সুনামগেঞ্জর শায়েস্তাগঞ্জে প্রতিবছরের মতো এবারও আয়োজন করা হয় ঐতিবাহী কুস্তি খেলার। এই খেলা দেখতে ঢল নামে হাজারও মানুষের। প্রতি বছরের এমন দিনে (ভাদ্র-আশ্বিন মাসে) এরূপে সাজে শিমুলবাক ইউনিয়নের সাতগাঁও জীবদারা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠটি। কয়েক হাজার দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে মাঠটিতে। ১২ সেপ্টেম্বর, সোমবার এ বছরের খেলায় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোহনপুর গ্রামের কুস্তিগির খেলেছেন শান্তিগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাক ইউনিয়নের জীবদারা ও উকারগাঁও গ্রামের কুস্তিগিরদের বিরুদ্ধে। ৫০ থেকে ৬০ জন কুস্তিগির খেলেছেন প্রথম ধাপে। দ্বিতীয় ধাপে মোহনপুরের ৮জন কুস্তিগিরকে হারিয়ে জয় লাভ করে শিমুলবাক-উকারগাঁওয়ের সাত কুস্তিগির৷ বিজয়ী কুস্তিগিরেরা হলেন- শিমুলবাকের তোহা, কবির হোসেন, পুষ্প, সুজন ও উকারগাঁওয়ের এমরান, আজিজুল হক ও অজুদ মিয়া। তবে, খেলায় বিজয়ীদের পুরষ্কার দেওয়ার কোনো রীতি চালু নেই। সকল খেলোয়াড় ও আমন্ত্রিত অতিথিদের শুধুমাত্র খাওয়া-দাওয়া করানো হয়।
খেলা আয়োজক কমিটির অন্যতম একজন ফরিদ আহমেদ। গত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি। ফরিদ আহমদ জানান, শত বছর ধরে তাদের গ্রামের উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে ঐতিহ্যবাহী এ খেলাটির আয়োজন করেন উকারগাঁও ও জীবদারা গ্রামবাসী। নবীন-প্রবীণদের সমন্বয় করেই ভাদ্র-আশ্বিন মাসে আমরা খেলাটির আয়োজন করে থাকি। বোরো ধানের জালাচার (ধানের বীজতলা) এখনো ডুবে আছে। বীজতলা ভেসে উঠলে সবাই বৈশাখী ক্ষেতে কাজে নেমে পড়বে। আর কারো কোনো অবসর সময় থাকবে না। এখন কাজ তুলনামূলক কম, তাই গ্রামে নির্মল একটি আনন্দের ব্যবস্থা করি আমরা।
তিনি জানান, এ খেলায় খুব একটা প্রচারণাও আমরা করি না। তবু হাজার হাজার দর্শক আসেন খেলাটি দেখতে। সোমবার প্রায় ৫ হাজার মানুষের সমাগম ঘটেছিলো। মাঠের চারদিকে ছিলো শুধু মানুষ আর মানুষ। ছিলো মানুষের ছাতা। হৈ-হুল্লোর আর দোকানিদের বিক্রির ব্যস্ততা। গ্রামের মধ্যে এক আনন্দের পরিবেশ ছিলো সারাটা দিন। খেলায় হারজিত আছে, থাকবেই। তবে আমাদের এখানো কাউকে পুরষ্কার দেওয়ার কোনো রেওয়াজ নেই। যাদেরকে আমরা আমন্ত্রণ জানাই তাদেরকে বাড়িতে নিয়ে আদর আপ্যায়ন করি, ডাল-ভাত যা পারি তা খাওয়াই। অনেক আনন্দ হয় দুই গ্রামে। খেলায় মোহনপুরের সাথে জীবদারা-উকারগাঁওয়ের খেলা হয়। সহস্রাধিক মানুষের সমাগম ঘটে। অনেক আনন্দ হয় সারাদিন।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১৫৪ বার