ভোটাধিকার পাচ্ছে ‘হিজড়া’
ভোটার তালিকায় হিজড়াদের ‘লিঙ্গ পরিচয়ে’ অন্তর্ভুক্ত করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির চার বছর পর এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ জন্য ভোটার তালিকা আইন – ২০০৯ ও ভোটার তালিকা বিধিমালা-২০১২ এ সংশোধনী আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ‘হিজড়াদের’ ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে সম্প্রতি কমিশনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে আগামী হালনাগাদেই ‘নারী’ ও ‘পুরুষের’ বাইরে ‘হিজড়া’ পরিচয়ে ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন তারা। ভোটারদের তথ্য সংগ্রহে নিবন্ধন ফরমের ১৭ নম্বর ক্রমিকে ‘লিঙ্গ পরিচয়’ ছকে এ ‘হিজড়া’ যোগ করা হবে। বর্তমানে ১০ কোটিরও বেশি ভোটার রয়েছে। ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ণের শুরু থেকে যোগ্যদের জাতীয় পরিচয়পত্রও দেওয়া হয়। এসময় হিজড়ারা ভোটার হয়ে এলেও তারা নারী বা পুরুষ ঐচ্ছিক পরিচয়ে ভোটার হতেন। ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে হিজড়াদের ‘লিঙ্গ পরিচয়কে’ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে এ সংক্রান্ত ‘নীতিমালা অনুমোদন করা হয়। এ ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের ভোটার নিবন্ধন বিধিমালা প্রণয়নের সময়ই নির্বাচন কমিশন ‘হিজড়া’র অপশন প্রস্তাবিত নিবন্ধন ফরমে যুক্ত করে। কিন্তু ভোটার তালিকা আইন ও ভোটার তালিকা বিধিমালা সংশোধন না হওয়ায় তা কার্যকর হচ্ছিল না। নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব ও পরিচালক (জনসংযোগ) এসএম আসাদুজ্জামান জানান, ‘হিজড়ারা’ তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে ভোটার হতে পারবেন। ভোটার তালিকা নিবন্ধন ফরমে তৃতীয় লিঙ্গদের জন্য আলাদা অপশন রাখা হচ্ছে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, ইসির ভোটার তালিকায় যেসব হিজড়া অন্তর্ভুক্ত হবেন, তাদের স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেবে ইসি। সাধারণ ভোটররা পরিচয়পত্রে যে সুযোগ-সুবিধা পাবেন, একই সুবিধা পাবেন ‘হিজড়ারা’। ইসি সচিবালয় গত ২৭ ডিসেম্বর আইন -বিধি সংশোধনের বিষয়ে কমিশন সভায় উপস্থাপন করে। এতে বলা হয়, ২১ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৭ নম্বর সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে একজন হিজড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছেন। ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি হিজড়া জনগোষ্ঠীকে লিঙ্গ পরিচয় স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। হিজড়ারা ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। সমাজসেবা অধিদপ্তরের জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রায় ১০ হাজার হিজড়া রয়েছেন।