমন অধিকার থাকবে, তেমনি আমার প্রতিদ্বন্দ্বীদের একই অধিকার থাকবে।’
নাসিম বলেন, ‘জনগণ অধিকার ভোগ করে কে কাকে ভোট দেবে, এ অধিকার তাদের থাকবে। ভোটতো হবে, সেই ভোটে আগুন আর কাজ করবে না। আপনারা (বিএনপি) স্বাধীনতাবিরোধীদের উৎসাহিত করেছেন, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। সুতরাং আপনাদের বলব নির্বাচনে আসুন, সেই নির্বাচনে সবার সমান অধিকার থাকবে।’ বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবসের আলোচনায় নাসিম বলেন, ‘তামাক অর্থকরি ফসল। কিন্তু তামাক চাষ করে যে লাভ হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতি হয় তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায়।’ দেশের তামাক চাষ বন্ধ করে ওই চাষিদের বিকল্প কিছু করা যায় কি না তা ভেবে দেখারও আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
ধূমপানের ক্ষতি দিক উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ধূমপানে কোনো লাভ হয় না, ক্ষতিই হয়। সমাজের সবার দায়িত্ব নিতে হবে যে কেউ ধূমপান করবে না। বারণ করতে হবে, লড়াই যদি নিজেরাই করে তবে দেশ ধূমপান মুক্ত হবে।’ বাঙালি বীরের জাতি উল্লেখ করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘আমরা যদি দেশকে দারিদ্রমুক্ত, জঙ্গিমুক্ত করতে পারি, তবে কেন পারব না ধূমপান রুখতে। আমরা বীরের জাতি। দুই দিন আগে ঘূর্ণিঝড় এলো, রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছিল। আমরা সবাই মিলে প্রস্তুতি নেয়ার কারণে ক্ষতির পরিমাণ অনেক কম হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় অন্য দেশের তুলনায় আমরা অনেক এগিয়ে। সুতরাং আমরা পরি, আমরা যদি সবাই সচেতন হই, তবে এ দেশকে আমরা ধূমপানমুক্ত করতে পারব। এই সামান্য বিষয়টি কেন পারবো না?’
নাসিম বলেন, ‘সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। পরিবারকে ধূমপানমুক্ত করতে হবে। ধূমপান করলে তাকে বয়কট করতে হবে। আমরা নিজেরা যদি ডিটারমাইন্ড হই, তবেই হয়ে যাবে। কোনো আইন করতে হবে না ধূমপানমুক্ত রাখতে।’ বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক আজিমুদ্দিন বিশ্বাস, ব্যক্তি পর্যায়ে নাটাবের সভাপতি মোজাফফর হোসেন পল্টু, তামাকবিরোধী জোটের নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আক্তার এবং প্রত্যাশার সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) হারুনুর রশীদের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল মালেক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।