কান্নায় ভারি আর্মি স্টেডিয়াম
একসঙ্গে গিয়েছিলেন তারা। বিমানে একসঙ্গে ফিরলেনও। কিন্তু ফিরেছে প্রাণহীন নিথর দেহ। বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ২৩ বাংলাদেশির কফিনবন্দি লাশ ঘিরে শোক আর কান্নায় একাকার ছিল আর্মি স্টেডিয়াম। লাশ নিতে আসা স্বজনদের আজাহারিতে ভারি হয়ে উঠে স্টেডিয়ামের পরিবেশ। এ সময় উপস্থিত সাধারণ লোকজনও কান্না ধরে রাখতে পারেননি। গতকাল বিকালে এমন শোকাতুর পরিবেশে রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে নেপালে দুর্ঘটনায় নিহত ২৩ বাংলাদেশির প্রতি। লাশ চিহ্নিত না হওয়ায় আরো তিন জনের লাশ রয়েছে নেপালের হাসপাতাল মর্গে। চিহ্নিত হওয়া ২৩ জনের লাশ গতকাল বিমানবাহিনীর বিশেষ বিমানে করে হযরত শাহজালাল রহ. বিমানবন্দরে আনা হয়। আর্মি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় জানাজা ও শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। স্বজনের লাশ নিতে দুপুরের পর থেকে স্টেডিয়ামে অপেক্ষায় ছিলেন স্বজনেরা। বিকাল পাঁচটার কিছু আগে বিমানবন্দর থেকে লাশবাহী গাড়ির সারি যখন স্টেডিয়ামের বাইরে এসে থামে তখন কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনেরা। বিমানের ককপিটে বসে ইউএস বাংলার এয়ারলাইন্সের পাইলট আবিদ সুলতান ও কো পাইলট পৃথুলা রশিদ প্রাণবন্ত যাত্রীদের বয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন নেপালে। গতকাল প্রাণহীন লাশের সারির সামনে ছিল পাইলট ও কো পাইলটের লাশবাহী গাড়ি। স্টেডিয়ামে গাড়িবহর পৌঁছার পর সেনাবাহিনীর সদস্যরা কাঁধে বয়ে একে একে কফিনগুলো নিয়ে রাখেন মঞ্চে। স্টেডিয়ামজুড়ে পিনপতন নিরবতার মাঝে কেবলই শোনা যাচ্ছিল স্বজন হারানোদের কান্নার রোল।
ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ২৩ জনের মরদেহ নিয়ে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর কার্গো বিমান বিকাল ৪টা ৫মিনিটে কাঠমান্ডু থেকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিমানবন্দরে নিহতদের মরদেহ আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেন। বিমান পরিবহন মন্ত্রী একেএম শাহজাহান কামালও এসময় উপস্থিত ছিলেন। বিমান থেকে প্রথমেই নামানো হয় ইউএস-বাংলার প্রধান বৈমানিক আবিদ সুলতানের মরদেহ। তার কফিন একটি অ্যাম্বুলেন্স তোলার পর একে একে অন্যদের কফিনও নামিয়ে আনা হয়। বিমান দুর্ঘটনায় নিহত যাত্রীদের স্বজনদের মধ্যে যারা কাঠমান্ডুতে গিয়েছিলেন, তাদেরও ইউএস বাংলার একটি বিশেষ ফ্লাইটে গতকাল দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। বিমানবন্দর থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় আর্মি স্টেডিয়ামে। সেখানে আগে থেকে আসা স্বজনদের বসার ব্যবস্থা হয় স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে। গ্যালারিতে এসে বসেন নিহতদের পিতা, মাতা, ভাই, বোন, ছেলে, মেয়ে, শ্বশুর, শাশুড়িসহ অনেকেই। আসে তাদের বন্ধু-বান্ধবরাও। তখন স্টেডিয়ামে এক শোকাকুল পরিবেশ তৈরি হয়। কেউ কেউ বিলাপ করে কাঁদছেন। একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে বিলাপ করছেন।
স্বজনরা স্টেডিয়ামের যাওয়ার পর পরই বনানী থানা পুলিশ লাশ হস্তান্তরের প্রস্তুতি পর্ব শুরু করে। পিতা-মাতা, স্বামী-স্ত্রী বা ছেলে-মেয়েদের মধ্য থেকে লাশ গ্রহণকারী নির্বাচন করা হয়। এরপর একটা নির্ধারিত ফরমে লাশ গ্রহণকারীর বৃত্তান্ত লেখা হয়। বনানী থানা এক একজন উপ পরিদর্শককে (এসআই) এক এক লাশ হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দায়িত্ব দেয়া হয়। লাশ আসার আগেই শেষ হয় তাদের প্রস্তুতি পূর্ব। এরপর বিকাল ৫টার দিকে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সগুলো স্টেডিয়ামে পৌঁছে। সেনা সদস্যদের কাঁধে চড়ে লাশগুলো আসে নির্ধারিত মঞ্চে। আগে থেকে ফুলে ফুলে সজ্জিত মঞ্চটি প্রস্তুত ছিল। মঞ্চে রাখা হয় একে একে ২৩ কফিন। এরপর ঘোষণা আসে আসরের নামাজের পর জানাজার। সে অনুযায়ী আজান হয়। তারপর আছরের নামাজ। এরপর জানাজা। নিহতদের জানাজা পড়া হয়। শত শত মানুষ জানাজায় অংশ নেন। জানাজার পর ৫টা ৩৫মিনিটে লাশ হস্তান্তর শুরু হয়। প্রথমে লাশ হস্তান্তর করা হয় দুর্ঘটনাকবলিত বিমানটির পাইলট ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতানের লাশ। তার লাশ গ্রহণ করতে আসে উত্তরার মাস্টার মাইন্ড স্কুলের ও লেভেল পরীক্ষার্থী তামজিদ বিন সুলতানসহ স্বজনরা। এরপর লাশ হস্তান্তর হয় ফার্স্ট অফিসার পৃথুলা রশিদ, কেবিন ক্রু খাজা হুসেইন মোহাম্মদ ও শারমিন আক্তার ওরফে নাবিলা ফারহিনের লাশ। এরপর পর্যায়ক্রমে মো. রাকিবুল হাসান, ফারুক হাসান প্রিয়ক, তার শিশু সন্তান তামাররা প্রিয়ন্ময়ী, তাহিরা তানভীর শশী রেজা, বিলকিস আরা, ফয়সাল আহমেদ, মো. হাসান ইমাম, হুরুন নাহার বিলকিস বানু, মোছা. আখতারা বেগম, নাজিয়া আফরিন চৌধুরী, মো. রফিকউজ জামান, সানজিদা হক, শিশু অনিরুদ্ধ জামান, মিনহাজ বিন নাসির, আখি মনি, এস. এম মাহমুদুর রহমান, মো. মতিউর রহমান, মো. নূরউজ জামান বাবু ও উম্মে সালমার লাশ হস্তান্তর করা হয়। লাশ হস্তান্তরের সঙ্গে সঙ্গে স্বজনরা লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে রওয়ানা দেন নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে। গতকাল সন্ধ্যায়ই আবিদ সুলতানকে বনানীর সামরিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
লাশ হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেয়া বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন রানা মানবজমিনকে বলেন, যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা না হয় সেজন্য প্রত্যেক লাশ হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় সম্পন্নের জন্য এক এক জন্য উপ-পরিদর্শককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। নিহতের ফার্স্ট ব্লাডের কাউকে নির্বাচনের পর তার নাম-পরিচয়সহ পূরণকৃত ফরমে স্বাক্ষর নিয়ে লাশ দেয়া হয়েছে। এই সঙ্গে দেয়া হয়েছে ডেথ সার্টিফিকেট।
এদিকে ফার্স্ট অফিসার পৃথুলার লাশ গ্রহণের পর তার পিতা আনিছুর রশিদ মানবজমিনকে বলেন, পৃথুলার মায়ের কর্মস্থল আশা টাওয়ারে তার বেশি সময় কেটেছে। এখান থেকে তার লাশ শ্যামলীর আশা টাওয়ারে নেয়া হবে। সেখানে তৃতীয় নামাজে জানাজা শেষে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে লাশ দাফন করা হবে।
বিকাল ৫টা ২৫মিনিটে মাওলানা মাহমুদুর রহমান জানাজা পড়েন। জানাজায় সরকারের মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতা, সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, নিহতদের আত্মীয়-বন্ধুসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশা ও সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন। জানাজা শেষে প্রসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে মরদেহে শ্রদ্ধা জানানো হয়। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল, বেসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান কামাল, বিএনপি নেতা আলতাফ হোসেন চৌধুরী, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, মো. শাহজাহান, খাইরুল খবির খোকন, তিন বাহিনীর প্রধান, বিজিএমই সাবেক সভাপতি ও ব্যবসায়ী নেতা আতিকুল ইসলাম, সুজন প্রধান সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকিরসহ সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির নেতা আলতাফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ইউএস বাংলা বিমান দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশের ওপর বিমান চলাচলে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার যে কথা শোনা যাচ্ছে তা হয়তো হবে না। কারণ প্রাথমিকভাবে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স ও পাইলটের ত্রুটি পাওয়া যায়নি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, নেপালে নিহত ও আহত প্রত্যেক স্বজনদের সঙ্গে দেখা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইউএস বাংলা কোনো আর্থিক সহায়তা দেবে কি না সেটা তাদের ব্যপার। তবে, প্রধানমন্ত্রী যার যা প্রয়োজন তাই দিয়ে সহায়তা করবেন। তিনি আরো জানান, অতি দ্রুত বাকি তিন মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে নিয়ে আসা হবে। এটা একটু সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। বিমানমন্ত্রী শাহজাহান কামাল বলেন, ব্লাকবক্স উদ্ধার হয়েছে। তদন্ত হচ্ছে, সময়মতো সবকিছু শেষ হবে।
বাবাকে আর টাই বেঁধে দেবেন না পৃথুলা: আর্মি স্টেডিয়ামের ভিড়েই দেখা মিললো কাঠমান্ডুতে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ইউএস বাংলার কো-পাইলট পৃথুলা রশিদের বাবা আমিনুর রশিদের। পাশেই মা। বারবার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছিলেন বসা অবস্থায়। বাবার একমাত্র মেয়ে পৃথুলা। বিমানে ওড়ার আগে প্রতিদিন সকালে বাবার টাই বেঁধে দিয়ে বের হতেন পৃথুলা। তারপরই নিজের কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হতেন তিনি। প্রতিদিনের মতোই ১২ই মার্চ বাবাকে টাই বেঁধে দিচ্ছিলেন পৃথুলা। এ সময় বাবাকে বললেন, আমি না থাকলে তোমাকে টাই বেঁধে দেবে কে? বাবা আমিনুর রশিদও বললেন, তুমিই সবসময় বেঁধে দেবে। একথা বলেই ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন পৃথুলা। কিন্তু আর ফিরলেন না ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের এই কো-পাইলট। নেপালে ত্রিভুবনেই থেমে গেল পৃথুলার জীবন। বাবাকে আর টাই বেঁধে দেবেন না তিনি। আর্মি স্টেডিয়ামে মেয়ের লাশের অপেক্ষায় থেকে এভাবেই মেয়েকে নিয়ে অশ্রুশিক্ত আমিনুর রশিদ স্মৃতিচারণ করছিলেন।
মায়ের লাশ নিতে বাবার সঙ্গে এসেছিল হিয়াও: নেপালের কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলার বিধ্বস্ত উড়োজাহাজে কেবিন ক্রু ছিলেন শারমিন আক্তার নাবিলা। তার একমাত্র মেয়ে ইনায়া ইমাম হিয়া। বয়স মাত্র দুই বছর। দুর্ঘটনার দিন প্রতিদিনের মতো মা নাবিলা বাসার কাজের বুয়ার কাছে হিয়াকে রেখে গিয়েছিলেন নিজ কর্মস্থল ইউএস-বাংলায়। আর্মি স্টেডিয়ামে নাবিলার একমাত্র শিশুকন্যা হিয়া বাবা হাসান ইমামের কোলে চড়ে মায়ের লাশের অপেক্ষায় ছিল। নাবিলা মেয়েকে আদর করে ডাকতেন ‘ইয়া পাখি’ বলে। ‘ইয়া পাখি’ জানেই না তার মা তাকে রেখে চিরতরে উড়ে গেছেন। জানাজা শেষে শিশুকন্যাকে কোলে নিয়েই স্ত্রীর মরদেহ গ্রহণ করেন হাসান ইমাম। এ সময় অনেকে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।
মতিউর রহমানের সহকর্মীর আহাজারি: নেপালের কাঠমান্ডুতে ঘটে যাওয়া বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ছিলেন রানার গ্রুপের অ্যাসিস্টেন্ট ম্যানেজার মতিউর রহমান। মরদেহ গ্রহণ করতে স্বজনদের সঙ্গে ছিলেন তার এক সহকর্মীও। কিন্তু কিছুই বলতে পারছিলেন না তিনি। নিজের নামটাও বলতে পারেননি তিনি শুধুই কান্না আর আহাজারি করছিলেন। হাতে ছিল সহকর্মীর একটি ছবি। বারবার সে ছবিটির দিকে তাকিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। কখনো কখনো চিৎকার।
স্বামী-সন্তানকে শেষবারের মতো দেখতে বাড়ি যান এ্যানি: দুর্ঘটনায় আহত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন আলিমুন্নাহার এ্যানি স্বামী ফারুক হোসেন প্রিয়ক ও মেয়ে মৃন্ময়ী তামারার লাশ দেখতে গতকাল হাসপাতাল ছেড়ে গাজীপুর যান। গতকালই তিনি জানতে পারেন তার প্রিয় সন্তান আর স্বামী বেঁচে নেই। একই দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে ফেরা প্রিয়কের ভাই মেহেদীও চিকিৎসাধীন ছিলেন ঢাকা মেডিকেলে। ভাই এবং ভাতিজির লাশ গ্রহণ ও জানাজায় অংশ নিতে তিনি হাসপাতাল থেকে আর্মি স্টেডিয়ামে যান। এ্যানিকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হয়নি। স্বামী সন্তানের দাফনের পর তিনি আবার হাসপাতালে ফিরবেন।
আহত হোছাইন কবিরও ঢামেকে: এদিকে গতকাল ইউএস বাংলার বিমানে নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে নেপাল থেকে আনা হয় আহত মো. হোসাইন কবিরকে। তাকে বহন করা অ্যাম্বুলেন্সটি গতকাল বিকাল সাড়ে তিনটায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে সরাসরি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে যায়। তাকেও ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার স্ত্রী হেনা কবির মানবজমিনকে বলেন, এত বড় একটা দুর্ঘটনায় যে সে বেঁচে আছে এজন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।