এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৪ হাজার কোটি টাকা
বর্তমানে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৪ হাজার কোটি টাকা। গত বছরের মার্চে খেলাপি ঋণ ছিল ৫৯ হাজার ৪১১ কোটি টাকা। চলতি বছরের একই সময় এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৩ হাজার ৪০৯ কোটি টাকা। এর বাইরে আরো ৪৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ অবলোপন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ এখন ১ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি বছরের জানুয়ারিতে খেলাপি ঋণ কমাতে সুনির্দিষ্ট মতামত ও কর্মপন্থা দিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু সেই নির্দেশনার ইতিবাচক কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যাংকাররা বলেন, বড় ঋণগ্রহীতাদের কাছে আমরা অসহায় হয়ে পড়ি। অনেকে সময়মতো ঋণের টাকা ফেরত না দিলে ব্যাংক মামলা করেও ফল পায় না। তিনি বলেন, মামলা হলেই রিট হয়ে যায়, রিটের জাল থেকে ব্যাংক বেরুতে পারে না। এ কারণে বেশ কিছু ঋণের টাকা ফেরত আসে না। এদিকে খেলাপি ঋণ বাড়তে থাকায় ব্যয় সমন্বয় করতে আমানতের সুদের হার কমিয়ে আনছে ব্যাংকগুলো। ৫ বছর আগেও এই সুদের হার ছিল ১২-১৪ শতাংশ। বর্তমানে তা নেমে এসেছে ৫ শতাংশেরও নিচে। এমন অবস্থায় সরকার আমানতের আসল টাকায় হাত দিতে চাইছে। এতে আরো বিপাকে পড়েছেন সুদ আয়নির্ভর অল্প আয়ের গ্রাহকেরা। অনেকে বাধ্য হয়ে ব্যাংক খাত থেকে টাকা উঠিয়ে নেয়া শুরু করেছেন। অনেকেই ব্যাংক থেকে টাকা তুলে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল শেষে ব্যাংক খাতে গড় আমানতের সুদহার ৪.৯৭ শতাংশ হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, জনগণের আমানত সুরক্ষিত রাখতে ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা করে যাচ্ছে। খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেয়া আছে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে সুপারভিশন ও মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।