অনড় সুলতান মনসুর, সংকটে গণফোরাম
আনোয়ার আলদীন –ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম তাদের নির্বাচিত সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুরকে নিয়ে পড়েছে সংকটে। বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং গণফোরাম আলাদাভাবে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাদের নির্বাচিত কোন সংসদ সদস্য শপথ নিবেন না। এই সিদ্ধান্ত সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত মোকাব্বির খান মেনে নিলেও যে কোন অবস্থায় শপথ নিতে বদ্ধপরিকর মৌলভীবাজার-২ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে বিজয়ী সুলতান মোহাম্মদ মনসুর।গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন জানিয়েছেন, গনফোরাম থেকে নির্বাচিত দুইজন এমপি হিসাবে শপথ নেবেন না। তার দল এবং ফ্রন্টের সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ সংসদে গেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গণফোরাম নেতারা জানিয়েছেন, দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কেউ অবস্থান নিলে তাকে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বহিষ্কার করা হবে।
গত বৃহস্পতিবার ঐক্যফ্রন্টের নেতারা ড.কামালের চেম্বারে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেন যে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে নির্বাচিত কোনো জনপ্রতিনিধি শপথ নেবে না। কেউ এই সিদ্ধান্ত না মানলে বহিস্কার করা হবে। পরে মোকাব্বির খান জানান, তিনি গণফোরামের অনুরোধে এই মুহূর্তে শপথ নিবেন না। অপরদিকে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের কাছে আমার দায়বদ্ধতা রয়েছে। সেই দায়বদ্ধতা থেকে সংসদে যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শপথ নেব। তিনি বলেন. জনগণ চান দায়িত্ব পালনে সংসদে যাই। জনগণের পক্ষে কথা বলবো। তারা শত প্রতিকূলতার মধ্যেও আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। আমি আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে ঐক্যফ্রন্টে এবং ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতা হিসেবে স্টিয়ারিং কমিটিতে ছিলাম। যেহেতু নির্বাচনে নিবন্ধিত একটি দলের প্রার্থী হতে হবে, সে কারণে বঙ্গবন্ধুর একজন অনুসারী হিসেবে আমি মনে করেছি গণফোরাম আমার চিন্তার কাছাকাছি। সেজন্য গণফোরামের তালিকায় আমি প্রার্থী হয়েছিলাম। আমি তো গণফোরামের কোনো প্রেসিডিয়াম মেম্বার না বা কোনো পদে নেই।
প্রসঙ্গত, ব্যাপক অনিয়ম ও ‘ভোট ডাকাতি’র অভিযোগ এনে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন এবং ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে ঐক্যফ্রন্ট সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। নির্বাচনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির ছয় জন এবং জোটের শরিক গণফোরাম থেকে দু’জন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বর্তমানে ঐক্যফ্রন্টের মোট সংসদ সদস্য ৮ জন। এদের ৭ জন ধানের শীষে এবং মোকাব্বির খান নির্বাচনে লড়েন গণফোরামের উদীয়মান সূর্য প্রতীক নিয়ে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ শপথ নিলে সমস্যা হওয়াটা স্বাভাবিক। ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, কেউ শপথ নেবে না। ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বিএনপি শপথ না নিলে শুধু গণফোরামের দুই এমপি শপথ নিলে ফ্রন্ট ভেঙে না গেলেও জোটের বড় ক্ষতি হবে।