নিজস্ব প্রতিবেদক।।

জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি অ্যাড. নূরজাহান বেগম মুক্তা বলেছেন, নাকে খত দিয়ে পাকিস্তাুনিদেরকেও গণহত্যা দিবস পালন করতে হবে। ২৫ মার্চকে জাতীয় গণহত্যা দিবসকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি আদায় করতে পারলেই আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবসের মতো পাকিস্তানিদেরও নাকে খত দিয়ে দিবসটি পালন করতে হবে। এছাড়া, আজকের বাংলাদেশ দু’টি ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। একটি হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, অন্যটি হচ্ছে সাম্প্রদায়িক ও ধর্মভিক্তিক রাজনৈতিক শক্তি।

শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদে দেয়া বক্তব্যে নূরজাহান বেগম মুক্তা এসব বলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে তিনি বলেন, জাতি হিসেবে সৌভাগ্যবান যে আমাদের বিজয় দিবস আছে। পৃথিবীর বহু দেশের শুধু স্বাধীনতা দিবস রয়েছে। কিন্তু তাদের বিজয় দিবস নাই। আমাদের দু’টো দিবস থাকায় সত্যি আমরা সৌভাগ্যবান। তিনি আরো বলেন, কিন্তু পরিতাপের বিষয় ৭৫ এর ১৫ আগস্ট কালো রাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবার পরিজনসহ হত্যার  এ দেশে আইয়ামে জাহেলিয়ার যুগ শুরু হয়। সেখান থেকে আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে  এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এটা অনেকের সহ্য হচ্ছে না।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৪৫ বছরে দেশের মধ্যে সাড়ে ২৮ বছর মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীরা ক্ষমতায় ছিল। পুরো সময়টাতেই তারা দেশকে পিছিয়ে রাখার ষড়যন্ত্র করে কাটিয়েছে। বাকি সময়টাতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়েছে এবং নিচ্ছে। অন্যরা দেশকে পিছিয়ে নিয়েছে এবং নানামুখী ষড়যন্ত্র করে গেছে নিরন্তর।  ফলে, আজকের বাংলাদেশ দু’টি ধারায় বিভক্ত। একটি হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। এই শক্তির ধারক ও বাহক আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর সাম্প্রদায়িক ও ধর্মভিক্তিক রাজনৈতিক শক্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত শুধু পাকিস্তানীরাই করছে না। তাদের এদেশীয় দোসররা যারা মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী তারাও প্রতিনিয়তই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার মতো ঘৃণ্য কাজটি করছে।

মুক্তা বলেন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর রাজাকার শিরোমনি গোলাম আজম পূর্ব পাকিন্তান পূণরুদ্ধার কমিটি গঠন করেছিল। তার এজেন্ডা এখনো বাস্তবায়ন করতে চায় বাংলাদেশের কয়েকটি মহল। একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা বলেছিল, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র আসল নাম- বেলুচিস্তান ন্যাশনালিস্ট পার্টি। তখনও বিএনপি এর প্রতিবাদ করেনি, কারণ দলটি মনেপ্রাণে এখনো পাকিস্তানকে বিশ্বাস করে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নসাৎ করতে তারা এখনো সক্রিয়। আমরা মনে করি, ১৯৫ জন পাকিস্তানী রাজকারের বিচার এ সরকারে আমলেই শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা করবেন এটাই আমাদের বিশ্বাস। ২৫ মার্চকে আন্তজার্তিক গণহত্যা দিবস করা হলে হলে নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস পরিষ্কার হয়ে যাবে। এছাড়া, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভুল প্রপাগান্ডা বন্ধ হবে এবং পাকিস্তানিদের নৃশংতার প্রকাশ পাবে। বক্তব্যের শেষদিকে নূরজাহান বেগম মুক্তা বলেন, এদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করার মূল কারণ অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করা। তাদের কোনো অপচেষ্টাই কাজে আসবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং আরো এগিয়ে যাবে।

উল্লেখ্য, শনিবার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরোচিত সেই কালো রাত্রি ২৫ মার্চকে জাতীয় গণহত্যা দিবসের প্রস্তাব সংসদে উত্থাপন করা হয়। প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) একাংশের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার।
পরে ২৫ মার্চকে জাতীয় গণহত্যা দিবস ঘোষণা সংক্রান্ত আলোচনা শুরু হয়।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn