ছাতকের মানিকপুরের লিঁচু চাষীরা ভোগছেন হতাশায়
বিজয় রায়-
লিঁচুর গ্রাম নামে পরিচিত ছাতকের মানিকপুরে চলতি মৌসুমে শিলাবৃষ্টিতে শতকরা ৫০ভাগ লিচুঁ পূর্নতা লাভের আগেই ঝরে গেছে। লিচুঁর উৎপাদন নেমে এসেছে শতকার প্রায় ৪০ ভাগে। ফলে মানিকপুরনহ আশপাশের ১৪-১৫টি গ্রামের লিঁচু চাষীরা ভোগছেন হতাশায়। গাছে-গাছে আশানুরোপ মুকুল এলেও লিচুঁ পুর্নাঙ্গতা লাভ করার আগেই শিলা বৃষ্টিতে শতকরা ৫০লিচুঁ ঝড়ে যায়। আরো ১০ ভাগ লিচুঁ রোগে ও বাদুঁর জাতিয় পাখির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। প্রতি বছর বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসের এমন সময়ে মানিকপুর গ্রামের মানুষ অন্যরকম এক উৎসব পালন করলেও এ বছর তাদের মধ্যে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র ও ভিশন্নতা। লিঁচুর কাংখিত ফলন উৎপাদন না হওয়ায় এ বছর চাষীদের লিচু উৎসবের আনন্দে ভাটা পড়ে। এর উপর বাদুর জাতিয় পাখির উপদ্রপে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশংকায় লিঁচু সম্পূর্নভাবে পাকার আগেই অপেক্ষাকৃত কম মুল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে চাষীদের। প্রতি বছর গ্রাম সংলগ্ন চৌমুহনি বাজারে সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে দীর্ঘ লাইনে বসে লিচুর হাট । এ বছর উৎপাদন কম হওয়ায় বাজারে এ দৃশ্য দেখা যায়নি। প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও বাদুর জাতিয় পাখির উপদ্রবে এবছর ফল উৎপাদনের হিসেব চাষীদের মধ্যে মারাত্মক গড়মিল সৃষ্টি হয়েছে। লিচুঁ উৎপাদন ও বাজারজাত করার উপর ভর করে এখানের সহশ্রাধিক পরিবার জীবন-জীবিকা নির্ভর করে আসছে যুগ-যুগ ধরে। বংশানুক্রনিকভাবে শতাধিক বছর ধরে মানিকপুর গ্রামে লিচুঁ চাষ করে আসছে তারা। গ্রামের লোকজন জানান, চলতি বছরে বাগানের অনেক গাছে ফল ধরেনি। কিছু-কিছু গাছে অপেক্ষাকৃত কম লিঁচুর ফলন হয়েছে। লিচুঁ চাষের পাশাপাশি এ অঞ্চলের কৃষকরা আম, কাঠাঁল ও মৌসুমী শাক-সবজীর চাষাবাদ করে থাকেন তারা। শিলা বৃষ্টির কারনে তাদের শাক-সবজী বাগানেরও ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। মানিকপুর ছাড়া গোদাবাড়ি, কঁচুদাইড়, চাঁনপুর, বড়গল¬¬া, রাজারগাঁও, দোয়ারার টেংরা, লামাসানিয়া, লাস্তবেরগাঁও, পরমেশ্বরীপুর গ্রামেও এখান বানিজ্যিকভাবে লিচু চাষ করা হচ্ছে। মানিকপুর গ্রামের লিচুঁ বাগানের মালিক আরব আলী, রুস্তুম আলী, আবু তাহের, সিদ্দিকুর রহমানসহ লিচুঁ চাষিরা জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর প্রতিটি গাছে উলে¬খযোগ্য পরিমান লিচুঁর মুকুল এসেছিল। সর্বোচ্চ ফলনের আশায় অধিক পরিচর্যাও করেছেন তারা। কিন্তু কালবৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টির কারনে বেশিরভাগ লিঁচু ঝড়ে যায়। অপেক্ষাকৃত এখানের জমি উচুঁস্থানে হওয়ায় বোরো ফসল অনেকটাই বক্ষা পেয়েছে। ইতিমধ্যেই আউস ফললও লাগানো হয়ে গেছে। নোয়ারাই ইউনিয়নে দায়িত্বরত উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ জানান, মানিকপুর একটি আদর্শ গ্রাম। এ গ্রামের প্রত্যেকটি মানুষ কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত। লিচুঁ চাষ করা এ গ্রামের মানুষের পুরানো প্রধান পেশা। লিচুঁ চাষে ও বাজারজাতের উপর নির্ভর করে এ গ্রামের মানুষের জীবনমান। এ ছাড়া প্রত্যেকেরই রয়েছে পৃথক শাক-সবজির বাগান। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে সার্বিক সহযোগিতা দেয়া হয়ে থাকে চাষিদের। ইতিমধ্যেই লিচঁ চাষিদের মধ্যে উন্নত জাতের চায়না-বি জাতিয় লিচুঁর চারা বিতরন করা হয়েছে।