সুনামগঞ্জের ছাতকে টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি তলিয়ে গেছে রোপা-আমন ক্ষেত ও বীজতলা। বর্তমানে সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীর পানি বিপদসীমার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ইতোমধ্যেই শতকরা ৭০ ভাগ রোপা-আমন বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে করে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে বিরাজ করছে হতাশা। এদিকে বৃষ্টির কারণে জমে থাকা পানিতে শাকসবজির ক্ষেতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় সহসা পানি না কমার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। দ্রুত পানি না কমলে নতুন বীজতলা প্রস্তুত ও জমিতে হালিচারা রোপন করার সম্ভবনা দেখছেন না তারা।
উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নেই রোপা-আমন ফসলের কম-বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে গতকাল শুক্রবার (২৭ আগস্ট) জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এর মধ্যে নোয়ারাই, ইসলামপুর, কালারুকা, চরমহল্লা, ভাতগাঁও, সিংচাপইড় ও উত্তর খুরমা ইউনিয়নে তুলনামূলক বেশি ক্ষতি হয়েছে। চলতি মৌসুমে রোপা-আমন ধানের জন্য ৭০৫ হেক্টর জমিতে বীজতলা প্রস্তুত করা হয়েছিল। এর মধ্যে অধিকাংশ বীজতলাই বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৬৯৫ হেক্টের জমিতে রোপা-আমন চাষের জন্য বীজতলা প্রস্তুতের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৭০৫ হেক্টর জমিতে বীজতলা প্রস্তুত করা হয়। তবে ভারী বর্ষণের কারণে অন্তত পাঁচ হেক্টর জমির বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে রোপনকৃত আরও ১০ হেক্টর জমি তলিয়ে গেছে। এসব জমির রোপনকৃত চারা পানিতে পঁচে নষ্ট হয়ে যাবে বলে কৃষকরা মনে করছেন। তবে পানি নেমে গেলে এসব জমিতে দেরিতে রোপন করা যায় এমন নাবি জাতের বীজ দিয়ে আবারও চাষাবাদ করা সম্ভব।
উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সোয়েব আহমদ জানান, চলতি মৌসুমের জন্য ১৩ হাজার ৯ হেক্টর জমিতে রোপা-আমন চাষাবাদ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে উফশী জাতীয় ১১ হাজার ৫৩০ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ১ হাজার ৫৬২ হেক্টর। ইতোমধ্যেই উফশী জাতের চার হাজার ৩৮০ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ২৩ হেক্টর জমিতে রোপা-আমন চাষাবাদ করা হয়েছিল। কিন্তু অতিবৃষ্টি কারণে বেশ কিছু বীজতলা ও রোপনকৃত জমি নষ্ট হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিক হোসেন খান জানান, কৃষকদের ক্ষতি পোষানোর জন্য কৃষি অফিস কর্তৃক বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ ও কৃষি ভিত্তিক পরামর্শ দেওয়ার জন্য ইউনিয়নে নিয়োজিত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ক্ষতি পুষিয়ে আনার জন্য ইতোমধ্যেই নাবি জাতের বীজ কৃষকদের মধ্যে বিতরণ শুরু হয়েছে।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১২৪ বার