সত্যি-সত্যিই কোনও ভুল হয়নি তার। ‘ঈশ্বরের মন’ একেবারে ঠিকঠাক ভাবেই পড়তে পেরেছিলেন বিশ্ববিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী আইনস্টাইন। সেটাও আজ থেকে ১০০ বছর আগে। তিনি সঠিকভাবে বলে দিতে পেরেছিলেন, এই ব্রহ্মাণ্ডের মূল চালিকাশক্তির কোনও বিনাশ নেই। সেই শক্তি অবিনাশী। ব্রহ্মাণ্ড যুগে যুগে যতই ফুলে-ফেঁপে উঠুক না কেন, সেই আদি, অনন্ত চালিকাশক্তির ঘনত্ব (বা ডেনসিটি) আগেও যা ছিল, এখনও তাই আছে। কোটি কোটি বছর পরেও তা একই থাকবে। এটাকেই তিনি নাম দিয়েছিলেন ‘কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্ট’। পরবর্তীতে এটি ‘ঈশ্বরের মন’ হিসেবেও পরিচিতি পায়।
শুধু তাই নয়, যাকে আমরা মহাশূন্য বলে জানি, সেখানেও ঘাপটি মেরে বসে রয়েছে ব্রহ্মাণ্ডের সেই অবিনাশী শক্তি। অর্থাত্ শূন্য আসলে প্রকৃত অর্থে শূন্য নয়। তার অন্দর ভরা রয়েছে আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা একটি ‘অদৃশ্য’ শক্তিতে। আমেরিকার ফের্মিল্যাব এর তৈরী করা ‘ডার্ক এনার্জি সার্ভের’ রিপোর্ট প্রমাণ করে দিয়েছে, ১০০ বছর আগে একদম ঠিক কথাটাই বলেছিলেন আইনস্টাইন।
‘ডার্ক এনার্জি সার্ভে ইয়ার ওয়ান রেজাল্ট : কসমোলজিক্যাল কনস্ট্রেইন্টস্ ফ্রম গ্যালাক্সি ক্লাস্টারিং অ্যান্ড উইক লেন্সিং’ শিরোনামের ফের্মিল্যাবের এই রিপোর্ট গত শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ধারণা ছিল, বর্তমানে পদার্থ বিজ্ঞানের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আইনস্টাইন আমলে দেয়া থিওরির কিছু সুক্ষ্ম ত্রুটি হয়তো বের করা সম্ভব হবে। কিন্তু পুনপুন পরীক্ষা করেও তারা দেখেছেন আইনস্টাইন যা বলেছিলেন সেটাই কাটায় কাটায় সঠিক।
উল্লেখ্য, ‘ঈশ্বরের মন’ শব্দটি জনপ্রিয় হয় ব্রিটিশ পদার্থবিদ পল ডেভিসের বিখ্যাত বই ‘দ্য মাইন্ড অব গড/ দ্য সায়েন্টিফিক বেসিস ফর এ র্যাশনাল ওয়ার্ল্ড’ প্রকাশিত হওয়ার পর। শক্তির আচার, আচরণ ঠিক কেমন, সেটা আইনস্টাইন তুলে ধরেছিলেন তার সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদে। পাঁচ বছর আগে ‘প্ল্যাঙ্ক’ উপগ্রহের করা একটি সার্ভেতেও দেখা গিয়েছিল আইনস্টাইনের পূর্বাভাস ঠিক ছিল।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn