বিরোধীদের ইফতার: সবার চোখ বিলাওয়াল, মরিয়মের দিকে
আজকের এই ইফতার ও ডিনার পার্টির আয়োজন করেছেন বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। কিন্তু বিশ্লেষকরা ও মিডিয়া সংশ্লিষ্টরা একে শুধু একটি ইফতার পার্টি হিসেবে দেখছেন না। তারা এটাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছেন। মনে করা হচ্ছে, ইফতার উপলক্ষে এ পার্টির আয়োজন করা হলেও বিরোধীরা এখান থেকে আবার সম্মিলিতভাবে একটি জোট গঠনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
পিপিপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাতুল্লাহ বাবর বলেছেন, কোনো আনুষ্ঠানিক এজেন্ডা নেই। এটা কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠকও নয়। এটা হলো বিরোধী দলীয় নেতাদের শুধুই একটি গেট-টুগেদার। দলীয় চেয়ারম্যান বিলাওল ভুট্টো জারদারি এসব নেতার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে চান। তবে রাজনীতিকরা যখন একসঙ্গে বসেন তখন সেখানে আলোচনায় উঠে আসে রাজনীতি। তিনি বলেন, আপনি এটাকে বিরোধী দলগুলোর একটি বড় বৈঠক হিসেবে দেখতে পারেন। এ ছাড়া আপনি অদূর ভবিষ্যতে এটাকে একটি আনুষ্ঠানিক গেট টুগেদারের পথে একধাপ এগিয়ে যাওয়া হিসেবেও দেখতে পারেন।
ডন লিখেছে, ফরহাতুল্লাহ বাবর বলেছেন, বিরোধী সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন পিপিপি চেয়ারমান। আশা করা হচ্ছে, এতে যোগ দেবেন জমিয়ত উলেমায়ে ইসলাম (জেইউআই-এফ), আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি, ন্যাশনাল পার্টি ও ছোট ছোট কিছু দল। এ জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর প্রধান সিরাজুল হককে। কিন্তু জবাবে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, রোববার করাচিতে তার পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকবেন। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বেলুচিস্তান ন্যাশনাল পার্টি-মেঙ্গালের (বিএনপি-এম) নেতাদের। তারা ক্ষমতাসীন জোটের শরীক। তবে আজকের এই ইফতারে সবচেয়ে বেশি চোখ থাকবে একজন নেত্রীর ওপর। তিনি পিএমএলএনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে সদ্য নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি পিএমএলএনের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ। আজকের বৈঠকে যোগ দিতে পারেন তিনিও। যদি তিনি যোগ দেন তাহলে সাবেক দু’জন প্রধানমন্ত্রী ও ঘোর প্রতিপক্ষ নওয়াজ শরীফ ও বেনজির ভুট্টোর উত্তরসূরিদের মধ্যে প্রথম আনুষ্ঠানিক কথোপকথন।
এই ইফতার বা বৈঠক এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন পিএমএলএন প্রধান নওয়াজ শরীফ জেলে। তার ছোটভাই ও দলের প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরীফ অবস্থান করছেন লন্ডনে। পাকিস্তানে বর্তমানে অর্থনীতির অবস্থা খুবই শোচনীয়। তেলের দাম বেড়ে গেছে। ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানি রুপির অবমূল্যায়ন বা দাম পড়ে গেছে অপ্রত্যাশিতভাবে। এমন এক প্রেক্ষাপটে বিরোধী দলের নেতারা ঈদের পরে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছেন। এই বৈঠক থেকে সেই আন্দোলন ঐক্যবদ্ধভাবে করার সিদ্ধান্ত আসতে পারে। দলীয় বিভিন্ন সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছে এ বিষয়ে এরই মধ্যে দলগুলোর ভিতরে ভিতরে আলোচনা চলছে। ধর্মীয় দলগুলো ঘোষণা দিয়েছে, তারা ঈদের পর পরই সরকার বিরোধী আন্দোলন শুরু করবে। তবে প্রধান দুই বিরোধী দল পিপিপি এবং পিএমএলএন এখনও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় নি। পিপিপির কিছু সূত্র ডন’কে বলেছেন, সরকার বিরোধী আন্দোলন শুরুর বিষয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। শুক্রবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়েছে রাজধানী ইসলামাবাদে। সেখানে এ বিষয়ে কথাবার্তা হয়েছে।