ঢাবি সিনেটে ৬৬৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকার বাজেট পাশ
বাজেট উত্থাপনের সময় অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ও রেজিস্ট্রার মো. এনামউজ্জামানসহ অন্যান্য সিনেট সদস্যগণ।
উপাচার্যের অভিভাষণের পর ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের জন্য ৬৬৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকার রাজস্ব ব্যয় সংবলিত প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়। এবারের বাজেটে আয়ের উৎস হিসেবে দেখানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুদান ও নিজস্ব আয়। প্রস্তাবিত বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে প্রাপ্য ধরা হয়েছে ৬১০ কোটি ১০ লাখ টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় থেকে দেয়া হবে ৪২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। ফলে এবছর বাজেটে ১১ কোটি ৭২ লাখ টাকা ঘাটতি হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এছাড়া ইউজিসির নিয়মিত বাজেটের বাইরে গবেষণা মঞ্জুরি ও বিশেষ অনুদান হিসেবে ধরা হয়েছে আরো দুই কোটি টাকা। অধিবেশনে ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরের ৬৬৭কোটি ১৯ লাখ টাকার সংশোধিত বাজেটও উপস্থাপন করা হয়।
এবারও বাজেটের বড় একটি অংশ ব্যয় হবে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, পেনশনসহ বিভিন্ন খাতে। এ বছর ৪১৭ কোটি ৫৯ লাখ ২২ হাজার টাকা বেতন-ভাতার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা মোট বাজেটের ৬২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। গত বছর এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৪০৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে শিক্ষকদের বেতনের জন্য ১৩৬ কোটি ৫১ লাখ ৯৪ হাজার টাকা, কর্মকর্তাদের জন্য ৪৬ কোটি ৮৩ লাখ ৯৬ হাজার টাকা এবং কর্মচারীদের জন্য ৬২ কোটি এক লাখ ৫৬ হাজার টাকা।
অর্থাৎ তাদের বেতনের জন্য মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৪৫ কোটি ৪৬ লাখ ৪৬ হাজার টাকা, যা মোট বাজেটের ৩৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আর ভাতাদি (বাড়িভাড়া, চিকিৎসা, যাতায়াত, শ্রান্তি বিনোদন, বই ইত্যাদি) বাবদ মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৭২ কোটি ১২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা, যা মোট বাজেটের ২৫ দশমিক ৯১ শতাংশ। আর পেনশনের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১০৬ কোটি টাকা। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রমের জন্য মোট ব্যয় হবে ৭১ কোটি ৭৭ লাখ পাঁচ হাজার টাকা। একাডেমিক কার্যক্রমের মধ্যে-
০১. পরীক্ষা সংক্রান্ত ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। যা গত বছর ছিল ২৩ কোটি টাকা।
০২. লাইব্রেরি পুস্তক ক্রয় খাতে বেড়েছে ৪৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। গত বছর এ খাতে বরাদ্দ ছিল এক কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এ বছর বরাদ্দ রাখা হয়েছে দুই কোটি ৩১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
০৩. বুকস অ্যান্ড জার্নাল (বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশন) খাতে এ বছর ১ কোটি ১২ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গত বছর এ খাত বাজেট ছিল ৯৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
০৪. কেমিক্যালস ও ইকুইপমেন্টস ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি বাবদ বরাদ্দ হয়েছে নয় কোটি টাকা। গত বছর ছিল আট কোটি ৫০ লাখ টাকা।
০৫. মূলধন খাতে বরাদ্দ ১৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা। গত বছর এ খাতে বাজেট ছিল তিন কোটি ২৫ লাখ।
০৬. ২০১৭-১৮ অর্থবছরে গবেষণা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৪ কোটি টাকা।
০৭. শিক্ষাসফর, সেমিনার ও কনফারেন্স, শিক্ষক প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা (যেমন ইন্টারনেট, শিক্ষা উপকরণ, বৃত্তি, বিভাগীয় খেলাধুলা, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্রীড়া, ছাত্রকল্যাণ ইত্যাদি) এবং ছাত্র পরিবহন সুবিধা বাবদ বরাদ্ধ ২১ কোটি তিন লাখ ৫৭ হাজার টাকা।
পুরনো যন্ত্রপাতি ও আসবাব মেরামতের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এছাড়া ৪৭ কোটি ৩১ লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয় হবে সাধারণ ও বিবিধ কার্যক্রম পরিচালনায়। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৬৬৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাজেটের পরিমাণ ছিল ৬৬৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাজেটের পরিমাণ ছিল প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। ২০১৪-১৫ অর্থবছর তা ছিল ৪২৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ছিল ৩১৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।