জুলহাজ-তনয় হত্যা মামলার চার্জশিট:আট জন আসামি
সুনামগঞ্জ বার্তা ডেক্সঃ সমকামীদের অধিকার বিষয়ক ম্যাগাজিন রূপবান এর সম্পাদক জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব তনয়কে হত্যার ঘটনায় আট জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে তদন্ত সংস্থা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। রবিবার (১২ মে) ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম আদালতে চার্জশিট জমা দেন। চার্জশিটে যে আটজনকে আসামি করা হয়েছে তারা হচ্ছে মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন (২৫), আরাফাত রহমান (২৪), শেখ আব্দুল্লাহ (২৭), আসাদুল্লাহ (২৫), সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়া (চাকুরিচ্যুত মেজর) (৪২), আকরাম হোসেন, সাব্বিরুল হক চৌধুরী (২৬), ও জুনাইদ আহমদ ওরফে মওলানা জুনেদ আহম্মেদ ওরফে জুনায়েদ (২৬)। অভিযুক্ত আসামিদের মধ্যে চারজন এখনও পলাতক রয়েছে। কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার তৌহিদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সিটিটিসি সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল ৩৫ নম্বর উত্তর ধানমন্ডির নিজ বাসায় খুন হন জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব তনয়। এ ঘটনায় হত্যা ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা দায়ের হয়। প্রথমে থানা পুলিশ ও পরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে। ২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বর মামলাটির তদন্তভার স্থানান্তর করা হয় সিটিটিসির কাছে। সিটিটিসির কর্মকর্তারা জানান, তারা তদন্তভার গ্রহণ করার পর ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৪ জন আসামিকে গ্রেফতার করে। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং অন্যান্য সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে জানা যায়, ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিরা নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন আনসার আল ইসলামের বিভিন্ন পর্যায়ের সক্রিয় সদস্য। সংগঠনের নেতা সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কৃত মেজর সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়ার নির্দেশে সংগঠনের সামরিক শাখার সদস্যরা এই হত্যা মিশনে অংশ নেয়।
কর্মকর্তারা জানান, চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন আনসার আল ইসলামের মিডিয়া শাখার প্রধান ও ইন্টেলিজেন্স সদস্য। তার বাবার নাম আবু মোহাম্মদ হুসাইন। গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে। আরাফাত রহমান ছিল আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার সদস্য। তার বাবার নাম মোমিনুল হক, গ্রামের বাড়ি নীলফামারী। শেখ আব্দুল্লাহ ছিল ওই সংগঠনের ইন্টেলিজেন্স শাখার প্রধান। তার বাবার নাম ইরফান। গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামে। এছাড়া অভিযুক্ত অপর আসামি আসাদুল্লাহ সামরিক শাখার সদস্য। তার বাবার নাম এমদাদুল হক। গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে। এদের প্রত্যেকেই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
সিটিটিসি সূত্র জানায়, চার্জশিটে চার জন আসামিকে পলাতক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলো সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়া (চাকুরিচ্যুত মেজর), আকরাম হোসেন, সাব্বিরুল হক চৌধুরী ও মো. জুনাইদ আহমদ ওরফে মওলানা জুনেদ আহম্মেদ ওরফে জুনায়েদ। এর বাইরে এ ঘটনায় আরও পাঁচ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলেও পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় তাদের চার্জশিটভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে ভবিষ্যতে তাদের শনাক্ত বা গ্রেফতার করা গেলে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে বলে জানানো হয়। আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের পাশাপাশি তা অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিটিটিসির একজন কর্মকর্তা।