জালিয়াতির অপরাধে অপুকে শাস্তি পেতে হবে’
ঢালিউডের আলোচিত জুটি অপু বিশ্বাস-শাকিব খানের বিয়ের খবরই বিস্মিত করেছে চলচ্চিত্রপ্রেমীদের। এরপর থেকে বিস্ময়ের পর বিস্ময় উপহার দিচ্ছেন তারা। এতে এ দম্পতির মধ্যকার ভুল বোঝাবুঝি, পারস্পারিক অবিশ্বাস ও তিক্ততাও সবার সামনে এসেছে। এখন তাদের বিয়ের দেনমোহরের অঙ্ক নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে। এটাও অনেককে বিস্মিত করেছে। এ নিয়ে পরস্পরকে আইনি মোকাবেলার হুমকিও দিয়ে রেখেছেন তারা। শাকিব ও তার আইনজীবী বলছেন, কাবিননামায় দেনমোহর হিসেবে উল্লেখ রয়েছে ৭ লাখ ১ টাকা। আর অপুর দাবি, ১ কোটি ৭ লাখ টাকা। এ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে অপুর বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগও তুলেছেন শাকিব। শাকিব বলেন, অপু নতুন করে জালিয়াতির আশ্রয় নিতে যাচ্ছে। ৭ লাখ ১ টাকাকে সে উল্টো ১ কোটি ৭ লাখ টাকা বানাতে চাইছে।
এই জালিয়াতির অপরাধে তাকে আইনগতভাবে শাস্তি পেতে হবে। অনেক সেলেব্রেটির জীবনে বিচ্ছেদ এসেছে। আর এজন্য জল ঘোলা করেনি কেউ। আমিও চাই না অপু এমন কিছু করুক। আর আমার ছেলে বড় হয়ে বাবা ও মা সম্পর্কে খারাপ কোনো কথা জানুক এটাও আমি চাই না। অপু বলছেন, যদিও আমার কাছে কাবিননামার কোনো কপি নেই, তারপরও মনে পড়ছে কাবিননামায় ১ কোটি ৭ লাখ টাকাই উল্লেখ ছিল। আমাকে ডিভোর্স দিলে এই অঙ্কের টাকাই দিতে হবে। এ নিয়ে শাকিব খান বলেছেন, আমি আর কোনো ঝামেলার মধ্যে নেই। আইনই সব দেখবে। যার সঙ্গে মতের মিল হয় না, তার সঙ্গে কখনো এক ছাদের নিচে বসবাস করা যায় না। অনেক কষ্ট সহ্য করে ৯ বছর সংসার করেছি। সন্তানের সামনে যদি খুঁনসুটি লেগেই থাকে তাহলে তার মন-মানসিকতার ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। জয়ের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা ভেবেই সেপারেশনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।
শাকিব খানের ডিভোর্সের সিদ্ধান্তে অপু বলেছেন, শাকিবের সিদ্ধান্ত মেনে নিতাম যদি একই ধর্মের হতাম। আমাকে ও জোর করে ধর্মান্তরিত করেছে, বিয়ে করেছে। তাই তার এই অমানবিক সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নেব না। ডিভোর্সের বিষয়টি শুনে অবাক হয়েছি। কারণ গত মাসের ২৮ তারিখে সন্তান জয়কে নিয়ে শাকিবের বাসায় গিয়েছি। জয়কে শাকিবের কাছে রেখে দুদিনের জন্য গ্রামের বাড়ি বগুড়া গিয়েছি। শাকিবের মা, বাবাকে বলেছি আমি নামাজ, রোজা, হজ আদায় করব আর শাকিবের সঙ্গে সুখে সংসার করব। তারাও আমার কথায় সম্মত হয়েছিলেন। এরপর এমন কী ঘটনা ঘটল যে, সে আমাকে ডিভোর্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল? শাকিবের কাছ থেকে ডিভোর্স লেটার পাওয়ার পর অপু আরও বলেন, শাকিবের আপত্তির মুখে তিনবার অ্যাবরশন করাতে হয়েছে তাকে। জয় যখন গর্ভে আসে তখন অ্যাবরশন করানোর জন্য আমাকে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে পাঠায় শাকিব। সেখানকার চিকিৎসক জানান, যেহেতু আগে তিনবার অ্যাবরশন হয়েছে আর নতুন করে কনসেপ্টের সময় ৪ মাস হয়েছে, সেহেতু অ্যাবরশন করানো ঝুঁকিপূর্ণ। এরপর শাকিব আমাকে কলকাতা পাঠায় অ্যাবরশন করানোর জন্য। সেখানকার চিকিৎসকরাও অ্যাবরশন করতে অস্বীকার করেন। তখন আমি সন্তান জন্মদানের সিদ্ধান্ত নেই। আর এতেই শাকিব আমার ওপর খেপে যায়। তার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে অপু বলেন, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চাইছি। কারণ ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করার পর আজ আমাকে শাকিব তালাক দিতে চাইছে। আমি এখন কোথায় গিয়ে দাঁড়াব। আমার সম্প্রদায় তো এখন আমাকে আর স্বাভাবিকভাবে মেনে নেবে না। প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত সহনশীল ও সুবিবেচনাপ্রসূত মনের মানুষ। তার সহমর্মিতা অতুলনীয়। শাকিবের একরোখা সিদ্ধান্তে আমার জীবন এখন বিপন্ন। প্রধানমন্ত্রীর সদয় হস্তক্ষেপই এই দুর্বিষহ অবস্থা থেকে আমাকে মুক্ত করতে পারে। মানবাধিকার ও নারী সংগঠনগুলোকেও পাশে চান অপু। তিনি বলেন, সেলিব্রেটি হলেও আমার সামাজিক মর্যাদা রয়েছে। ডিভোর্সের মতো একটি ন্যক্কারজনক সিদ্ধান্ত কখনো মেনে নেওয়া যায় না। অপুর কথায়, সংসারে ঝগড়া, ঝামেলা থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তাই বলে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সে আমাকে ডিভোর্স লেটার পাঠাবে তা ভাবতেও আমার ঘৃণা হচ্ছে। এ শাকিব এমন একটি ন্যক্কারজনক কাজ করবে স্বপ্নেও ভাবিনি। তার এই অমানবিক সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নেব না। আমি স্বামী, সংসার দুটোই চাই। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত সমঝোতার মাধ্যমে সমাধানের পথ থাকবে ততক্ষণ আইনের দ্বারস্থ হব না। ভারতের হায়দরাবাদে থেকে শাকিব খান বলেন, আমি কেন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি দেশের মানুষের কাছে তা এখন পরিষ্কার। যদি তার সঙ্গে স্বেচ্ছাচারিতা করতাম বা খেয়াল-খুশি মতো তাকে ডিভোর্স দিতে চাইতাম তাহলে অনেক আগেই তা করতাম। অপুর বিষয়ে যা করার তা করে ফেলেছি। এখন আর এ বিষয় নিয়ে কোনো কথা বলতে চাই না।