বার্তা ডেক্সঃঃসুনামগঞ্জ পৌরসভায় নির্বাচন আসলেই গত প্রায় ৩০ বছর ধরে আলোচনায় আসে দেওয়ান (মরমি কবি হাছন রাজার পরিবার) এবং বখত পরিবার। শহরবাসী বলে থাকেন এই পৌরসভায় দলের চেয়ে পারিবারিক ইমেজ ভোটে কাজে আসে বেশি। বখত ও দেওয়ান এই দুই পরিবারের নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়ে আসছে বিগত ছয় পৌর নির্বাচনেই। এবার সেটি নেই। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন মরহুম হোসেন বখত’এর ছেলে বর্তমান পৌরসভার মেয়র নাদের বখত। তাঁর সঙ্গে বিগত পৌর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী হাছন রাজার প্রপৌত্র দেওয়ান গণিউল সালাদীন এবার ভোটে না লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নির্বাচনে বিএনপি’র প্রার্থীও অপেক্ষাকৃত দুর্বল হওয়ায় নাদের বখত অনেকটা চাপমুক্ত। মেয়র পদে ভোটের প্রতিদ্বন্দ্বিতাও খুব একটা জমবে না বলেই মনে করছেন পৌরবাসী। দেওয়ান পরিবারের মধ্যে দেওয়ান ওবায়দুর রাজা ৩ বার, দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন ১ বার ও দেওয়ান মমিনুল মউজদীন ৩ বার সুনামগঞ্জ পৌরসভায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। অপরদিকে বখত পরিবারের মধ্যে মনোয়ার বখত নেক ২ বার, আয়ূব বখত জগলুল ২ বার এবং নাদের বখত বর্তমান পৌর মেয়র। তিনি শুক্রবার রাতে দ্বিতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়েছেন। এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন প্রয়াত দেওয়ান ওবায়দুর রাজা’র ছেলে দেওয়ান ইমদাদ রেজা চৌধুরীও। গেল দুটি পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন দেওয়ান গণিউল সালাদীন। প্রথমবার তিনি প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আয়ূব বখত জগলুলের কাছে পরাজিত হন। আয়ুব বখত জললুল মৃত্যুবরণ করায় ২০১৮ সালের ২৯ মার্চ পৌরসভার উপ-নির্বাচনে প্রয়াতের ছোট ভাই নাদের বখত’এঁর কাছে পরাজিত হন গণিউল সালাদীন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাদের বখত পেয়েছিলেন ১৬ হাজার ৩৫২ ভোট। তাঁর নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান গণিউল সালাদীন পেয়েছিলেন ৯ হাজার ৪৮৫ ভোট। এবার ভোটে লড়বেন না সালাদীন কিংবা দেওয়ান পরিবারের কেউ। দেওয়ান গণিউল সালাদীনের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় এ ব্যাপারে কথা বলা যায় নি তাঁর সঙ্গে। গণিউল সালাদীনের বড় ভাই সাবেক পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন বললেন, ‘‘সালাদীন ‘তামাসার’ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না নেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গেল দুটি পৌর নির্বাচনে আমি মনে করি সালাদীন জয়ী হয়েছিলেন, তাঁকে জোরকরে জাল ভোট দিয়ে হারানো হয়েছে। জনগণ ভোট দিলেও যেখানে ফলাফল ছিনতাই হয়, এমন নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সালাদীন। আজ মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিনে সালাদীন কেন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না, সেটি সংবাদ সম্মেলন করে তুলে ধরবেন।’
নাদের বখত বললেন, দলীয় সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে কৃতজ্ঞ আমি। আমাকে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো দলীয় প্রতীক নৌকা তুলে দিয়েছেন। তাঁর বিশ্বাস ও আস্থার মর্যাদা দিতে আমি ও আমার পরিবার প্রাণপণ চেষ্টা করবে। সুনামগঞ্জ পৌরসভায় অতীতে ভোট উৎসব হয়েছে শান্তিপূর্ণভাবে। বিগত নির্বাচনে দেওয়ান গণিউল সালাদীন আমার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ছিলেন। আমি শুনেছি তিনি এবার প্রার্থী হচ্ছেন না। পৌরসভার সম্মানীত ভোটারগণই সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরা কাকে ভোট দেবেন। আগামী ১৬ জানুয়ারি সুনামগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন। মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন আজ রোববার। ২২ ডিসেম্বর যাচাই এবং প্রত্যাহার ২৯ ডিসেম্বর।-সৌজন্যে সুনামগঞ্জ খবর