টাঙ্গুয়ার হাওর

বার্তা ডেক্সঃঃপ্রতি বছরই শীত মৌসুমে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে অতিথি পাখির সমাগম ঘটে। তবে এবার পাখি এসেছে তুলনামূলক কম। পাখি কম আসলেও থেমে নেই শিকারিরা। হাওরে পাখি শিকার চলছেই।  প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের কারেন্ট জাল ও ফাঁদ দিয়ে পাখি শিকার করা হচ্ছে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এদিকে প্রতিদিনেই বিপুল সংখ্যক পর্যটক পাখি দেখতে এ হাওরে আসলেও সেভাবে দেখা মিলছে না।

জানাযায়, তুষারপাত ও শৈত্য প্রবাহ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে প্রতিবছর শীত মৌসুমে শীত প্রধান দেশ সাইবেরিয়া, চীন, মঙ্গোলিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখিরা আসে টাঙ্গুয়ার হাওরে। একাধিক সূত্রে আরো জানা যায়, প্রায় ১০হাজার প্রজাতির পাখির মধ্যে ১হাজার ৮শত ৫৫প্রজাতির পাখিই পরিযায়ী। টাঙ্গুয়ার হাওরে প্রায় ২১৯ প্রজাতির পাখির অবস্থান ছিল। এর মধ্যে ৯৮প্রজাতির পরাযায়ী, ১২১প্রজাতির দেশি ও ২২ প্রজাতির হাঁসজাত পাখি বিচরণ করত।

২০১১সালে এ হাওরে পাখি শুমারীতে বিভিন্ন বিলে প্রায় ৬৪হাজার পাখির উপস্থিতি পাওয়া যায়। এতে ৮৬জাতের দেশি ও ৮৩জাতের বিদেশি রয়েছে।  হাওর পাড়ের বাসিন্ধাদের অভিযোগ, হাওরে রাতের আঁধারে এক শ্রেণীর অসাধু পাখি শিকারী ও পাখি ব্যবসায়ীদের কারনে পাখি আসা কমে গেছে। এছাড়া হাওরের জলাবন, হিজল কড়চ, নলখাগড়া বিলুপ্তি, ইঞ্জিন চালিত মেশিনের শব্দের কারণেও পাখির সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।

তাহিরপুর উপজেলার বাসিন্দা সাদেক আলী বলেন, আগে শীতমৌসুমে বাড়িতে রাতে ঘুমানোর আগে আকাশে পাখিদের উড়ার শব্দ যেতো। কিন্তু এখন তা আর শোনা যায় না। এবার পাখি কম এসেছে।  হাওরে বেড়াতে আসা আমিনুর রহমান জানান, এবার হাওরে পাখি নেই বললেই চলে। পাখির দেখা পাই নি। টাঙ্গুয়ার হাওরে বন্যপ্রানী সংরক্ষন ও নিরাপত্তা আইন কার্যকর, জীববৈচিত্র রক্ষা ও পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য যোগপোযোগী কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে পর্যটকগণ মুখ ফিরিয়ে নিবে। 

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল জানান, অবৈধভাবে পাখি ও মৎস্য শিকারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর হাওরে কোথায় কোথায় পাখি শিকার, কিভাবে কোথায় বিক্রয় হচ্ছে এবং কিভাবে পাখি পাচার হচ্ছে সব তথ্য সংগ্রহ করে স্থানীয়রা আমাদেরকে জানালে এর সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn