তিন সন্তানসহ আত্মসমর্পণ করলেন ‘জঙ্গি’ খাদিজা
যশোরে ঘিরে রাখা বাড়ি থেকে অবশেষে সন্দেহভাজন জঙ্গি খাদিজা বেরিয়ে এসেছেন। সঙ্গে রয়েছে তিন সন্তান। বর্তমানে তাঁরা পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। এখন বাড়িটির যে ফ্ল্যাটে ছিল থাকতেন, সেই ভবনে তল্লাশি চালাচ্ছে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল। কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজমল হুদা বলেন, দুপুর ১২টার দিকে খাদিজা শর্ত দেন, তাঁর বাবা-মাকে আনা হলে তিনি আত্মসমর্পণ করবেন। সেই অনুযায়ী তাঁর বাবা-মাকে পাবনা থেকে আনা হয়। তাঁদের ওই বাড়িতে হাজির করা হলে বেলা ৩টা ৫ মিনিটে খাদিজা তাঁর তিন সন্তানকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। তবে তাঁর স্বামী মশিউর রহমানকে পাওয়া যায়নি। বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের তল্লাশি চলছে। অভিযান শেষে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান।
রোববার রাত দুইটা থেকে যশোর শহরের ঘোপ নোয়াপাড়া সড়কের ওই বাড়ি ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল, সোয়াট, বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ও যশোর পুলিশের একটি দল সম্মিলিতভাবে এ অভিযানে অংশ নেয়। পুলিশ শুরু থেকেই ধারণা করছিল, কুষ্টিয়ার জঙ্গি মারজানের বোন খাদিজা তাঁর পরিবারের লোকজন নিয়ে ওই বাড়ির একটি ফ্ল্যাটের ভেতরে আছেন। তাঁদের আত্মসমর্পণ করতে কিছুক্ষণ পরপর পুলিশ মাইকে আহ্বান জানায়।
পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন গুলশানের হোলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার সঙ্গে জড়িত জঙ্গি নুরুল ইসলাম মারজান। এ ব্যাপারে যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান দুপুর ১২টার দিকে বাড়িটির সামনে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেছেন। তিনি বলেন, ‘চারতলা ভবনটির দ্বিতীয় তলার একটি ইউনিটে জঙ্গিরা অবস্থান নিয়েছে। অন্যান্য ফ্ল্যাটে যে পরিবারগুলো ছিল, তাদের নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে।’ পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বাড়িটির মালিক হায়দার আলী যশোর জিলা স্কুলের শিক্ষক। তিনি বাড়িটিতে থাকেন না। মশিউর রহমান নামের এক ব্যক্তি দেড় বছর আগে এই বাসার দোতলার এই ইউনিট ভাড়া নেন। খাদিজার স্বামী তিনি। একটি হারবাল ওষুধ কোম্পানিতে তিনি চাকরি করেন। বাড়ির মালিক হায়দার আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বাড়িটি তাঁর স্ত্রী ইসমত আরার নামে। তবে তাঁরা কেউ এখানে থাকেন না। মশিউর রহমান নামের একজনকে তাঁরা বাড়িটি ভাড়া দিয়েছেন। পুলিশ মশিউরকে সন্দেহ করেই বাড়িটি ঘিরে রেখেছে। এদিকে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়িটি থেকে দেড় শ গজ পর্যন্ত পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে। আশপাশের এলাকায় কোনো দোকানপাট আজ খুলতে দেওয়া হয়নি। তবে উৎসুক লোকজন ব্যারিকেডের সামনে এসে জড়ো হচ্ছে।