তাহিরপুর :: তাহিরপুর সীমান্তের চানপুর, রজনী লাইন, রাজাই এলাকার (ভারতীয় অংশে) সম্প্রতি হঠাৎ করে ভারতীয় বন্যাহাতির উৎপাত দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে।  গত কয়েকদিন ধরে ভারতের কালাপাহাড় থেকে চানপুর সীমান্তে দল বেঁধে বন্যহাতির দল ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাংলাদেশ সীমান্তে নেমে এসব হাতি তান্ডব শুরু করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী লোকজন।  তারা জানান, গত এক মাস ধরে কালাপাহাড় সীমান্তে ভারতের অংশে একদল বন্যহাতি উৎপাত শুরু করে। এতে ভারতীয় অংশের রাজাই গ্রামের আদিবসাী এবং কালাপাহাড়ে গারো আদিবাসীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।  সীমান্তবাসী জানায়, গত ১০ অক্টোবর চানপুর সীমান্তের কালাপাহাড়ে ভারতীয় অংশে গারো আদিবাসীদের ৫টি ঘর গুড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় বন্য হাতির একটি দল। যে কোন সময় বাংলাদেশ সীমান্তে নেমে তান্ডব শুরু করতে পারে বলে সীমান্তবাসীরা আতঙ্ক প্রকাশ করেছেন। চানপুর গ্রামবাসী এসব হাতির তান্ডব দেখেছেন বলেও জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
সূত্রে জানায়, বন্যহাতির উৎপাতে ভারতীয় অংশের রাজাই গ্রামবাসী বিএসএসফ, ভারতীয় পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে অবগত করার পর তাদেরকে হাত বোমা দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া ভারতীয় পুলিশ বন্যহাতি তাড়াতে ফাঁকা ফায়ারিংও করে। ফায়ারিংয়ের পর বন্যহাতির দল আরো বেশি উৎপাত শুরু করেছে। আর বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া কালা পাহাড়ে গারো আদিবাসীদের ৫টি বসতবাড়ি গুড়িয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা ভারতীয় অংশে রবিবার সন্ধ্যায় একদল বন্য হাতি তান্ডব চালিয়েছে বলে সীমান্তে বসবাসকারী লোকজন জানিয়েছেন। তারা হাতির বিকট হুঙ্কারে আতঙ্কিত। সীমান্তের রাজাই গ্রামের আদিবাসী নেতা এন্ডু সলোমার বলেন, আমি ভারতের রাজাই গ্রামের পরিচিতদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি গত ২০ দিন ধরে বন্য হাতির উৎপাত চলছে। আমরা সীমান্ত থেকে উন্মাদ এসব বন্যহাতিদের তান্ডব দেখেছি। ভারতের কালাপাহাড়ে (বাংলাদেশের চানপুর সংলগ্ন) গারো আদিবাসীদের কয়েকটি বসতঘর গুড়িয়ে দিয়েছে। ভারতীয় বিএসএফ এসব বন্য হাতি তাড়াতে ফায়ারিংও করেছে।  তিনি আরও বলেন, যে কোন সময় বাংলাদেশ সীমান্তে নেমে আসতে পারে এসব বন্য হাতির দল। তখন বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই আমরা উপজেলা চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবগত করেছি।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, তাহিরপুর সীমান্তে বসবাসকারীরা ভারতীয় বন্য হাতির আতঙ্কের কথা জানিয়েছেন। আমি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছি। সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্ণেল মাকসুদুল আলম এ বিষয়ে বলেন, সুনামগঞ্জ সীমান্তে হাতির তান্ডব খুব কম। এরপরও গ্রামবাসীকে সর্তক্য থাকতে হবে এবং রাতে হাতে মশাল নিয়ে গ্রুপ করে গ্রামের লোকজনকে পাহারা দিতে হবে।  তিনি বলেন, হাতি যে রাস্তা দিয়ে যাবে তাকে বাধা দেয়া যাবেনা। বাধা দিলে সে তান্ডব চালাতে পারে, তাই সবাইকে সর্তক্য থাকার পরামর্শ দেন তিনি।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn