জগন্নাথপুরে বেড়েই চলেছে বন্যার পানি, তলিয়ে গেছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট
জগন্নাথপুরে বন্যার পানি বেড়েই চলেছে। স্বরণকালের সবচেয়ে বড় বন্যার আশঙ্কা বিরাজ করছে। তবে ইতোমধ্যে বন্যার পানিতে বাড়িঘর তলিয়ে ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। জানাগেছে, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি বেড়েই চলেছে। উপজেলার সকল নদী ও হাওরে পানি বৃদ্ধি পেয়ে মানুষের ঘর বাড়িতে উঠে গেছে। বাড়িতে পানি উঠে যাওয়ায় মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অনেকে অন্যত্র নিরাপদ উচু স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন। অনেকে আবার পানির সাথে লড়াই করে নিজ ঘরে বাঁশের মাচা বানিয়ে বসবাস করছেন। বন্যার পানিতে উপজেলার অধিকাংশ রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। নদী ও হাওর পাড়ের বাড়ি ঘরের মানুষ অনেকটা পানিবন্দি অবস্থায় জীবন-যাপন করছেন। উপজেলার অনেক স্থানে নৌকা ছাড়া যোগাযোগ রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। বন্যার পানির কবলে পড়ে মানুষ অনাকাঙ্খিত দুর্ভোগে পড়েছেন। এছাড়া রোপা আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাকা আউশ ধানও পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সেই সাথে পানি বৃদ্ধি পেয়ে মৎস খামার গুলো তলিয়ে গেছে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় অনেক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা যেতে-আসতে পারছে না।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র শফিকুল হক জানান, বন্যার পানিতে পৌর এলাকার শতাধিক বাড়ি ঘরের লোকজন পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। প্রায় ৪০টি রাস্তা পানির নিচে আছে। সেই সাথে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কলকলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হাসিম জানান, বন্যায় কলকলিয়া ইউনিয়নের প্রায় সকল রাস্তাঘাট পানির নিচে আছে। এছাড়া হাওর পারের বাড়ি ঘরের মানুষ পানিবন্দি আছেন। চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আরশ মিয়া জানান, বন্যায় এ ইউনিয়নের প্রায় ২৫০টি পরিবারের লোকজন পানিবন্দি আছেন এবং ২০টি রাস্তাঘাট তলিয়েছে।
রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ইছরাক আলী জানান, বন্যায় রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ২০০টি বাড়ি ঘরের মানুষ পানিবন্দি আছেন। ৫০টি রাস্তাঘাট পানির নিচে রয়েছে। এছাড়া প্রায় শতাধিক ফিসারি তলিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ বেরিয়ে গেছে। পাইলগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মখলুছ মিয়া জানান, বন্যায় অত্র ইউনিয়নের প্রায় এক হাজার ঘর বাড়ির মানুষ পানিবন্দি আছেন। ১০টি রাস্তাঘাট তলিয়েছে এবং আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
কলকলিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তারা মিয়া জানান, বন্যার পানিতে শুধু পাড়ারগাঁও গ্রামের হাওরের অধিকাংশ জমির আমন ধান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। তাছাড়া অন্যন্য ইউনিয়নেও বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সেই সাথে টানা বৃষ্টিপাতে জগন্নাথপুর পৌর এলাকার বিভিন্ন রাস্তাঘাট ও উপজেলা পরিষদ চত্বরের রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। যদিও জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার জানান, বন্যায় উপজেলার অধিকাংশ হাওরের রোপা আমনের বীজতলা ও আমন ও আউশ ধান প্লাবিত হয়েছে।