উপজেলা নির্বাচনে ‘স্বতন্ত্রভাবে’ অংশ নেবে বিএনপি
বর্তমান সরকারের অধীনে কোনও ধরনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ব্যাপারে অনীহা থাকলেও আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে ভিন্ন কৌশলে অংশ নেবে বিএনপি। দলীয় প্রতীক ‘ধানের শীষ’ এ সরাসরি কোনও প্রার্থিতা দেবে না দলটি। তবে আগ্রহী নেতাকর্মীদের ‘স্বতন্ত্রভাবে’ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে মৌন সম্মতি দিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলের হাইকমান্ড। এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে আরও সময় নেবে বিএনপি।বিএনপির জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নেতাকর্মীদের নির্বাচন থেকে বিরত রাখলে দলের সাংগঠনিক সক্ষমতা প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে। এক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের ফলাফলে বিপুল পরাজয় দেখানোর আশঙ্কা করছেন দলটির নেতারা। ফলে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ধানের শীষকে ব্যবহার না করার পক্ষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অধিকাংশ সদস্য। বুধবার (১৬ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের বৈঠকে এক্ষেত্রে প্রত্যেকেই একমত হয়েছেন— সরকারের অধীনে নির্বাচন করার প্রয়োজন নেই।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়ার কথা দাবি করে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার বিষয়ে বা না করার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত এখনও গৃহীত হয়নি।’ স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানান, একটা সম্ভাবনা আছে, যদি আমাদের নেতাকর্মীদের কেউ নির্বাচন করতে চান, তাহলে করবেন। কিন্তু আমরা দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করবো না। বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এই নেতার পর্যবেক্ষণ— ‘লিটারেরি এ সরকারের অধীনে কোনও নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া যাবে না। যতক্ষণ না আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারছি। এ কারণে শুধু ধানের শীষ ডুবানোর কী আছে।’ বিএনপির একজন গুরুত্বপূর্ণ ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন বয়কট করলে নেতাকর্মীদের ধরে রাখা কঠিন হবে। এক্ষেত্রে যেকোনও কৌশলেই হোক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। না-হলে নেতাকর্মীদের ধরে রাখা সম্ভব না। দলীয় অনুসারীদের ব্যস্ত না রাখলে ছিটকে পড়তে পারে নেতাকর্মীরা। এ কারণে নির্বাচনে যেতে হবে।’
জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু কে বলেন, ‘এখনও তো সিদ্ধান্ত হয়নি, উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোট আছে। তাদের সঙ্গে নিশ্চয়ই আমাদের আলোচনা হবে। এই সরকারের অধীনে কী কোনও সুষ্ঠু নিবাচনের সম্ভাবনা আছে?’ নির্বাচনে না গেলে নেতাকর্মীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, এমন প্রশ্নের উত্তরে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘সেটা একটা কৌশল থাকতে পারে। কারণ, সরকার তো সব দখল করেছে। নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সব প্রতিষ্ঠানই তো একটি দলে দখলে। নির্বাচনে গিয়ে পরিবর্তনের পথ তো বন্ধ। এখন গণঅভ্যুত্থান জরুরি।’