মার্কিন কংগ্রেসে লড়ছেন বাঙালী নীনা আহমেদ
এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে : ড. নীনা আহমেদ ফিলাডেলফিয়া সিটির ডেপুটি মেয়র পদ ছেড়ে মার্কিন কংগ্রেসে লড়ছেন। পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যের ফিলাডেলফিয়া সিটি (দক্ষিণ এবং কেন্দ্রীয়), সিটি অব চেষ্টার, ফিলাডেলফিয়া আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টসহ দেলওয়ারে কাউন্টির কয়েকটি এলাকা নিয়ে গঠিত ‘পেনসিলভেনিয়া কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট-১’ থেকে ডেমক্র্যাটিক পার্টির মনোনয়নের লড়াইয়ে (প্রাইমারি নির্বাচন) নেমেছেন। ৬ ডিসেম্বর বুধবার রাতে বাংলাদেশী-আমেরিকান নীনা আহমেদ নিজেই এ সংবাদদাতাকে এ তথ্য অবহিত করেন। গত দু’বছর যাবত ডেপুটি মেয়রের দায়িত্ব পালনের পর গত সপ্তাহে পদত্যাগ পত্র সাবমিট করেছেন। এর আগে তিনি প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ‘এশিয়ান-আমেরিকান এ্যান্ড প্যাসিফিক আইল্যান্ডার্স’ বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। সে মেয়াদ শেষ হবার কথা জুলাই মাসে। কিন্তু জানুয়ারির ২০ তারিখে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের সময়েই পদত্যাগ করেছেন নীতিগত কারণে।
এই আসনের বর্তমান কংগ্রেসম্যান (ডেমক্র্যাট) রোবার্ট ব্র্যাডির বিরুদ্ধে নির্বাচনী তহবিল তসরুপের গুরুতর অভিযোগের তদন্ত চালাচ্ছে এফবিআই। ইতিমধেই ঐ অপকর্মে জড়িত দু’ব্যক্তির বিরুদ্ধে চার্জ গঠিত হয়েছে। এ অবস্থায় সামনের বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে বব ব্য্রাডির প্রার্থীতা নিয়ে সন্দেহ-সংশয় সৃষ্টি হওয়ায় ডেমক্র্যাটিক পার্টির বলিষ্ঠ সংগঠক ড. নীনা মাঠে নামলেন। সেনসাস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, এই নির্বাচনী এলাকার মোট ভোটারের ৩৭% শ্বেতাঙ্গ। অপরদিকে কৃষ্ণাঙ্গ-৪৫.৯%, এশিয়ান-৪.৯%, হিসপ্যানিক-১৫%, আদি আমেরিকান-০.৩%। দুই দশকেরও অধিক সময় যাবত ইমিগ্র্যান্টদের অধিকার ও মর্যাদা দিয়ে তৃণমূলে ব্যাপক জনপ্রিয় ড. নীনা কৃষ্ণাঙ্গ, এশিয়ান এবং হিসপ্যানিকদের একচেটিয়া ভোট পাবেন বলে নির্বাচনী বিশ্লেষকরা ইতিমধ্যেই বলাবলি করছেন। স্থানীয় মিডিয়াসমূহেও এ নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, ফিলাডেলফিয়াসহ আশপাশে ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্তদের ৭৮% এরও বেশী হচ্ছেন ডেমক্র্যাট। অর্থাৎ দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের নির্বাচনে (প্রাইমারি) জয়ী হলেই মূল নির্বাচনে জয়ী হবার সামিল।
ডেপুটি মেয়র হিসেবে নভেম্বরের শেষার্ধে এ সংবাদদাতার সাথে বিভিন্ন ইস্যুতে মতবিনিময়কালে ড. নীনার জাতীয় রাজনীতিতে অবতীর্ণ হওয়ার আগ্রহ প্রকাশিত হয়। বারাক ওবামার উপদেষ্টা হবার আগে ড. নীনা ফিলাডেলফিয়া সিটি মেয়রের ইমিগ্রেশন বিষয়ক কমিশনার ছিলেন বেশ কয়েক বছর। আর এভাবেই তৃণমূলের সাথে তার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়েছে। ড. নীনা বলেন, ‘বর্তমান কংগ্রেসম্যানের সাথে (যদি এফবিআইয়ের তদন্তে তিনি অভিযুক্ত না হন) জয়ী হতে হলে ভোটের রাজনীতির হিসাব অনুযায়ী বিপুল অর্থ লাগবে। বিধি অনুযায়ী নির্বাচনী তহবিল গঠনের উদ্দেশ্যে শীঘ্রই একটি সমাবেশ করবো। সে সময় বাংলাদেশী-আমেরিকানদেরও সহায়তা লাগবে। তারাই হবেন আমার মূল ভিত্তি।’ মার্কিন কংগ্রেসে প্রথম বাংলাদেশী বংশোদ্ভ’ত কংগ্রেসম্যান হয়েছিলেন হাসিম ক্লার্ক ( ২০১১-২০১৩)। কিন্তু তিনি দু’বছরের এক মেয়াদের বেশী সে আসন (মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ১৩তম কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিস্ট) ধরে রাখতে সক্ষম হননি। এরপর আরো কয়েকজন লড়েছেন বিভিন্ন আসন থেকে। এখন পর্যন্ত কেউই জয়ী হতে পারেননি।