দুই দিন ভোগানোর পর যান চলাচল শুরু
bartaadmin
মার্চ ১, ২০১৭
দুই দিন ভোগানোর পর যান চলাচল শুরু২০১৭-০৩-০১T১১:৩০:২২+০০:০০
জাতীয়, সমগ্র দেশ, সর্বশেষ
সারা দেশে দুই দিন ধরে পরিবহন ধর্মঘটে ব্যাপক জনভোগান্তির পর ধর্মঘট উঠিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু করেছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান বুধবার দুপুরে সরকারের ‘আশ্বাস পাওয়ার কথা’ জানিয়ে পরিবহন মালিক শ্রমিকদের যানবাহন চলাচল শুরুর আহ্বান জানালে মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাস ছাড়তে দেখা যায়।
গাবতলী থেকেও বাস ছাড়া শুরু হয়েছে বলে জানান হানিফ পরিবহনের ব্যবস্থাপক আলমাস আলম। তিনি বলেন, “শ্রমিক নেতারা আমাদের ফোন করে বলেছে গাড়ি ছাড়া যেতে পারে। এজন্য গাড়ি ছাড়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি।”এদিকে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা আসার পরও বিকাল ৩টার দিকে গাবতলী বাস টার্মিনালের সামনে একদল শ্রমিককে রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করতে দেখা যায়। পরে পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা তাদের সরিয়ে রাস্তা খালি করে দেয়।টার্মিনাল এলাকার প্রায় সবগুলো কাউন্টার এরপর খুলে দেওয়া হয়, শুরু হয় যাত্রী উঠানোর হাঁকডাক। সাড়ে ৩টার দিকে দুয়েকটি বাসকে যাত্রী উঠিয়ে টার্মিনাল ছেড়ে যেতে দেখা যায়।এ সময় টার্মিনালের কেন্দ্রীয় মাইক ও পুলিশের এপিসি থেকে কর্মবিরতি প্রত্যাহার এবং রাস্তায় কোনো ঝামেলা নেই বলে ঘোষণা দেওয়া হয় বারবার।
ঢাকা জেলা যানবাহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্বাস উদ্দিন সেখানে সাংবাদিকদের বলেন, “আইনি লড়াইয়ে যেতে চাই আমরা। চালকদের সাজার বিষয়ে আইনি সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস পাওয়ায় আমরা কর্মবিরতি তুলে নিয়েছি।”ঢাকা জেলা বাস মিনিবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ সদু বলেন, শ্রমিক নেতারা চালকদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন। এ কারণে শ্রমিকরা বাস চালাতে রাজি হয়েছেন।“আমাদের শ্রমিক নেতারা কর্মবিরতির বিষয়ে আইনের মাধ্যমে সমাধানের ব্যাপার আমাদের আশস্ত করেছেন। আমরাও এখন চাই, আইনের মাধ্যমে এর সমাধান হোক। আমরা শ্রমিকদের এটা বোঝাতে সক্ষম হয়েছি, যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।”দুই চালকের সাজার রায়ের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে সারা দেশে পরিবহন শ্রমিকদের এই ধর্মঘট শুরু হলে দুই দিনে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে। গাবতলীতে শ্রমিকরা পুলিশের সংঘর্ষেও জড়ায়।এই প্রেক্ষাপটে বুধবার সকালে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার দপ্তরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়ত উল্লাহকে নিয়ে বৈঠক করেন।
এরপর দুপুরে শাহজাহান খান, রাঙ্গা ও এনায়ত উল্লাহ মতিঝিলে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি কার্যালয়ে গিয়ে মালিক-শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন।বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে নৌমন্ত্রী বলেন, “এখন থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য মালিক ও শ্রমিক ভাইদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। আশা করছি, সারাদেশে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হবে।”শাজাহান খান দেশের শ্রমিক সংগঠনগুলোর শীর্ষ ফোরাম বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি। আর প্রতিমন্ত্রী রাঙ্গা বাস ও ট্রাকমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি।ওই সংবাদ সম্মেলনের পর দুদিন ধরে টার্মিনালে দাঁড়িয়ে থাকা দূর পাল্লার বাসের চাকা সচল হতে শুরু করে। টার্মিনালগুলোতে ডাকাডাকি করে যাত্রী তুলতে দেখা যায় চালকের সহকারীদের।এদিকে মন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের পরপরই হাই কোর্ট এক রিট আবেদনের শুনানি করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সারাদেশে স্বাভাবিক যান চলাচল নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হরতাল, অবরোধ বা ধর্মঘট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং যারা আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে ধর্মঘট ডাকবে, তাদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাই কোর্ট।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১০৫ বার