‘নিউইয়র্কের ইস্ট রিভারে ভাসমান জাহাজে এক খণ্ড বাংলাদেশ’
প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী এবং সাংবাদিকদের সম্মানে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হলো ভিন্নধর্মী এক ‘নৌ-ভ্রমণ’। আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব (এবিপিসি) আয়োজিত এ নৌ-ভ্রমণে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চলমান উন্নয়ন-কার্যক্রমের ওপর একটি সেমিনার পুরো আয়োজনকে প্রাণময় করে তোলে।স্থানীয় সময় শনিবার সকাল থেকে অপরাহ্ণ পর্যন্ত ক্লাবের সদস্যরা এবং প্রবাসের বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার প্রতিনিধিত্বকারীরা সপরিবারে অংশগ্রহণ করেন। জাতিসংঘের চলতি ৭২তম অধিবেশনের সংবাদ কভার করতে বাংলাদেশ থেকে আসা সাংবাদিকরাও ছিলেন এ আয়োজনে। উল্লেখ্য, ২২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্ক থেকে ভার্জিনিয়ায় চলে গেছেন। সেখানে তিনি তার ছেলে, পুত্রবধূ এবং নাতনীদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন।
চমৎকার আবহাওয়ায় ইস্ট রিভারের এ নৌ-ভ্রমণে সকলকে স্বাগত জানান ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম এবং সহ-সভাপতি মীর শিবলী। বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে আগ্রহী তিন শতাধিক প্রবাসীর এ সমাগমে বাঙালি সংস্কৃতির পূর্ণ জাগরণ উজ্জীবিত হয়। অর্থাৎ জাতিসংঘের শহর নিউইয়র্কের ইস্ট রিভারে ভাসমান এই জাহাজটি পরিণত হয় একখণ্ড বাংলাদেশে। কেউ যদি শীর্ষে বাংলাদেশের একটি পতাকা উড়িয়ে দিতেন তাহলে ঝলসে উঠতো ‘সমৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে বিশ্ব মডেলে পরিণত হওয়া বাংলাদেশ’ নতুন এক অবয়বে। একদিকে চারপাশের মনোরম দৃশ্য অবলোকন, আরেকদিকে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ‘টেকসই উন্নয়নে ডিজিটাল বাংলাদেশের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনার। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার।
জাতিসংঘ অধিবেশনের সংবাদ সংগ্রহে আসা বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশন একাত্তর-এর বিশেষ প্রতিনিধি নাজনীন মুন্নীর সঞ্চালনায় সেমিনারের আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ পল্লীকর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)’র চেয়ারম্যান এবং প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, এসডিজি সম্পর্কিত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়কারী আবুল কালাম আজাদ, জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারমান নিজাম চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্রের রাটগার্স ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহমুদ হাসান এবং পিপল এন টেক-এর সিইও ইঞ্জিনিয়ার আবু হানিফ।
সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দফতরের ‘এটুআই’ প্রোগ্রামের পলিসি অ্যাডভাইজার আনির চৌধুরী। তিনি স্লাইড-শো’র মাধ্যমে সকলকে অবহিত করেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের অবলম্বনে পরিণত হয়েছে সারা দেশে স্থাপিত ডিজিটাল সেন্টারগুলো। বলার অপেক্ষা রাখে না, প্রশাসনিক স্বচ্ছ্বতা এবং জবাবদিহিতার পাশাপাশি মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও ডিজিটাল সেন্টারের প্রয়োজনীয়তা ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, এসডিজি সম্পর্কিত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়কারী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, ড. এ কে আব্দুল মোমেন, ড. শাহজাহান মাহমুদ, নিজাম চৌধুরী, রাটগার্স ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ড. মাহমুদ হাসান, ইঞ্জিনিয়ার আবু হানিফ। সেমিনারে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের চিফ হুইপ সেলিম উদ্দিন, একুশে পদকপ্রাপ্ত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী ডা. অরূপ রতন চৌধুরী, এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম এবং যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক আলহাজ আব্দুল কাদের মিয়া।
সমগ্র অনুষ্ঠানের সার্বিক পরিচালনায় সহায়তা করেন প্রেসক্লাবের নির্বাচন কমিশনার এবং যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি রাশেদ আহমেদ, সেমিনারের প্রধান সমন্বয়কারী মিজানুর রহমান, সমন্বয়কারী সাজ্জাদ হোসেন, ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ রিজু, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবুল কাশেম, নির্বাহী সদস্য নিহার সিদ্দিকী, কানু দত্ত এবং আজিমউদ্দিন অভি, সদস্য আমজাদ হোসেন, মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, জাহেদ শরীফ প্রমুখ।
এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক রেজাউল করিম রেজনুসহ এফবিসিসিআইয়ের কয়েকজন পদস্থ কর্মকর্তা ছাড়াও ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হারুন অর রশীদ, প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি নজরুল ইসলাম, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী, বাংলাদেশ ল’ সোসাইটির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোর্শেদা জামান, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আশরাফুজ্জামান, মনমাউথ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাথবর, পিপল এন টেকের প্রেসিডেন্ট ফারহানা হানিফ, বাংলাদেশি আমেরিকান ডেমোক্রেটিক লিগের প্রেসিডেন্ট খোরশেদ খন্দকার, রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী নুরুল আজিম, নির্মাণ ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বাবুল, মোবাশ্বির হোসেন, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের সেক্রেটারি জেনারেল মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী, কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, কমিউনিটি লিডার আব্দুল কাদির চৌধুরী শাহীন, মিনহাজ সাম্মু, যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুর রহমান, প্রেসক্লাকের নির্বাচন কমিশনার আকবর হায়দার কিরন, শিল্পকলা একাডেমির সভাপতি মনিকা রায়, কণ্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায় এবং শহীদ হাসান, চলচ্চিত্র পরিচালক আবুল বাশার চুন্নু, অ্যাপেক্স ক্লাব অব নিউইয়র্কের মোহাম্মদ সবুর হোসেন জাহাঙ্গীর, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক সাখাওয়াত বিশ্বাস, জামালপুর জেলা সমিতির সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব সালেহ শফিক, কক্সবাজার অ্যাসোসিয়েশনের বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ এবং সাবেক সভাপতি আল জুবায়ের মানিক প্রমুখ।ভ্রমণের আনন্দে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছিল প্রবাসের প্রিয়শিল্পী শাহ মাহবুব, প্রমি ও রায়ান তাজের জনপ্রিয় কিছু গান। সাংস্কৃতিক পর্ব পরিচালনা করেন প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শারমিন রেজা ইভা।