দুই কবির দুটি কবিতা
কবিতার দামে
সুলতানা রাজিয়া আছমা-
-কবি প্রিয় ,
তুমি কি আমায় সত্যিই ভালোবাসো?
সত্যিই কি তুমি আমায় হৃদয়ে রাখো?
যদি বলি, তোমার মনটা লিখে দাও আজন্মের মতো ,
পারবে কি দিতে? কার্পণ্য করবে নাতো!
প্রিয় কবি,
ভয় পেওনা , আমি ন্যায্য দামে কিনবো ,
তোমার কবিত্বের অমূল্য হৃদয় জমি,
তোমাকে একটু ও ঠকাবো না আমি !
একশো একটি নীল পদ্ম দেব তোমায় ,
পৃথিবীর তাবৎ টকটকে লাল গোলাপ ,
লুটায়ে পরবে তোমার চরণ ধুলায় ।
বকুল ফুলের মালা দেব গলে পরিয়ে ,
সারা অঙ্গে দেব চুয়া-চন্দন মাখিয়ে ।
নিয়ে যাব ফাগুনের আগুন রাঙা পলাশ শিমুল বনে ,
শিহরিত হবে মহুয়ার মাতাল বাসন্তী সমীরণে ।
রংধনুর সাত রঙে তোমায় দেব সাজিয়ে ,
তবুও কি আমায় নেবে না বুকে জড়িয়ে ?
প্রাণের কবি আমার,
যদি তোমার নামে লিখে দিই ,
রাধা কৃষ্ণের মথুরা বৃন্দাবন ,
চন্ডীদাস রজকীনির নানুরের বীরভূম,
লাইলি মজনুর আরব্য মরু ,
রোমিও জুলিয়েটের ইতালির ভেরোনা শহর ,
তবুও হবে না আমার ?
ঠিক আছে প্রেমের কবি,
এবার তবে লিখে দেব তোমার নামে ,
আমার স্বপ্নালু মস্তিষ্ক থেকে নির্গত ,
হৃদয় পান্ডুলিপিতে লিখা ,
একশো একটি প্রেমের কবিতা !
খুশি হয়েছ কি তুমি ?
এবার দলিল করে দাও তোমাকে আমায়,
আমার হৃদ পান্ডুলিপির সাদা পাতায়!
কবিদের কিনতে হয় কবিতার দামে ,
জগতের সব ঐশ্বর্য কবিরা তুচ্ছ জানে ।
আজ থেকে সবাইকে জানিয়ে দেব ,
আমার কবিকে আমি কিনে নিলাম ,
একশো একটি প্রেমের কবিতার দামে!
‘নিভৃতে দাম্পত্য কথন’
কোহিনূর বেগম-
—তুমিতো ভালোই জানো
আমি কতোটা সংকীর্ণ
তোমার যশে আমি লাভবান,
তাতেই আজ পূর্ণ।
আমার অতীত ইতিবৃত্ত
ধোঁয়াটে অন্ধকার
তোমার আলোয় দিয়ে যাচ্ছি
জীবন পারাবার।
আমি কুটিল নিষিদ্ধ যজ্ঞ
তোমায় কুপোকাত করেছি
স্বজন সম্মন্ধ ছিন্ন করে
কারারুদ্ধ রেখেছি।
তোমার সিড়ি বেয়ে
আমার, উপরে উঠা
তারপরও আমি কৃতঘ্ন
কারন,আমার স্বভাবই এটা।
আমি জানি, তোমার দৃষ্টিতে
আমি নন্দিত নই
তথাপি,আমার কুৎসিত সান্নিধ্য
তোমাকে সইতে হবেই।
আমি কেমন! অনেকেই
তা ভুল জানে,
এই কদর্য রূপটা শুধু
তুমি আর তোমার স্বজন জানে।
সবাই বলে আমি নাকি
ভালো মন্দ পরখ করি
আসলে কি তাই? প্রতিদিন
কতো শুদ্ধকে ভুল দিয়ে গড়ি।