৫৬শতাংশ কোটার বিষয়টি ন্যায় বিচার না
৫৬% কোটার বিষয়টি ন্যায় বিচার না। আপনি কোনোভাবেই এটাকে জাস্টিফাই করতে পারবেন না। বড়জোর ত্যানা প্যাচাইতে পারবেন। কিছুদিন আগেও তো ভয়ংকর ব্যাপার ছিল। কোটার প্রার্থী না পেলে সেই পদ খালি রাখতে হতো। ধরুন একটা হাসপাতালে ১০ জন নার্স প্রয়োজন। সেখানে দেশে যোগ্য নার্স থাকলেও শুধু সেই নার্স কোটাভুক্ত না হলে হাসপাতালে পদ শূন্য রাখার সিস্টেম ছিল। মানে এখন কোনো মুক্তিযোদ্ধাদের বেশিবেশি নাতিপুতি নার্সিং পড়েনি, সেই দোষ তো রোগীর না, কিন্তু হাসপাতালের রোগী নার্সের সেবা পাবে না কারন সাধারন নার্স নেয়া যাবে না। চিন্তা করে দেখুন কতটুকু উদ্ভট সিস্টেম ছিল! এখন একটা মিনিমাম কমনসেন্স দিয়ে এটাকে ঠিকঠাক করা হয়েছে যে কোটায় না পাওয়া গেলে বাইরে থেকে নেয়া যাবে। আমার হিসেব হচ্ছে কোটা নিচের মতো করে বিন্যাস করা যেতে পারে। মুক্তিযোদ্ধা কোটা : এডাল্ট মানুষের সর্বোচ্চ ২% লোক সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, সুতরাং সরল অংকে বর্তমান জনসংখ্যার ২% সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরাধিকারী। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করবেন তো তাঁদের ভাতা বাড়িয়ে ১ লাখ টাকা করে দেন, চিকিৎসা আর যাতায়াত ভাতা ফ্রি করে দেন-উনাদের শেষ বয়েস আরাম আয়েশে কাটুক। এদের পরিবারকে যোগ্য করে তোলার জন্য মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিদের লেখাপড়ার ফি মওকুফ করে দেন, এমনকি চাইলে বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়েও খেলোয়াড় কোটার মতো একটা ২/৪ ভাগ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কোটা রাখা যেতে পারে। ইনারা লেখাপড়া শিখুক। কিন্তু পারিবারিক কোটা তো ডাবল করে দিলেও ৪% হবে। না হয় ৫% করে দেন। সেটাও আগামী ১০ বছরের পর রাখা ঠিক হবে না।
নারী কোটা: নারীদেরকে এখন উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে, গ্রাজুয়েশন পর্যন্ত সম্ভবত বেতন মওকুফ করা আছে। এমনিতেই লেখাপড়ায় মেয়েরা ছেলেদের সাথে সমান পাল্লা দিচ্ছে। প্রয়োজনে লেখাপড়ায় আরো সুযোগ সুবিধা তৈরি করে দেয়া হোক। এখানে বড়জোর ৫% কোটা থাকতে পারে।
জেলা কোটা : ১০ শতাংশ ঠিক আছে। প্রশাসনে দেশের সব এলাকার লোকজনের একটি রিপ্রেজেন্টেশন দরকার।
আদিবাসী কোটা : দেশে আদিবাসী জনগোষ্ঠি ১% এরও কম। সেখানে ইনাদেরকে প্রশাসনে নিয়ে আসার জন্য ২% কোটা রাখা যেতে পারে।
প্রতিবন্ধী কোটা : এই কোটায় আসলে চাকুরি পাওয়ার সংখ্যা খুব ক ম। সাধারনত অন্য কোটায় লোক না পাওয়া গেলে নাকি এই কোটা থেকে লোক নেয়া হয়। খুবই হাস্যকর ব্যাপার। এই কোটা ১ শতাংশ থাকতে পারে কিন্তু সেটা যাতে পুরোপুরি মেনে নেয়া হয় সেটাও নজরে রাখতে হবে।আমার হিসেবে তাই মোট কোটা হওয়া উচিত ( ৫%+৫%+১০%+২%+১%)= ২৩% এর মধ্যে জেলা কোটা ঠিক ধর্তব্য নয়, কারন যে কেউ এই কোটায় পড়তে পারবে।
বাকি কোটা ১৩% এর বেশি হওয়া নায্য হয় না।
আরিফ জেবতিক: লেখক, সাংবাদিক। (ফেসবুক থেকে সংগৃহিত)