অভিযোগ নিয়ে থানায় হাজির ৭ বছরের শিশু!
বার্তা ডেস্ক :: পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে থানায় হাজির হয়েছে ৭ বছরের এক শিশু। ছোট শিশুর আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখে অভিভূত হয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। বৃহস্পতিবার দুপুরে নাচোল গিয়ে খেলতে না দেয়ার অভিযোগ জানায় ছোট্ট শিশুটি। ঘটনার সূত্রপাত, বাড়ির পাশে তিন শিশুর সঙ্গে খেলার সময় কথা কাটাকাটি তারপর ধাক্কাধাক্কি। এক পর্যায়ে অভিযুক্ত শিশুদের অভিভাবকের কাছে অভিযোগ জানাতে যায় কাদেরী। কিন্তু সেখানে বিচার তো দূরের কথা উল্টো বকাঝকা করা হয় শিশু কাদেরীকে। এই কারণেই ন্যায় বিচার পেতে থানায় হাজির হয় সে। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে নাচোল উপজেলার স্টেশন পাড়া থেকে পরিবারের কাউকে না জানিয়ে রিকশায় করে থানায় আসে কাদেরী। তার অভিযোগ বাড়ির পাশে খেলার সময় তাকে বাধা দেয় অপর দুই শিশু। এই নিয়ে কথা কাটাকটি তারপর তাকে ধাক্কা দিয়ে সেখান থেকে তাকে সরিয়ে দেয় অভিযুক্ত শিশুরা। পরে সে বিষয়ে অভিযোগ নিয়ে যায় ওই দুই শিশুর অভিভাবক মমতাজ বেগম ও মাসুদা বেগমের নিকট। কিন্তু তারা উল্টো কাদেরীকে বকাঝকা করে এবং দাম্ভিকতার সঙ্গে পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে বলে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযোগ জানাতে সে থানায় হাজির হয়। কেঁদে কেঁদে পুলিশের কাছে বিস্তর অভিযোগ জানায় কাদেরী। তার অভিযোগ, গালমন্দ এবং অপমানজনক কথাও বলা হয়েছে তাকে। এ সময় স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী ও মানবাধিকার কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার পাঠিয়ে কাদেরীর বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। এতো অল্প বয়সে কাদেরী একাই থানায় এসে যে অভিযোগ করেছে তা শুনে হতভম্ব হয়ে পড়েন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
নাচোল ঘিওন গ্রামের আব্দুল কাদেরর ছেলে আহম্মেদ বিন কাদেরী (৭)। স্থানীয় এশিয়ান স্কুল এন্ড কলেজের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র সে। পড়াশোনার জন্য সে বসবাস করে নানা বাড়িতে। নানা বাড়ী উপজেলা শহরের স্টেশন পাড়ায়। আর সেখানেই প্রতিবেশী শিশুদের সঙ্গে খেলার সময় ঘটে এমন অপ্রীতিকর ঘটনা। নাচোল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুবুর রহমান জানান, পুলিশ অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে চায় এমন কথা শোনার পর কর্তব্যরত এক পুলিশ সদস্য আমার কাছে নিয়ে আসে শিশুটিকে। এর পর সে কাঁদতে কাঁদতে আমাকে সব ঘটনা খুলে বলে এবং আমার কাছে বিচার দাবি করে। এর পর আমি তার সঙ্গে কাউন্সিলিং করি এবং একজন এসআইয়ের সঙ্গে শিশুটিকে তার বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সমস্যার সমাধানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতো অল্প বয়সে কাদেরী একাই থানায় এসে অভিযোগ করেছে তা দেখে হতভম্ব হয়ে পড়েন এই পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি জানান, ছোট শিশুর আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ দেখে আমি অভিভূত হয়েছি। শুধু তাই নয় আমি তাকে বাড়ি যাওয়ার জন্য রিকশা ভাড়া দিতে চাইলেও সে তা গ্রহণ করেনি। সৌজন্যে :: যুগান্তর