ইয়াহু মেইল ব্যবহারকারীদের জন্য রয়েছে অশনিসংকেত
বার্তা ডেস্ক :: ১৯৯৪ সালের জানুয়ারি মাসে জেরি ইয়াং ইয়াহু এবং ডেভিড ফিলো ইয়াহু প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথম দিক থেকেই ইয়াহুতে ম্যাসেঞ্জার এর সুবিধা যুক্ত ছিল। ধীরে ধীরে এর ব্যবহার অনেক ক্ষেত্রেই পুরো বিশ্বজুড়েই ছড়িয়ে যায়। বিভিন্ন কোম্পানি বা রাষ্ট্রীয় মেইল হিসেবেও ইয়াহু এর ব্যবহার দেখা গেছে বিভিন্ন দেশ এবং বড় বড় জায়েন্টদের মধ্যে। ফেসবুক প্রতিষ্ঠার পূর্বে ইয়াহুর ব্যবহার ছিল জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। ইয়াহু ম্যাসেঞ্জার ছিল সেই সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় বার্তা ও ছবি আদান প্রদান এর মাধ্যম। ইয়াহু সিকিউরিটির কয়েকটি ধারাবাহিক পর্যায় রয়েছে। ২০০৪-১০ সালের মধ্যে বা পূর্বেকার সময়কালীন যারা ইয়াহু একাউন্টগুলো ব্যবহার করেছেন তাদের ক্ষেত্রে (OTP) One Time Password আসতো না, যার ফলে মোবাইল ফোন নাম্বার ইয়াহুতে এডকন্টাক অপশন ছিল না। বর্তমান সময়ে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট অবৈধভাবে নিয়ন্ত্রণ করা খুব সহজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে যারা ইয়াহু মেইল আইডিতে যুক্ত করে রেখেছেন তারা আছেন বিশেষ ঝুঁকির মধ্যে। কারণ যাদের অনেক পুরনো ফেসবুক আইডি রয়েছে ও যাদের ইয়াহু মেইলের পাসওয়ার্ড মনে নেই, আইডি অন্যের নিয়ন্ত্রণে চলে গেলে ফেরত পাবার আশা খুব কম সেই সকল আইডির।
কারণ ইমেইল ছাড়া ফেসবুক আইডিগুলো রিকভার করা খুবই কষ্টসাধ্য আর যখন ইমেইলও হ্যাক হয়ে যায় সেই ক্ষেত্রে আইডিগুলো প্রায় ৭০ ভাগ ক্ষেত্রেই রিকভার করা সম্ভব হয়না। বর্তমানে ইয়াহুর আইডিগুলো যারা ক্লোন করে নিয়ন্ত্রণে নেবার চেস্ট করে তাদেরকে স্থানীয়ভাবে ইয়াহু ক্লোনার বলা হয়ে থাকে। যেমন আপনার ইয়াহু অ্যাকাউন্টের ভিক্টিমের একাউন্টের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একই নামে ক্রিয়েট করে থাকে। এটি করতে সময় প্রয়োজন ৫-২০ মিনিট। যখন ক্লোনাররা একটি ইয়াহু মেইল পাবে সেটির ফেসবুক আইডিতে গিয়ে লগইন করার চেষ্টা করবে। এরপর ফর্গেট পাসওয়ার্ড করে তারা নিশ্চিত হবে। এবার একটি মোবাইল সংযুক্ত করার মাধ্যমে ইয়াহু আইডি মেইল খুলে আপনার আইডি তার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিবে। যদি আপনি ইয়াহু পাসওয়ার্ড রিকোভার করতে না পারেন, সেক্ষেত্রে আপনি আপনার আইডি কখনই ফেরত পাবেন না বললেই চলে। আর এ ধরনের ক্লোনিং এর পর আইডির অ্যাক্সেস পেয়ে গেলে এর থেকে হতে পারে ইয়াহু ক্লোনারের বিভিন্ন ধরনের হুমকির এবং ব্ল্যাকমেইলের প্রাথমিক স্তর। যেমন আপনার আইডি থেকে কিছু আপত্তিকর ছবি বা ভিডিও ফুটেজ বা সংবেদনশীল তথ্য থাকতে পারে যা সংগ্রহ করে টাকা চাইবে। টাকা না পেলে তা বিভিন্ন জাগায় ছড়াতে থাকবে বলে হুমকি দেয়। ব্ল্যাকমেইল করে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে তা ভার্চুয়াল জগতে ছড়িয়ে দেয়।
বাংলাদেশে অপরাধ গবেষণাবিষয়ক সংগঠন ক্রাইম রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস ফাউন্ডেশনের (ক্রাফ) টেকনিক্যাল টিমের সদস্য বি এম ইয়ামিন এ ব্যাপারে বলেন, এই ধরনের কিছু সমস্যার টেকনিক্যাল সমাধান আমরা করেছি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এগুলো রিকোভার করা পসিবল হয় না। যার ফলে আইডিগুলো নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার থাকছে না। এ বিষয়ে ক্রাফের সভাপতি জেনিফার আলম বলেন, আমরা যারা খুব পুরনো ইয়াহু একাউন্ট ইউজার আছি এবং ফেসবুকেও ইয়াহু মেইল একাউন্টগুলোকে যুক্ত করেছি তাদের অবশ্যই উচিত এটা শিগগির চেক করে দেখা যে আমাদের ইয়াহু একাউন্টগুলো সচল আছে কিনা। এছাড়া প্রয়োজনে নতুন ইমেইল সংযুক্ত করা দরকার ফেসবুকে। ফেসবুকে যুক্ত করা ইমেইলের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ধাপগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে কিনা সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ফেসবুক ও ইমেইল আইডি হ্যাক হলে অনেকেই অনেক ধরনের বিড়ম্বনার ও ব্ল্যাকমেইল শিকার হয়ে থাকেন। আমাদের নিজেদের একটু সচেতনতাই পারে এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা থেকে আমাদেরকে নিরাপদ রাখতে। কোন অবস্থায়ই ফেসবুক এবং ইমেইলে সংবেদনশীল তথ্য এবং ছবি আদান প্রদান করা যাবে না বলেও উল্লেখ করেন জেনিফার আলম। তিনি বলেন, যদি পূর্বে এমন কিছু করা হয়ে থাকে তাহলে উভয় পক্ষই তা ডিলিট করে দিবেন। আর যে কোন জরুরি প্রয়োজনে জাতীয় জরুরি সেবা- ৯৯৯ নম্বরে (টোল ফ্রি) কল করবেন। সৌজন্যে : যুগান্তর