ছয় মাসের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র না করলে এবং ভোটার না হলে আর আর ভোটার হওয়া যাবে না, এমন গুজবে দলে দলে দেশে ফিরছেন প্রবাসীরা। জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে দেশে আসছেন তারা। প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ প্রবাসীরা অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ করে নির্বাচন কমিশনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে ভিড় জমাচ্ছেন। প্রবাসী অধ্যুষিত সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় এমন চিত্র দেখা গেছে।
সোমবার (৬ মার্চ) দুপুরে উপজেলা সদরের নির্বাচন ভবনে গিয়ে দেখা যায়, জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্যে প্রবাসীদের ঢল নেমেছে। ভবনের দ্বিতীয় তলায় নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে আগ্রহীদের ভিড়। এরমধ্যে সিংহভাগ প্রবাসী। হঠাৎ চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন কার্যালয়ের দায়িত্বরত কর্মকর্তা, কর্মচারীরা। একটি মাত্র মেশিন দিয়ে চলছে ছবি তোলার কার্যক্রম। একারণে সংশ্লিষ্টদের যেমন চাপ সামলাতে হয়, তেমনি দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে আবেদনকারীদের।
যুক্তরাজ্য প্রবাসী তহুর উদ্দিন জানালেন, ভোট তোলার জন্য দেশে ফিরেছি। অসংখ্য মানুষ এসেছেন এখানে। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও কাজ করতে পারছি না। প্রবাসীদের সেবার মান বাড়াতে আরও লোকবল ও যন্ত্র বাড়ানো প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি। জয়নাল আবেদীন নামের আরেক যুক্তরাজ্য প্রবাসী জানান, জানুয়ারি মাসে লন্ডনে থাকা অবস্থায় শুনেছি, ৬ মাস পরে নাকি আর কোনো প্রবাসীরা ভোটার তালিকায় নাম লেখাতে পারবে না। বর্তমান সময়ে বিমানের টিকেটের অনেক দাম। তারপরও দেড় লাখ টাকা ভাড়া দিয়ে এক সপ্তাহের জন্য দেশে এসেছি।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর তাপস রঞ্জন তালুকদার ও আতিকুল ইসলাম বললেন, গত দুই মাস জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্যে কার্যালয়ে আসছেন। প্রতিদিন প্রায় ৭০-৮০ জন প্রবাসীর জন্য ছবি তোলাসহ প্রয়োজনীয় সকল কাজ করা হচ্ছে। এতে করে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাম্প্রতিককালে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত জগন্নাথপুরের কয়েক হাজার বাসিন্দা দেশে ফিরেছেন জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য। জমি ক্রয়-বিক্রয় এবং রেমিট্যান্স প্রবাহের চলমান প্রক্রিয়ায় ব্যাংক হিসাব খুলতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক। ফলে অধিকাংশ প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় পড়তে হয় চরম দুর্ভোগে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রবাসীরা জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির জন্য দেশে আসছেন। অন্যদিকে গুজব রটেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস অর্থাৎ এই ৬ মাসের মধ্যে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না হতে পারলে, পরে আর ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া যাবে না। এমন গুজবে এলাকায় ফিরছেন প্রবাসীরা।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সাইফুদ্দীন জানান, জুন মাসের পর প্রবাসীরা ভোটার হতে পারবেন না এ কথাটি সম্পূর্ণ গুজব। প্রবাসীরা যখনই দেশে আসবেন, তখনই প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্রের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করে যে কোন কর্ম দিবসে অফিসে এসে ভোটার হতে পারবেন।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১০০ বার