রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পক্ষে দেড় মাস আগে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রায় দিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাকে স্বপদে বহাল করতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি না আসায় দায়িত্ব ফিরে পাননি বুলবুল। ফলে দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র নিযাম-উল-আযীম রাসিকের সকল কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

এদিকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে স্বপদে বহালের চিঠির জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন বিএনপি সমর্থিত মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও অনুসারীরা। তারা আশা প্রকাশ করছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে নগর ভবনের নগর পিতার আসনে অধিষ্ঠিত হবেন তিনি। তবে আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপ চিঠি আসার পরও তাকে নগর ভবনে ঢুকতে দেয়া হবে না বলে গুজব ছড়াচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আপিল বিভাগের রায়ের কপি ইতিমধ্যেই রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। স্বপদে বহালের জন্য পদ ফিরে পেতে এখন শুধু বাকি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের চিঠি। তবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী মেয়র বুলবুলকে দায়িত্ব প্রদানের বিষয়টি চূড়ান্ত করে ফেলেছে মন্ত্রণালয়। এখন বরখাস্তের আদেশ বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি হলেই প্রক্রিয়াটি শেষ হবে।
রাসিক মেয়র বুলবুলের আইনজীবী আমিনুল হক হেলাল জানান, ইতিমধ্যেই মাননীয় মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল স্বপদে বহালের সকল প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। গত ৫ই মার্চ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সরকারের দাখিল করা এ সংক্রান্ত লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন। চূড়ান্ত রায়ে সিটি করপোরেশনের মেয়র বুলবুলকে বরখাস্ত করা ও ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিযাম-উল-আযীমকে ‘দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র’ হিসেবে দায়িত্ব প্রদানকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।’
রাসিক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল জানান, ‘জনগণ আমাকে মেয়র নির্বাচিত করার ১ বছর দুই মাসের মাথায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হই। বিভিন্নভাবে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে মেয়রের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। দীর্ঘদিন পর মেয়রের দায়িত্ব ফিরে পেতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় হয়েছে। দায়িত্ব পেলে যেটুকু সময় পাবো রাজশাহীর মানুষের জন্য কাজ করবো।’
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন জানান, নগর ভবনে এখন পর্যন্ত এই সংক্রান্ত কোনো চিঠি আসেনি। রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক দপ্তরে রায়ের কপি এসেছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। এখন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার চিঠি নগর ভবনে এসে পৌঁছলেই সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বিএনপি জোটের অবরোধ-হরতাল চলাকালে ১৭টি মামলার আসামি করা হয় বুলবুলকে। ৪টি মামলায় তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। এই ৪টি মামলার মধ্যে পুলিশ কনস্টেবল সিদ্ধার্থ সরকার হত্যা মামলাও রয়েছে। মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি হওয়ায় মহানগর বিএনপি সভাপতি বুলবুলকে ২০১৫ সালের ৭ই মে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। দীর্ঘদিন কারাবন্দি থাকার পর সবগুলো মামলায় জামিন পান বুলবুল।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn