আ.লীগ দেশকে পুরস্কৃত করে আর বিএনপি করে তিরস্কৃত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কৃত হয়। বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে আন্তর্জাতিকভাবে দেশকে তিরস্কৃত করে।” বুধবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০১৭’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, পাঁচ বছরই বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। আন্তর্জাতিকভাবে তারা বাংলাদেশকে তিরস্কৃত করে। আর আওয়ামী লীগ থাকলে পুরস্কৃত হয়।” শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা প্রথমবার ক্ষমতায় এসে ১৯৯৮ সালে জাতীয় মৎস্যনীতি প্রণয়ন করি। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, জলমহল রক্ষা, সমাজভিত্তিক মাছ চাষ এবং মাছের প্রজননের অভয়াশ্রম তৈরি- এসব কাজ আমরা করি। আমাদের দেশের মানুষের পুষ্টি চাহিদা এমন একটা সময় ছিল, মানুষ একবেলা খেতে পেত না। এত দরিদ্র মানুষ আমাদের দেশে ছিল। খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে গবেষণা শুরু করি। ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করি। শুধু খাদ্য দিলে হবে না, পুষ্টিও দিতে হবে। সেজন্য মৎস্য চাষের ওপরে আমরা গুরুত্ব দেই।”
বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের সমুদ্রসীমা আইন করে দিয়ে যান। কিন্তু পঁচাত্তরের পরে জিয়া সরকার, এরশাদ সরকার, খালেদা জিয়া সরকার তারা এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা সমুদ্রসীমা আইন করেন। আর ১৯৮২ সালে জাতিসংঘ সমুদ্রসীমা আইন করে। ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে কিন্তু আমাদের সমুদ্রসীমার বিষয়ে উদ্যাগ নেই। দুটি প্রতিবেশী দেশের কাছ থেকে আমাদের ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে হবে। ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি। ২০০৯-এ যখন সরকার গঠন করি তখন দেখি, আমরা যেখানে রেখে এসেছিলাম, সেখানেই পড়ে আছে। আমরা উদ্যোগ নিয়ে দুটি প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে আন্তর্জাতিক আদালতে আইনি লড়াই করে আমরা আমাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পেয়েছি।”
তিনি বলেন, “সমুদ্র সম্পদকে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কাজে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করতে পারি। সমুদ্র সম্পদ আমাদের কাজে লাগাতে হবে। এখানেও আমাদের বিশাল মৎস্য ভাণ্ডার আছে। গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণের অভিজ্ঞতা আমাদের নাই। ইতোমধ্যে আমরা কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। একটা সার্ভে জাহাজ কিনেছি। তবে আমি মনে করি, একটা বড় সার্ভে জাহাজ এবং গবেষণা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে এই সম্পদ কিভাবে আমরা কাজে লাগতে পারি, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিচ্ছি। আমরা বিদেশে মাছ রপ্তানির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। এক সময় ফরমালিন সম্পর্কে সবাই খুব উঠে-পড়ে উদ্বিগ্ন ছিল। আমরা কিন্তু ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ করেছি।”
শেখ হাসিনা আরও বলেন, “বাংলাদেশের মাটি সোনার মাটি। আমরা একটু চেষ্টা করলেই যে কোনো ফসল ফলাতে পারি। হাওর অঞ্চলে আগাম বন্যার কারণে ফসল নষ্ট হয়। সেখানে মৎস্য চাষের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। শুধু মাছ উৎপাদন নয় সেগুলো সংরক্ষণ করা এবং প্রক্রিয়াজাত করতে হবে। সিলেট এবং উত্তরবঙ্গের রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে টেস্টিং ল্যাব থাকা দরকার।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বৈশাখ মাসে ইলিশ খাওয়ার একটা ধুম পড়েছিল। কোনো যুক্তি নেই। আমি আহ্বান করেছি, পহেলা বৈশাখে ইলিশ মাছ খেতে হবে এরকম কোনো কথা নেই। এসব পদক্ষেপের সুফল আমরা পাচ্ছি। আমি তো একেবারে বন্ধ করে দিয়েছি। বৈশাখে ইলিশ মাছ খাই না, খাবো না। এ কারণে ১ লাখ টন মাছ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।”