উদ্বোধনের প্রায় এক বছরেও সেবা দিতে পারছে না দিরাই ৫০ শয্যা হাসপাতাল
বছর খানেক আগে মন্ত্রী-এমপির উপস্থিতিতে স্থানীয় সাংসদ প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিরাই ৩১ শয্যার হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করলেও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে আজও হাসপাতালটি সেবা দিতে পারছে না হাওরপাড়ের গরীব-অসহায় মানুষদের।হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৯ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, স্থানীয় সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্তসহ সিলেট বিভাগের সরকারি দলের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে অনেকটা জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে হাসপাতালের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।হাসপাতালে সেবা নিতে আসা চাপতি হাওরপাড়ের বাসিন্দা কালাম মিয়া (৪৫) বলেন, ‘৪০-৫০ টেখা খরচ খইরা আসপাতালে আইলাম বড় ডাখতার দেখাইয়া ওষুধ নিমু। আইয়া ৫ টেখা দিয়া টিকিট লইলাম। পরে এখ ডাকতর আমারে জিকাইয়া ফুরুমুরু এক কাগজে কিতা লেইখা দিলা, আরক কোটা থাইকা ওই কাগজ দেখাইয়া খয়টা নাপা, আর বিটামিনের গুলি দিলা। আমার অসুক অইলো গেসটিক তাইন খইরা গেসটিকের বরি নাই, আসপাতালে আইয়া আমার কোনো লাভ অইলো না।
হাসপাতালের পুরাতন বিল্ডিংয়ে ভর্তি রোগীর স্বজনদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, বছর খানেক আগে শুনলাম আমাদের হাসপাতালে সুন্দর দালান হয়েছে, এখানে বড় বড় ডাক্তার আসবেন, এখন এসে দেখি শুধু দালানই হয়েছে, পুরাতন বিল্ডিংয়ে দুর্গন্ধে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। হাসপাতালে থাকলে ভালো মানুষও রোগী হয়ে যাবে। তাছাড়া বিভিন্ন অজুহাতে তারা রোগীদের সিলেটে পাঠিয়ে দেন। চিকিৎসকরা ব্যস্ত থাকেন প্রাইভেট রোগী দেখা নিয়ে।শিক্ষক রিকন সরকার বলেন, বছর খানেক আগে আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে হাসপাতাল উদ্বোধনের দৃশ্য দেখে আমাদের মনে আশার আলো জ্বলে ছিল যে হাওরপাড়ের মানুষ কম খরচে নিজ এলাকায় উন্নত চিকিৎসা সেবা পাবেন। কিন্তু আমাদের সে আশা আজ এক বছর হলেও পূর্ণ হয়নি, আমরা শুধু চেয়ে চেয়ে হাসপাতালের ৩ তলা বিশিষ্ট সুন্দর বিল্ডিংই দেখছি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাসিবুর রহমান বলেন, ৫০ শয্যার হাসপাতালটি চালু করতে অন্তত ১০ জন মেডিকেল অফিসারের প্রয়োজন। আমাদের এখানে এত চিকিৎসক নেই, হাসপাতাল চালু করতে প্রয়োজনীয় জনবলের বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।