বিধবা পরিচয়ে ফেসবুকে পরকীয়া, অতঃপর…
তাহমিনা আকতার। বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার সামদার পাড়ায়। বিবাহিত ও দুই সন্তানের জননী। স্বামী প্রবাসী। তাহমিনা সন্তান নিয়ে থাকেন চট্টগ্রামের চকবাজার এলাকায়। নিজের সাংসারিক পরিচয় গোপন করে ফেসবুকের মাধ্যমে ফ্রান্স প্রবাসী ফরিদপুরের স্বপন কুমার দাশের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন তাহমিনা। বিয়ের কথা বলে জমি কেনাসহ নানান বাহানায় স্বপনের কাছ থেকে টাকা নিতে থাকেন তিনি। এদিকে স্বপনও প্রস্তুতি নিতে থাকেন বিয়ের। তাহমিনাকে বিয়ের জন্য ধর্মান্তরিতও হন। কিন্তু বিধিবাম। তাহমিনার কাছ থেকে প্রতারণার শিকার হন স্বপন। বিয়ের প্রলোভনে স্বপনের কাছ থেকে ৪,৫৬০ ইউরো (বাংলাদেশি টাকায় তিন লাখ ৯৫ হাজার টাকা) হাতিয়ে নেন তাহমিনা। আর এমন অভিযোগে মামলা হয়েছে আদালতে। স্বপন দাশের পক্ষে মুখ্য মহানগর হাকিম আবু ছালেম মোহাম্মদ নোমানের আদালতে প্রতারণার এই মামলা করেন মুহাম্মদ মহসিন নামে একজন। মামলায় আসামি করা হয়েছে সাতকানিয়ার সামদার পাড়ার তাহমিনা আক্তার, ভাই নবাব মিয়া ও সেলিম মিয়া এবং স্বামী আবদুর রহিমকে। পরে আদালত মামলার তদন্তভার দেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)। পিবিআই কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম তদন্তে প্রতারণার সত্যতা পান। তবে প্রতারণার সঙ্গে জড়িত শুধু তাহমিনা। বাকিদের অব্যহতি দেয়া হয়। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ওয়ারেন্ট জারি করা হয় তাহমিনার বিরুদ্ধে।
সর্বশেষ ২০ জানুয়ারি রাত দেড়টার দিকে চকবাজারের বাসা থেকে তাহমিনাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিনই আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান। স্বপন দাশের আইনজীবী তফাজ্জল ও মামলার আরজি সূত্রে জানা গেছে, জীবিকার সন্ধানে স্বপন কুমার দাশ প্যারিসে যান। ২০০২ সালে লাভ করেন ফ্রান্সের নাগরিকত্ব। এরপর বিয়ে করে সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন স্বপন। গত ২০১০ সালে মারা যায় তার স্ত্রী মিসিল। এর পর শারীরিক অসুস্থতার কারণে পঙ্গুত্ব বরণ করেন স্বপন। এর মধ্যেই ফেসবুকের মাধ্যমে তাহমিনার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। তাহমিনা নিজেকে সন্তানহীন বিধবা বলে পরিচয় দেন। সম্পর্ক গড়ায় বিয়ের আশ্বাস পর্যন্ত। এরপর জমি কেনার কথা বলে নয় দফায় রিয়া মানি ট্রান্সফারের মাধ্যমে ৪,৫৬০ ইউরো হাতিয়ে নেন স্বপনের কাছ থেকে। ২০১৭ সালের মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে এসব টাকার লেনদেন হয়। এঘটনায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৬/৪১৭/৪২৩/৪২২/৫০৯(২) ধারায় ১৪/১১ /১৭ তারিখে আদালতে মামলা করা হয়। অ্যাডভোকেট তফাজ্জল আরও বলেন, স্বপন দাশ মামলার আগে ফ্রান্স দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি আনিসা আর আমিন কর্তৃক বিশেষ মতামতপত্রও নিয়েছেন।-পরিবর্তন