ধর্মপাশায় ডিলারের বিরুদ্ধে ওএমএস’র চাল আত্মসাতের অভিযোগ
ধর্মপাশা উপজেলা সদর ইউনিয়নের ওএমএস ডিলার তরিকুল ইসলাম পলাশের বিরুদ্ধে গত আগাম বন্যায় এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে খোলা বাজারে ১ মেট্রিক টন চাল বিক্রি না করে তা তিনি কালো বাজারে বিক্রি করে আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই ইউনিয়নের দেওলা গ্রামের মো. সালা উদ্দিন, আবুল কাশেম ও একই ইউনিয়নের মহদীপুর গ্রামের মো. তরিকুল ইসলাম নামে তিন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে দায়ের করেছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, গত আগাম বন্যায় বছরের একমাত্র বোরো ফসল তলিয়ে যাওয়ার পর সরকারীভাবে উপজেলা সদর ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য ১৫ টাকা দরে খোলা বাজারে চাল বিক্রির জন্য আব্দুস ছাত্তার ও তরিকুল ইসলাম পলাশ নামে দুই জনকে ওএমএস’র ডিলার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় । তারা প্রত্যেকেই প্রতিদিন ২শত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবারের মাঝে ১৫ টাকা দরে জন প্রতি ৫ কেজি করে চাল দেয়ার কথা। কিন্তু ওই ইউনিয়নের ওএমএস ডিলার তরিকুল ইসলাম পলাশ গত ১৫ আগষ্ট তারিখের কৃষকদের জন্য বরাদ্দকৃত ১ মেট্রিক টন চাল উত্তোলণ করে তিনি তা ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরন না করে কালো বাজারে বিক্রি করে আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগকারী দেওলা গ্রামের বাসিন্দা ও ধর্মপাশা সদর ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি মো.সালাউদ্দিন সাংবাদিকদেরকে জানান, ওএমএস ডিলার তরিকুল ইসলাম পলাশ চলতি মাসের ১৫ তারিখের জন্য বরাদ্ধকৃত ১ মেট্রিক টন চাল উত্তোলন করে তিনি তা কালো বাজারে বিক্রি করে দিয়েছেন। এছাড়াও ডিলার পলাশ চাল বিক্রির শুরু থেকেই ওজনেও কম দিয়ে আসছেন।
অভিযুক্ত ডিলার তরিকুল ইসলাম পলাশ কালো বাজারে চাল বিক্রির বিষয়টি অস্বিকার করে বলেন,উপজেলা খাদ্য গোদাম কর্মকর্তার নির্দেশেই আমি ১৫ তারিখের চাল খোলা বাজারে বিক্রি করিনি। তবে ওই চাল আমার গুদামে ষ্টক আছে এবং কর্তৃপক্ষের পরবর্তী নির্দেশক্রমেই উক্ত চাল খোলা বাজারে বিক্রি করা হবে।
ওই ডিলারের চাল বিক্রির দায়িত্বে থাকা তদারকি কর্মকর্তা কান্দাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রমেশ চন্দ্র পাল বলেন, ১৫ আগষ্ট আমি আমার বিদ্যালয়ে সরকারি প্রোগ্রাম নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। কিন্তু ডিলার তরিকুল ইসলাম পলাশ ওই দিন বিকেলে চাল সঠিকভাবে বিতরন করেছেন বলে তিনি আমার নিকট থেকে মাস্টাররুলে স্বাক্ষর নিয়েছেন।
উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই ওই দিনের চাল খোলা বাজারে বিক্রি করা বন্ধ রাখা হয়। পরবর্তীতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ওই দিন সকাল ১১টার দিকে আবার ওই চাল বিক্রি করার জন্য পূনঃরায় আমাদের কাছে নির্দেশনা আসে। তাই ডিলার তরিগরি করে ওইদিনের চাল বিক্রি করতে পারেননি। তবে উক্ত চাল ডিলারের গুদামে স্টকে আছে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে ওই চাল পরবর্তীতে খোলা বাজারে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মামুন খন্দকার অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।