ছাতকের কৈতক হাসপাতালে নার্সের ভূল চিকিৎসায় সাত মাসের এক অন্তসত্যা মা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। অন্তসত্যা মহিলা মেহেরজান বেগম (২১) ছাতক উপজেলার সিংচাপইর ইউনিয়নের আসামপুর গ্রামের প্রবাসী নুরুল হকের স্ত্রী ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পূর্ব পাগলা উইনিয়নের মামদপুর গ্রামের আব্দুন নুর’র একমাত্র মেয়ে। বর্তমানে তিনি সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চতুর্থ তলার ২ নং ওয়ার্ডে ২৮ নং বেডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। বর্তমানে গর্ভবর্তী মা ও গর্ভের সন্তানের অবস্থা আশংকাজন বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় মেহেরজান বেগম’র ভাই দক্ষিণ সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি এম এ কাসেম বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জের আমলগ্রহনকারী ম্যাজিষ্টেট আদালতে কৈতক হাসপাতালের নার্স কৃঞ্চা রানী দাস’ বিরুদ্ধে একটি মামলা (নং ১১৭/২০১৭) দায়ের করেছেন। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায, নামা উল্লেখিত কৃঞ্চা রানী দাস পেশায় একজন সেবিকা। তিনি অনুমান ১৫-১৬ বছর যাবৎ কৈতক ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে কর্মরত থাকিয়া এলাকায় কিছু কতিপয় ব্যক্তিদের সাথে সু-সম্পর্ক সৃষ্টিসহ বিভিন্ন সময়ে কৈতক হাসপাতালে সেবা নিতে আশা গর্ভবর্তী মহিলাদের মধ্যে নিজেকে একজন বিশেষজ্ঞ গাইনী ডাক্তার পরিচয় দেন এবং কৈতক সরকারী হাসপাতালের কোয়ার্টারে তার প্রাইভেট চেম্বার রয়েছে। তিনি সেখানে গর্ভবর্তী মহিলাদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। নিজের আর্থিক লাভের জন্য তিনি এখানে রোগীদেরকে ভ’ল চিকিৎসা দিয়ে অনেক গর্ভবর্তী মা ও গর্ভের সন্তানদের জীবন নিয়ে খেলা করাসহ রোগীদেরকে আর্থিক ভাবেও ক্ষতি করছেন। তার এসব অবৈধ কার্যকলাপ এবং সরকারী নীতি বর্হিভূত ভাবে বিশেষজ্ঞ গাইনী ডাক্তার পরিচয়ে চিকিৎসা প্রদান করায় এবং তাহার ভূল চিকিৎসার কারণে বিভিন্ন জনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কৈতক হাসপাতালের ইনচার্জ গত ২২/০৬/২০১৬ ইং তারিখে। এসব প্রতারণার জন্য শোকজ নোটিশ প্রদান করেন এবং ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ছাতক, সহকারী নার্সিং বিভাগ, জেলা পাবলিক হেলথে অনুলিপি প্রেরণ করেন। এসব কিছু উপেক্ষা করে তিনি ভূল চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন দাপটের সাথে। অভিযোগ থেকে
জানাযায় গত ১৫/০৪/২০১৭ইং তারিখে অভিযোগকারীর বোন সাত মাসের অন্তসত্বা মেহেরজান বেগমকে কৈতক হাসপাতালে নিয়ে গেলে নার্স কৃঞ্চা রানী কৌশলে গাইনী ডাক্তার পরিচয় দিয়ে তাদেরকে তাড়াতাড়ি রোগীকে হাসপাতাল কোয়ার্টাস্থ তাহার প্রাইভেট চেম্বারে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। এসময় কৃঞ্চা রানী দাস তাহার প্রাইভেট চেম্বারে রোগীকে চেক আপ করে চিকিৎসাপত্র দেন এবং চিকিৎসাপত্র অনুযায়ী ঔষধ সেবন করার কথা বলে রোগী ও তার স্বজনদের কে বাড়ীতে বিবদায় করে দেন। তাহার ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ঔষধ সেবন করার পর রোগীর পেট ফুলে যাওয়াসহ এক পর্যায়ে রোগী জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাৎক্ষনিকভাবে তাকে ১৭/০৪/২০১৭ইং তারিখে পূনরায় কৈতক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কৈতক সরকারী হাসপাতালের ইনচার্জ ডাঃ মাজহারুল ইসলাম পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র দেন এবং নার্স কৃঞ্চা কর্তৃক ভূল চিকিৎসা দেওয়ার কারণেই রোগীর অবস্থা আশংকাজনক বলে জানান। খবর পেয়ে সিভিল সার্জন সুনাগঞ্জ আশুতোশ দাশ কৈতক হাসপাতাল পরিদর্শন করে গর্ভবর্তী মা ও গর্ভের সন্তানকে বাঁচানোর নিমিত্তে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে স্থানান্তর করার নির্দেশ প্রদান করেন। এ ব্যাপারে নার্স কৃঞ্চা দাশের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্দ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাতক হাসপাতালের ইনচার্জ (টিএইচও) অভিজিত শর্মা বলেন কৈতক হাসপাতালে নার্সরা যাতে চিকিৎপত্র দিতে না পারে সে জন্য আমি ব্যবস্থা নিয়ে ছিলাম এবং ৩/৪দিন নার্স কতৃক চিকিৎসা দেয়া বন্ধ ছিল। বর্তমানে কোন অনুমতি ছাড়াই তারা (নার্স) চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে। এটা সম্পুর্ন অবৈদ। নার্স কৃঞ্চা রানী দাস কতৃক চিকিৎসায় মেহেরজান বেগম অসুস্থ হওয়ার খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে রোগী ও গর্ভের সন্তানের উন্নত চিকৎসার জন্য ছাতক হাসপাতালের সরকারী এম্বুল্যান্সেকরে আমাদের নিজ খরছে রোগীকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন সুনামগঞ্জ, আশুতোষ দাশের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে তাকে ওসমানী হাসপাতালে স্থানান্তর করার নির্দেশ দিয়েছি এবং নার্সের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এব্যপারে জনতে নার্স কৃঞ্চা রানী দাসে সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn