এম.এ রাজ্জাক:: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তের তিন শুল্কষ্টেশন দিয়ে মঙ্গলবার বিকাল থেকে ফের কয়লা আমদানী শুরু হয়েছে। চলবে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত। গত ১০ মে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট উত্তোলিত অবশিষ্ট কয়লা রপ্তানী করতে ৩১ মে পর্যন্ত সময় দিয়ে আদেশ জারি করেন। এরই পরিপেক্ষিতে তিন শুল্কষ্টেশন মঙ্গলবার বিকাল থেকে উত্তেলিত কয়লা আমদানী শুরু হয়েছে। সূত্র জানায়, ভারতের মেঘালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন ডিমাহাসাও জেলা ছাত্র ইউনিয়নের আবেদনের ভিত্তিতে ২০১৪ সালের ১৭ এপ্রিল ন্যাশনাল গ্রীণ ট্রাইব্যুনাল (এনজিটি) মেঘালয় সরকার অবৈধ কয়লা খনন ও পরিবহন বন্ধের নির্দেশ দেন। একই বছরের ৬ মে সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিভাগীয় মূখ্যসচিব এ ব্যাপারে প্রতিটি জেলায় নির্দেশ জারি করেন। গ্রীণ ট্রাইব্যুনালের এই নির্দেশ কার্যকর করতে বলা হয় মেঘালয়ের জেলা প্রশাসকদের।  এ কারণে ২০১৪ ইংরেজির ১৩ মে থেকে মেঘালয়ের সীমান্ত জেলাগুলোয় ১৪৪ ধারা জারি করে কয়লা পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এরপর থেকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেরার বড়ছড়া-চারাগাঁও, বাগলী শুল্কষ্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানী বন্ধ হয়ে যায়। রপ্তানীকারকরা আইনী লড়াই করে প্রথমে উত্তোলিত কয়লার রাজস্ব জমা দিয়ে ২০১৫ সালের তিন মাস (এপ্রিল, মে ও জুন) রপ্তানীর সুযোগ পান। পরে এই সময় ৫ দফায় বাড়িয়ে গত প্রায় ৫ বছরে ২১ মাস উত্তোলিত কয়লা রপ্তানী করা হয়।
গত বছরের ৪ ডিসেম্বর আবার ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত উত্তোলিত কয়লা রপ্তানীর করার সুযোগ দেয়। হঠাৎ এই সুযোগ কোন প্রকার নোটিশ বা চিঠি ছাড়াই চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি বন্ধ করে দেওয়া হয়। হঠাৎ বন্ধের পর রপ্তানীকারকরা আবার আইনী লড়াই শুরু করেন। সর্বশেষ গত ১০ মে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ৩১ মে পর্যন্ত উত্তোলিত অবশিষ্ট কয়লা রপ্তানী’র সুযোগ দেয়। তাহিরপুর কয়লা আমদানী কারক গ্রুপের সদস্য ফারুক ও কদ্দুস জানান, তারাসহ কয়লা আমদানী কারকরা এই বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত উত্তোলিত কয়লা আমদানী হবে জেনে এলসি করেছেন। অথচ ১৫ জানুয়ারি হঠাৎ করেই রপ্তানী বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ কারণে আমদানী কারকদের কোটি কোটি টাকা মেঘালয়ের রপ্তানী কারকদের কাছে আটকা পড়েছে। এবার আবার ৩১ মে পর্যন্ত কয়লা আমদানী হবে। এই সময়ে আমদানীকারকরা রপ্তানী কারকদের কাছ তাদের আগের দেওয়া এলসি’র বিপরীতে কয়লা আনতে পারলে ভালো হবে।  তাহিরপুর কয়লা আমদানী কারক গ্রুপের সচিব রাজেশ তালুকদার জানান, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট উত্তোলিত কয়লার অবশিষ্টাংশ রপ্তানী করতে ৩১ মে পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন। গত ১০ মে এই আদেশ হয়। কিন্তু সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতেই ১০ দিন চলে গেছে। আগামী ১১ দিন কয়লা আমদানী হবে বলে আশা করছি। তাহিরপুর কয়লা আমদানীকারক গ্রুপের সভাপতি আলকাছ উদ্দিন খন্দকার বলেন, মঙ্গলবার কয়লা আমদানী শুরু হওয়ায় কেবল আমদানীকারকরা নয়, সীমান্তের এই তিন শুল্কষ্টেশনের কর্মরত হাজার হাজার শ্রমিকের মধ্যেও স্বস্তি ফিরেছে। সামনে ঈদ, এই সময়ে আমদানী কার্যক্রম শুরু হওয়া জরুরি ছিল। আমরা চাই সারা বছরই কয়লা আমদানী অব্যাহত থাকুক।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn