নিরাপত্তা পরিষদে রোহিঙ্গা শিশুদের নিয়ে আলোচনা
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ‘শিশু ও সশস্ত্র সংঘাত’ বিষয়ক এক উন্মুক্ত আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য পাবনা-৫ আসনের সাংসদ গোলাম ফারুক প্রিন্স। তিনি তার বক্তৃতায় মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সাম্প্রতিক সহিংসতায় নির্যাতিত স্বজনহারা শিশুদের বিভীষিকাময় কাহিনীর পুনরুল্লেখ করেন। বাবা-মা ও স্বজন হারা এসকল অসহায় শিশুদের পক্ষ নিয়ে তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে মিয়ানমার সঙ্কটের সমাধানে আরও সুদৃঢ় ও সাহসী পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দফতর সহিংসতার শিকার রোহিঙ্গা শিশুদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার যে বক্তব্য লিপিবদ্ধ করেছে, এমপি গোলাম ফারুক প্রিন্স তা উল্লেখ করেন। যারমধ্যে রয়েছে একজন শিশুর সামনে তার ৭ বছরের ছোট বোনকে গুলি করে হত্যা করার মত নির্মম কাহিনী। আর আরেকটি শিশু তার সামনে পলায়নে অক্ষম বৃদ্ধদের গুলি খেয়ে ছটফট করে মরতে দেখেছে। তারা দেখেছে তাদের মত অসংখ্য শিশুকে, যাদের প্রায় সকলেই পরিবারের কাউকে না কাউকে হারিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায়, শারীরিক ও মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত এসকল রোহিঙ্গা শিশুদের আশ্রয় দিয়ে মানবতার বার্তাকে সমুন্নত রেখেছেন মর্মে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এ সকল শিশুসহ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের সাময়িকভাবে আশ্রয় দিয়েছে মাত্র কিন্তু সবকিছুর ঊর্ধ্বে হলো এসব শিশুরা মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে মর্যাদার সাথে নিজ দেশে ফিরে যেতে চায়। জাতিসংঘ এবং এই নিরাপত্তা পরিষদই তাদের শেষ ভরসা। যতক্ষণ না পর্যন্ত প্রতিটি শিশু মর্যাদা ও পূর্ণ নিরাপত্তার সাথে নিজ ভূমি রাখাইন প্রদেশে ফিরে যেতে না পারবে ততক্ষণ পর্যন্ত নিরাপত্তা পরিষদকে মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে কাজ করে যেতে হবে। আসুন আমরা তাদের হতাশ না করি।’ তিনি চলমান মিয়ানমার সংকটে শিশুদেরকে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত উল্লেখ করে বলেন, ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে আসা ৬ লাখ ৭ হাজার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৬০ ভাগ শিশু। তীব্র অপুষ্টিতে ভোগা এ সকল শিশুদের পুষ্টি সরবরাহ, বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধের টিকা প্রদান, মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা সেবা ও শিক্ষা সহায়তা প্রদানসহ যে সকল জরুরি সেবা সরকার দিয়ে যাচ্ছে তার একটি পরিসংখ্যানও তিনি তুলে ধরেন।