হাওরের জনপদকে রক্ষা করতে মাছ উৎপাদন বাড়াতে হবে–জেলা প্রশাসক
আল-হেলাল ::
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ সাবিরুল ইসলাম বলেছেন, চলনবিলের ন্যায় আমাদের হাওরের জনপদ বিশেষ করে জলমহাল নদী ও বদ্ধ জলাশয়গুলোও আজ হুমকীর সম্মুখীন। পাহাড়ী ঢলের ফলে আগত বালি দ্বারা ভরপুর হওয়ায় নদী খাল বিল ও জলাশয়গুলোর মৎস্য সম্পদ বিনষ্ট হচ্ছে। আমি এখানে এসে জানতে পেরেছি,ইজারাগ্রহীতা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি ও মহাজনের লোকেরা ইজারাচুক্তি লঙ্ঘণ করে জলমহাল শুকিয়ে বছরের পর বছর মাছ ধরে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এরকম কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে জলমহালের ইজারাচুক্তি আমরা বাতিল করে দেবো। আগামী মাছ ধরার মৌসুম আসার আগেই জেলা প্রশাসন হতে প্রত্যেক ইজারাগ্রহীতা সমিতির কাছে সরকারের গাইডলাইন ও চুক্তি মোতাবেক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণের জন্য পত্র দেয়া হবে। তিনি আরো বলেন,শুধু জলমহালের উপর নির্ভর করে বসে থাকলে চলবেনা। পুকুরে মাছ চাষ ও বাড়ীর পাশের বদ্ধ জলাশয়ে মাছের উৎপাদন বাড়াতে হবে। কারন হাওরের জনপদকে রক্ষা করতে বদ্ধ জলাশয়ে মাছ উৎপাদন বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই।
মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। সুনামগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শংকর রঞ্জন দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সাবেরা আক্তার, জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডাঃ মোজাম্মেল হক। আলোচনায় অংশ নেন হ্যাচারী কর্মকর্তা অশোক কুমার দাস, সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মোস্তফা মিয়া, জরীপ কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন,সাংবাদিক কুলেন্দু শেখর দাস,আল-হেলাল,মাহতাব উদ্দিন তালুকদার,বিন্দু তালুকদার,মাসুম হেলাল ও মোঃ আব্দুল শহীদ প্রমুখ। সভায় বক্তারা বলেন, ‘মৎস্য সম্পদ রক্ষা করতে হলে ইজারাকৃত জলমহালে মৎস্য আহরণের সময় পাম্প মেশিন দিয়ে জলমহাল সেচ করা বন্ধ করতে হবে। বর্তমানে নদ-নদী ও হাওরে জেলেরা কারেন্ট ও কোনা জাল দিয়ে মাছ শিকার করছে। এতে করে মাছের পোনা ধ্বংস হচ্ছে। মাছের পোনা ধরার প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। মাছের পোনা রক্ষায় জেলা প্রশাসন প্রয়োজনে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তা প্রতিরোধ করবে।’
সভায় জানানো হয়,২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে ১৭ হাজার একশতো ৫টি জলমহালে ৭হাজার ৭শত ৯৫ মেট্রিক টনেরও মাছ উৎপাদন করা হয়েছে। এবারের দুর্যোগ শুরু হওয়ায় প্রথমদিকে মনে করা হয়েছিলো মাছের যে ক্ষতি হয়েছে তা ব্যাপক আকার ধারন করবে। কিন্তু জেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের তৎপরতায় অল্পদিনের মধ্যেই মাছের উৎপাদন বেড়ে গেছে। আমরা মাছের দেশ সুনামগঞ্জের মানুষ ঘুরে দাড়িয়েছি। প্রশাসনের তৎপরতা অব্যাহত থাকলে মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধিতে এ জেলা উত্তরোত্তর সাফল্য লাভ করবে বলে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।