ডাকসু নির্বাচনে যেন রাত্রিকালীন অভিযান না হয়: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম
স্বাধীন বাংলাদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ- ডাকসু’র প্রথম নির্বাচিত ভিপি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম আশা ব্যক্ত করে বলেছেন, আসন্ন ১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচনে যেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো রাত্রিকালীন অভিযান না হয়। তিনি মনে করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্র-জনতার দীর্ঘদিনের দাবি মেনে অপরাধ মোচনের উদ্যোগ নিয়েছে। ডাকসু নির্বাচনের বিষয়ে বুধবার (২৩ জানুয়ারি) রাতে এক প্রতিক্রিয়ায় সেলিম এসব আশা ব্যক্ত করেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি ১৯৭২ সালে ডাকসু নির্বাচনে ভিপি নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ডাকসু এক গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করে। ডাকসুর তৎকালীন নেতাদের সাহসী ও বলিষ্ঠ উদ্যোগে ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় প্রথম স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়। বুধবার সন্ধ্যায় ডাকসু নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড .এস এম মাহফুজুর রহমান জানান, ১১ মার্চ সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদের নির্বাচনি গঠনতন্ত্রের ৮ (ই) ধারা অনুযায়ী ডাকসু’র সভাপতি হিসেবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান নির্বাচনের এই তারিখ ও সময় নির্ধারণ করেন। দীর্ঘ ২৮ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১১ মার্চ। নির্বাচনের ঘোষণায় ‘দীর্ঘদিনের অপরাধ মোচনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে’ বলে মনে করেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি বলেন, ‘বহুদিনের যে দাবি, তা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার অন্তত ঘোষণা এলো। কিন্তু এই নির্বাচন যেন রাত্রিকালীন নির্বাচন না হয়। বিগত জাতীয় নির্বাচনের মতো রাত্রিকালীন অভিযান, দখলদারিত্বের অভিযানে পরিণত না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।’
ডাকসু’র এই সাবেক ভিপি বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা হলগুলো দখলে রেখে যে দুর্গ বানিয়েছে, তা যেন কাজে লাগাতে না পারে। আবাসিক দখলদারদের খবরদারি মুক্ত নির্বাচন যেন হয়, সে ব্যবস্থা করতে হবে।’ রাজনীতিতে ডাকসু’র নতুন নির্বাচিতদের ভূমিকা কেমন হবে, এমন প্রশ্নে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘এটা তো ছাত্ররাই ঠিক করবে। সাধারণ ছাত্ররা যথেষ্ট দেশপ্রেমিক, প্রগতিবাদী এবং মুক্তিযুদ্ধের চার নীতিতে তারা বিশ্বাস করে, আমার ধারণা। আমার আস্থা আছে তাদের ওপর। তারা বিশ্ববিদ্যালয়কে সমাজতন্ত্র ও কারিগর গড়ার পাঠশালায় পরিণত করার যে সংগ্রাম, আমার সময় যে সূচনা হয়েছিল, সে পথে আবারও বিশ্ববিদ্যালয়কে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে।’ মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম আশা প্রকাশ করেন, ‘সে হিসেবে দেশবাসীকে সমাজতন্ত্র এবং প্রগতিমুখী ধারায় ফেরাবে ছাত্ররা। ধর্মনিরপেক্ষ এবং প্রকৃত গণতন্ত্রের ভিত্তিতে জাতিকে গড়ে তুলবে। সেই ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের যেন তাদের ভোটাধিকারের সুযোগ দেওয়া হয়।’
প্রসঙ্গত, ১৯২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুতে এর নাম ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাসু)।