তারেককে ফেরাতে বৃটেনকে চিঠি দেয়া হয়েছে-পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, তারেক রহমানকে দেশে ফেরত আনার জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বৃটেনের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে বৃটিশ সরকার বরাবর একাধিক চিঠিও পাঠানো হয়েছে। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ওআইসি’র আসন্ন সম্মেলন প্রস্তুতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি জানান- এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত আছে। বৃটিশ সরকারের পক্ষ থেকে চিঠিগুলোর জবাব আসার পর সরকার পরবর্তী কর্মপন্থা ঠিক করবে। উল্লেখ্য, বিভিন্ন মামলা মাথায় নিয়ে বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে বসবাস করছেন। সরকার যেকোনো মূল্যে তাকে ফেরাতে চায়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে- তারেক রহমানকে ফেরাতে বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনসহ বৃটেনের বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক চিঠি পাঠিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখানে তার দণ্ডাদেশ পাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে তাকে দ্রুত দেশে ফেরত পাঠিয়ে বিচারের পথ প্রশস্ত করতে বৃটিশ সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ তাগিদ অব্যাহত থাকবে জানিয়ে মন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেন- বৃটিশ হোম অফিস আমাদের একটি চিঠির জবাব দিয়েছে। গত মাসে লন্ডনে আওয়ামী লীগের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘যেভাবেই হোক’ তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আদালতের মুখোমুখি করার ঘোষণা দেন। বুধবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে তিনি বলেন, “এই সাজাপ্রাপ্ত আসামি বিদেশের মাটিতে। আবার বিদেশের মাটিতে বসে প্রতিদিন সে আন্দোলন করে। বৃটিশ সরকারের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। তার সম্পর্কে আলোচনা করছি।” যে পাসপোর্ট নিয়ে তারেক লন্ডন গিয়েছিলেন, তার মেয়াদ ২০১৩ সালে ফুরিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম গত ২৩শে এপ্রিল বলেছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছেলে তার পাসপোর্ট বৃটিশ হোম অফিসের কাছে ‘সারেন্ডার’ করেছেন। এর মধ্য দিয়ে তারেক বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় ভুলে ভরা বৃটিশ হোম অফিসের এ সংক্রান্ত একটি চিঠিও প্রদর্শন করেন তিনি। প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৪শে এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে বলেন- তারেক রহমান বৃটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন। ফখরুল স্পষ্ট করেন- তারেক মোটেও নাগরিকত্ব ত্যাগ করেননি। বৃটেনের আইন অনুযায়ী তিনি পাসপোর্ট জমা দিয়েছেন রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার জন্য। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সে সময় বলেন ‘মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিটেন্স অ্যাক্টের’ আওতায় তারেক রহমানকে দেশে ফেরানোর চেষ্টায় রয়েছে সরকার। অবশ্য পেশাদার কূটনীতিকরা বলছেন, বৃটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ায় তারেক রহমানের ফেরানোর বিষয়টি ঢাকার জন্য খুব সহজ হবে না।