জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিয়ে পরবর্তী সাক্ষাৎকারেও উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হতে গেলে জালিয়াতির অভিযোগে ২ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সোমবার দুপুরে সংশ্লিষ্ট বিভাগের তথ্য মারফত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদেরকে আটক করেন। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়ের করা মামলায় তাদেরকে আশুলিয়া থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়। আটককৃত এক ভর্তিচ্ছুর নাম নেয়ামুল হক রিমন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক অনুষদে (সি ইউনিট) ২৪তম স্থান লাভ করেন। সোমবার দুপুড়ে জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হতে আসলে বিভাগীয় সভাপতি উজ্জ্বল কুমার মন্ডল এবং সহকারী অধ্যাপক শেখ আদনান ফাহাদ তথ্য যাচাই বাছাই করতে গিয়ে তার হাতের লেখার অমিল পাওয়ায় আটক করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের হাতে সোপর্দ করেন। পরে প্রক্টর অফিসে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জালিয়াতির তথ্য প্রমাণ মেলে। রিমন বরিশালের বোয়ালিয়া থানার বাকেরগঞ্জ গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেনের ছেলে।

এ বিষয়ে কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মোজাম্মেল হক বলেন, সে অনুষদের সাক্ষাৎকার বোর্ডে ধরা না পড়লেও সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো তাদের হাতের লেখা যাচাই করলে উত্তরপত্রের সাথে লেখার অমিল পাওয়া যায়। আটককৃত অপরজন ভর্তিচ্ছুর নাম সীমান্ত দেবনাথ। তিনি নেত্রকোনা জেলার নকুল চন্দ্র দেবনাথের ছেলে। তিনি বিজনেস স্ট্যাডিজ অনুষদে (ই ইউনিট) ১১৬তম হয়ে মার্কেটিং বিভাগে ভর্তি হতে এসেছিলেন। ভর্তির সময় হাতের লেখা ও কথাবার্তায় অসঙ্গতি পেলে বাণিজ্যিক অনুষদের ডিন নিলাঞ্জন কুমার সাহা তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে সোপর্দ করেন। এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. তপন কুমার সাহা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জালিয়াতি সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হওয়ায় তাদেরকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এদিকে ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিয়েও পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্বরত শিক্ষকদের হাতে আটক না হয়ে পরবর্তী সাক্ষাৎকার বোর্ড থেকেও পার পেয়ে যাওয়ায় শিক্ষকদের দায়িত্বে অবহেলা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে কয়েকজন শিক্ষক জানান, ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্রে এবং পরবর্তী সাক্ষাৎকার বোর্ডে যেসব শিক্ষক ছিলেন তারা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেননি। যার কারণে জালিয়াতি করা শিক্ষার্থীগুলো ধরা পড়ে নি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি সুন্দরভাবে ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম পরিচালনার। সকল জালিয়াতকে ধরার জন্য আমরা সবাই সচেতনভাবে কাজ করেছি। আশা করছি কোনো জালিয়াত ভর্তি হতে পারবে না।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn